বিষয়বস্তুতে চলুন

সীমিত ভোটদান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্যালট বাক্সে ভোট প্রদানের পর ব্যাটল রাখছে

সীমিত ভোটদান (যা আংশিক ব্লক ভোটদান নামেও পরিচিত) হল একটি ভোটদান ব্যবস্থা যেখানে ভোটারদের ভোটের সংখ্যা প্রাপ্য পদের চেয়ে কম থাকে। যেসব প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পান তাঁদেরকেই পদ প্রদান করা হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে, যদি একজন ভোটার কেবলমাত্র একজন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন অথচ দুটি বা তার অধিক পদ উপলব্ধ থাকে, তাহলে এই পদ্ধতিকে একক অ-হস্তান্তরযোগ্য ভোট বা কখনও কঠোরভাবে সীমিত ভোট বলা হয়।[]

সীমিত ভোটদানের উদাহরণ

[সম্পাদনা]

ভোটারভিল শহরটি একটি নির্বাচনী জেলা নিয়ে গঠিত। এটি আইনসভার জন্য তিনজন প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। প্রতিটি ভোটারের কেবল দুটি ভোট থাকে। নির্বাচনের সময় ব্যালট পেপারটি নিম্নরূপভাবে প্রদর্শিত হয়:

ব্রায়ান ব্লু নীল দল X
বেরিল ব্লু নীল দল X
বরিস ব্লু নীল দল
ররি রেড লাল দল
র‍্যাচেল রেড লাল দল

এই ক্ষেত্রে ভোটার ব্রায়ান এবং বেরিল ব্লুকে ভোট দিয়েছেন। যদিও এখানে তিনটি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে, তবুও তিনি তৃতীয় ভোট দিতে পারবেন না। প্রতিটি ভোট একটি করে গণ্য হয় এবং প্রাপ্ত প্রার্থীর মোট ভোটসংখ্যায় যোগ হয়।

অনুশীলন এবং সমস্যা

[সম্পাদনা]

সীমিত ভোট প্রদান পদ্ধতি প্রায়ই সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সক্ষম হয় – যা ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট বা ব্লক ভোটিং পদ্ধতির ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায় না।

উদাহরণস্বরূপ, ভোটারভিলে ৫৪% ভোটার নীল দলকেকে এবং ৪৬% ভোটার লাল দলকে সমর্থন করে। শহরজুড়ে সমর্থন যদি সমভাবে বিতরণ থাকে, তবে ব্লক ভোটিং ও ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট পদ্ধতিতে নীল দল তিনটি আসনই জিতে নেবে এবং লাল দল কোনো প্রতিনিধিত্বই পাবে না।

সীমিত ভোট পদ্ধতিতে সাধারণত লাল দল একটি আসন জিতে নিতে পারত।

ধরা যাক, শহরের ২০,০০০ ভোটার প্রত্যেকে দুটি করে ভোট দিয়েছেন এবং মোট ভোটের ৫৪ শতাংশ নীল দল ও ৪৬ শতাংশ লাল দল পেয়েছে, তাহলে ফলাফল হতে পারে নিম্নরূপ:

ব্রায়ান ব্লু ৯,৮০০ ভোট নির্বাচিত
বেরিল ব্লু ৯,৬০০ ভোট নির্বাচিত
বরিস ব্লু ২,২০০ ভোট
ররি রেড ৯,২০০ ভোট নির্বাচিত
র‍্যাচেল রেড ৯,২০০ ভোট

ফলে দুটি দলই প্রতিনিধিত্ব লাভ করে।

তবে সীমিত ভোট পদ্ধতিতে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব (অন্তত একটি আসন) পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, কারণ প্রার্থীর সংখ্যা এবং দলীয় প্রার্থীদের প্রতি ভোটদানের পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে বিভাজিত ভোট কার্যকর নাও হতে পারে।

যখন প্রতিটি ভোটারের দুটি করে ভোট থাকে এবং মাত্র দুটি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেয়, তখন তিনটি আসনের মধ্যে একটি আসনে সংখ্যালঘু দলের জয় নিশ্চিত করতে হলে মোট ভোটারের কমপক্ষে দুই-পঞ্চমাংশের সমর্থন প্রয়োজন। উপরের উদাহরণে লাল দলের পক্ষে একটু বেশি সংখ্যক ভোটার অর্থাৎ দুই-পঞ্চমাংশের কিছু বেশি ভোটারের সমর্থন ছিল।

যেসব ক্ষেত্রে দুটির বেশি দল নির্বাচনে অংশ নেয় এবং ভোটাররা দলীয়ভাবে তাদের দুটি ভোট প্রদান করে, সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের আসন নিশ্চিত করতে হলে তার অবশ্যই মোট বৈধ ভোটের ৪০ শতাংশ, অথবা বৃহত্তম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সম্মিলিত বৈধ ভোটের ৪০ শতাংশ পেতে হবে। এই শর্ত পূরণ হলে দলটি তাদের উভয় প্রার্থীকেই জয়ী করতে পারে। তবে, যদি ভোটাররা দলীয়ভাবে ভোট না দেয় বা উভয় ভোট না দেয়, তাহলে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল কেবল তখনই একটি আসন পেতে পারে, যদি তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী বৃহত্তম দলের সবচেয়ে কম জনপ্রিয় প্রার্থীর চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হন।[]

যদি সবচেয়ে বড় দলটি সব আসন দখলের আশায় তিনজন প্রার্থী দাঁড় করায়, তবে তারা ভোট বিভাজনের শিকার হতে পারে এবং মাত্র একটি আসন পেতে পারে। (এমনও হতে পারে যে উভয় দলই তিনজন করে প্রার্থী দেয় এবং উভয়ই ভোট বিভাজনের মুখে পড়ে—তখন ফলাফল নানা উপায়ে অনুমান করা যেতে পারে।)

যদি বৃহত্তম দল তিনজন প্রার্থী দেয় এবং ছোট দল দুইজন প্রার্থী দেয়, তবে বৃহত্তম দলের পক্ষে তিনটি আসনই জেতা সম্ভব হতে পারে।

তবে এমনটাও হতে পারে যে তুলনামূলকভাবে কম জনপ্রিয় দলের পক্ষে অন্য দলের চেয়ে বেশি আসন জেতা সম্ভব। নীল দল যদিও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল, তবুও যদি তারা সবকটি আসন জেতার চেষ্টা করে এবং সীমা অতিক্রম করে ফেলে, তবে উপলব্ধ আসনগুলির মধ্যে কেবল একটি জিততে পারে।

যেহেতু নীল দলের প্রায় ৬০% ভোট রয়েছে, তারা তিনটি আসনেই জয়লাভের চেষ্টা করতে পারে। এটি করার জন্য তাদের তিনজন প্রার্থী দাঁড় করতে হবে। লাল দল তাদের আপেক্ষিক দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন, সম্ভবত কেবল দুইজন প্রার্থী বেছে নেবে এবং এইভাবে তাদের ভোট বিভাজন হবে না। (প্রতি ভোটারের দুটি ভোট থাকায়, শুধুমাত্র একজন প্রার্থীকে প্রার্থী করার কোনও কারণ নেই।)

ধরা যাক, শহরের ২০,০০০ ভোটারের প্রতি ভোটার দুটি ভোট প্রদান করেছেন, তাহলে ফলাফল নিম্নরূপ হতে পারে:

ব্রায়ান ব্লু ৮,৬০০ ভোট নির্বাচিত
বেরিল ব্লু ৮,০০০ ভোট
বরিস ব্লু ৫,০০০ ভোট
ররি রেড ৯,২০০ ভোট নির্বাচিত
র‍্যাচেল রেড ৯,২০০ ভোট নির্বাচিত

তিনজন প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নীল তাদের ভোট বিভাজন করে এবং হেরে যায়, যদিও শহরে তাদের স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার সমর্থন ছিল।

প্রদত্ত উদাহরণ থেকে দেখা যায় যে, সীমিত ভোটদান পদ্ধতি সবসময় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে না।

এই পদ্ধতিতে ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব ব্যর্থ হওয়ার আরেকটি উপায় হলো—যদি বৃহত্তম দলটি খুব সুসংগঠিত হয় এবং তাদের সমর্থকদের ভোট সর্বোচ্চ সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে বণ্টনের ব্যবস্থা করতে পারে, অথচ অন্যান্য দল ততটা সংগঠিত না হয়।

স্পেনে, যেখানে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত বেশিরভাগ নির্বাচনে সীমিত ভোটদান পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো এবং যা আজও সিনেট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, সেখানে এই পদ্ধতিকে ইর আল কোপো নামে পরিচিত ছিল (স্প্যানিশ ক্রিয়াপদ copar থেকে, যার অর্থ ‘সম্পূর্ণ দখল করা’)। ১৯৭৭ ও ১৯৭৯ সালের স্পেনের সাধারণ নির্বাচনে ইউনিয়ন অফ দ্য ডেমোক্রেটিক সেন্টার দলটি গ্রান ক্যানারিয়া নির্বাচনী এলাকায় তিনটির মধ্যে সব আসনই জিতে নেয়।

পরবর্তী উদাহরণে দেখা যায়, একটি দল প্রথমে একটি নির্বাচনী এলাকার সব আসনে এককভাবে জয়লাভ করে এবং পরে ভোটকে এমনভাবে পরিচালিত করে যে ধারাবাহিকভাবে আবারও সব আসন দখল করতে সক্ষম হয়। ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম শহরের তিনজন সংসদ সদস্য নির্বাচনের সময় ভোটাররা এক বা দুটি ভোট প্রদান করেছিল। সেখানে উদারপন্থী দলের প্রার্থীরা তিনটি আসনই দখল করে, ফলে রক্ষণশীলরা কোনো প্রতিনিধিত্ব পায়নি। উদারপন্থীদের ভোট তিনজন প্রার্থীর মধ্যে বিভক্ত হওয়া সত্ত্বেও এটি ঘটে। সুতরাং সীমিত ভোটদান পদ্ধতি মিশ্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়। রক্ষণশীল দলের সমর্থক সংখ্যা হয়তো প্রায় ১৫,০০০ জন ছিল, আর উদারপন্থী প্রার্থীরা সম্ভবত প্রায় ৩১,০০০ জনের সমর্থন পেয়েছিলেন। তাই ২৯,০০০ রক্ষণশীলদের ভোট উপেক্ষিত হওয়ার বিষয়টি যতটা অযৌক্তিক বলে মনে হয়, বাস্তবে ফলাফলটি ততটা অসম নাও হতে পারে। (বার্মিংহামে রক্ষণশীলদের জনসমর্থন ৪০ শতাংশের সেই নির্ধারিত সীমার নিচে ছিল, যা আগেই ন্যায্য প্রতিনিধিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।)

কিন্তু সীমিত ভোটদানের কারণে, এমনটা হতে পারত যে রক্ষণশীল প্রার্থীরা ২৯,০০০ ভোটারের কাছ থেকে একটি ভোট পেয়েছেন এবং লিবারেল প্রার্থীরা ৪৭,০০০ ভোটারের কাছ থেকে কমপক্ষে একটি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনের ফলাফলের ন্যায্যতা বিচার করা (এবং কতজন ভোটার তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে দেখেছেন তা বোঝা অনেক সহজ হয়) অনেক সহজ যখন প্রতিটি ভোটারের মাত্র একটি ভোট থাকে।

সাধারণ নির্বাচন ১৮৮০: বার্মিংহাম (৩টি আসন); প্রতিটি ভোটার একটি অথবা দুটি ভোট প্রদান করেছেন
দল প্রার্থী ভোট % ±%
উদারপন্থী ফিলিপ হেনরি মন্টজ ২২,৯৬৯ ২৪.২৭ প্রযোজ্য নয়
উদারপন্থী জন ব্রাইট ২২,০৭৯ ২৩.৩৩ প্রযোজ্য নয়
উদারপন্থী জোসেফ চেম্বারলিন ১৯,৫৪৪ ২০.৬৫ প্রযোজ্য নয়
রক্ষণশীল এফ.জি. ১৫,৭৩৫ ১৬.৬৩ প্রযোজ্য নয়
রক্ষণশীল মাননীয় এ.সি.জি. ক্যালথর্প ১৪,৩০৮ ১৫.১২ প্রযোজ্য নয়

মোট ভোট পড়েছে = ৯৪,৬৩৫।

ভোটদানকারী আনুমানিক ভোটারের সংখ্যা = ৪৭,৩১৮ (অথবা তার বেশি)

যোগ্য ভোটার = ৬৩,৩৯৮ জন

ভোটার উপস্থিতির হার = ৭৪.৬ শতাংশ []

  • দ্রষ্টব্য: ভোটার উপস্থিতি ভোটারদের আনুমানিক সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়, যা ভোটের মোট সংখ্যা দুই দিয়ে ভাগ করে গণনা করা হয়েছে। যেহেতু প্রত্যেক ভোটার দুটি ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে যদি কেউ উভয় ভোট প্রদান না করে থাকেন (অর্থাৎ, প্রকৃত ভোটদাতার সংখ্যা দুই দিয়ে ভাগ করা মোট ভোটের সংখ্যার চেয়ে বেশি হয়ে থাকে), সেক্ষেত্রে ভোটার উপস্থিতির হার স্বল্পভাবে নিরূপিত হবে।[]

চার্লস সিয়েমুর তাঁর ইলেক্টোরাল রিফর্ম ইন ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস গ্রন্থে বার্মিংহামের উদারপন্থীদের প্রতিক্রিয়া বর্ণনা করেছেন, যাঁরা সীমিত ভোটাধিকার প্রবর্তিত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন।

বার্মিংহামের উদারপন্থীরা বুঝতে পেরেছিল যে যদি তারা তৃতীয় আসনটি ধরে রাখতে চায়, তাহলে তাদের ভোট তিন প্রার্থীর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে ভাগ করে দিতে হবে। ভোটের অপচয় রোধ করার জন্য, এমন একটি সংগঠন গড়ে তুলতে হবে যা নির্বাচকের পছন্দকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে; এবং প্রতিটি নির্বাচককে অবশ্যই নির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী ভোট দিতে হবে। বার্মিংহাম সংগঠনের সাফল্য, যা শীঘ্রই ককাস নামে পরিচিত হয়ে ওঠে, অটুট ছিল এবং কোনও রক্ষণশীল প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেনি। এটি অন্যান্য অনেক নির্বাচনী এলাকায় অনুসরণ করা হয়েছিল এবং দলীয় নির্বাচনী যন্ত্রের বিকাশে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল, যার প্রভাব প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থার উপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে।

তিন আসনের একটি নির্বাচনী এলাকায় (যেমন একক অ-স্থানান্তরযোগ্য ভোটদান) একই (সম্ভাব্য) ভোটদানের আচরণের ভিত্তিতে -- ৩১,০০০ উদারপন্থী ভোটার এবং ১৫,০০০ রক্ষণশীল ভোটার -- এটি সম্ভবত মনে হয় যে রক্ষণশীল দল যদি একজনমাত্র প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন করত, তবে তারা একটি আসন লাভ করত। তবে, যদি রক্ষণশীল দল দুই প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন করত, তাহলে সম্ভবত উদারপন্থীরা তিনটি আসনই জয় করত, যেমনটি সীমিত ভোটিং পদ্ধতিতে ঘটে।

সীমিত ভোটদানের প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]

একজন জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ দুই ধরণের সীমিত ভোটদানের বর্ণনা দিয়েছেন:

- সীমিত ভোট (সাধারণ রূপ) যেখানে প্রতিটি ভোটারের ভোটের সংখ্যা পূরণযোগ্য আসনের অর্ধেকের চেয়েও বেশি। এর একটি উদাহরণ হলো উপরে বর্ণিত ১৮৮০ সালের বার্মিংহামের নির্বাচন। সর্বাধিক দুটি দল প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে এবং আসনের সংখ্যার চেয়ে বেশি কখনওই নয়।

- সীমিত ভোট (বিশেষ রূপ) যেখানে প্রতিটি ভোটারের ভোটের সংখ্যা পূরণযোগ্য আসনের অর্ধেকের চেয়েও কম। এর একটি উদাহরণ দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন মিত্র বাহিনীর জাপান অধিকারের সময়। ১৯৪৬ সালের যুদ্ধ-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনে: যেসব নির্বাচনী এলাকায় দশ বা তার কম সংখ্যক প্রতিনিধি ছিল, সেসব স্থানে প্রতিটি ভোটার দুইটি করে ভোট দিতে পারতেন; আর যেসব এলাকায় দশের বেশি প্রতিনিধি ছিল, সেখানে প্রতিটি ভোটার তিনটি করে ভোট দিতে পারতেন।[] সেই নির্বাচনে, যেখানে অধিকাংশ নির্বাচনী এলাকার আসনসংখ্যা ছিল ৬ থেকে ২৩-এর মধ্যে, প্রায় প্রতিটি এলাকায় বহু দল (সাধারণত ৪ থেকে ৭ বা তার বেশি) প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল।

ইতিহাস এবং বর্তমান ব্যবহার

[সম্পাদনা]
ঐতিহাসিক
  • আর্জেন্টিনায় চেম্বার অব ডেপুটিজ-এর নির্বাচনের ক্ষেত্রে, ১৯১২ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৫৮ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।
  • স্পেনে সাধারণ, প্রাদেশিক ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল।
  • পর্তুগালে আইনসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১৮৮৪ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত এবং ১৯০১ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। [][]
  • যুক্তরাজ্যে ১৮৬৭ থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে কিছু হাউস অব কমন্স নির্বাচনী এলাকার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।
  • উনিশ শতকের শেষ দিকে ইতালিতে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল।
  • জাপানে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন মিত্র বাহিনীর দখলদারিত্বের সময়ে ১৯৪৬ সালের যুদ্ধ-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনে যেখানে ১০ বা তার কম সংখ্যক প্রতিনিধি ছিল এমন নির্বাচনী এলাকায় প্রতিটি ভোটার দুইটি করে ভোট দিতে পারতেন এবং যেখানে ১০-এর বেশি প্রতিনিধি ছিল সেখানে তিনটি করে ভোট দেওয়া অনুমোদিত ছিল।
  • এস্তোনিয়ায় ১৯৯০ সালের কংগ্রেস অব এস্তোনিয়া নির্বাচনে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। []
  • কানাডায়, ১৮৯৬ এবং ১৯০০ সালে অন্টারিও প্রাদেশিক নির্বাচনে টরন্টোর এমএলএ নির্বাচনের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।[]
বর্তমানে
  • স্পেনে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর (জেনারেল ফ্রাঙ্কোর শাসন শেষ হওয়ার পর), মূল ভূখণ্ড থেকে/এর জন্য সিনেটর নির্বাচন করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে (প্রতিটি ভোটার প্রতি প্রদেশে চারটি আসনের জন্য তিনটি ভোট দিতে পারেন)।
  • যুক্তরাষ্ট্রে কনেকটিকাটে অধিকাংশ পৌরসভার অফিস নির্বাচন, পেনসিলভানিয়ায় বহু কাউন্টি কমিশন এবং অন্যান্য কিছু রাজ্যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এটি আলাবামা এবং নর্থ ক্যারোলিনার ২০টিরও বেশি পৌরসভায় ভোটাধিকার সংক্রান্ত মামলা সমাধান করতে গ্রহণ করা হয়েছে, যেহেতু অ্যারিংটন এবং ইঙ্গলসের ১৯৯৮ সালের 'দ্য লিমিটেড ভোট অলটারনেটিভ টু অ্যাফারমেটিভ ডিসট্রিক্টিং' (পলিটিক্যাল জিওগ্রাফি, খণ্ড ১৭, সংখ্যা ৬, আগস্ট ১৯৯৮, পৃষ্ঠা ৭০১–৭২৮) প্রবন্ধে এটি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। ২০০৯ সালে একজন ফেডারেল বিচারক ওহাইওর ইউক্লিডে স্কুল বোর্ড নির্বাচনে এর ব্যবহারের আদেশ দেন।[১০]
  • জিব্রালটারে (সকল ১৭টি আসনের জন্য প্রত্যেক ভোটার ১০টি ভোট দিতে পারেন)।

'স্থির অনুপাত' বা সীমিত ভোটের ক্লোজড-লিস্ট সংস্করণ

[সম্পাদনা]

যে নির্বাচনী ব্যবস্থায় বিজয়ী দলীয় তালিকাকে দুটি আসন এবং দ্বিতীয় স্থানপ্রাপ্ত দলীয় তালিকাকে একটি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটি সাধারণত তিনটি আসনের জন্য প্রতি ভোটারকে দুটি ভোট দেওয়ার সীমিত ভোট পদ্ধতির অনুরূপ ফলাফল প্রদান করে। এই পদ্ধতি আর্জেন্টিনার সিনেট এবং মেক্সিকোর সিনেটের ১২৮টির মধ্যে ৯৬টি আসনে ব্যবহৃত হয়। এটি বলিভিয়ার সিনেটেও ২০০৫ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছে।[১১] ২০০৬ সালের ২ জুলাই অনুষ্ঠিত বলিভিয়ার গণপরিষদ নির্বাচনে একটি অনুরূপ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল।[১২]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Enid Lakeman & James Labert (১৯৫৫)। Voting in democracies। London: Faber। 
  2. Hoag and Hallett (১৯২৬)। Proportional representation। পৃষ্ঠা 43–45। 
  3. Birmingham (UK Parliament constituency)
  4. Craig, British Parliamentary Election Results 1832–1885
  5. Tyson, Robert। ""Various voting methods""Arena (Jan. 1908): 60। 
  6. Pedro Tavares de Almeida; Margarida Lopes & João Samouqueiro (২০০৬)। "Legislação Eleitoral - REPÚBLICA.doc" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ 
  7. Pedro Tavares de Almeida; Margarida Lopes & João Samouqueiro (২০০৬)। "Legislação Eleitoral - MONARQUIA CONSTITUCIONAL.doc" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ 
  8. Bernard Grofman, Evald Mikkel & Rein Taagepera (১৯৯৯)। "Electoral System Change in Estonia" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০২০ 
  9. Parliamentary Guide 1900
  10. "Black candidate for Euclid school board to test new voting system - Cleveland.com"। ৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  11. The electoral system in the new Constitution, used since the elections of 2009, is 4 seat list-PR (D'Hondt) per department
  12. "Ciao!: Brief review of constituent assembly electoral system" 

বহিঃ সংযোগ

[সম্পাদনা]