সি. ডি. গোপীনাথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সি. ডি. গোপীনাথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকোইম্বাতারো দোরাইকান্নু গোপীনাথ
জন্ম (1930-03-01) ১ মার্চ ১৯৩০ (বয়স ৯৪)
মাদ্রাজ, ব্রিটিশ ভারত
ডাকনামগোপী
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক, ডানহাতি মিডিয়াম পেস
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্ককোমালা (পত্নী)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৫)
১৪ ডিসেম্বর ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৩ জানুয়ারি ১৯৬০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৯/৫০ - ১৯৬২/৬৩মাদ্রাজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৮৩
রানের সংখ্যা ২৪২ ৪,২৫৯
ব্যাটিং গড় ২২.০০ ৪২.১৬
১০০/৫০ ০/১ ৯/২৩
সর্বোচ্চ রান ৫০* ২৩৪
বল করেছে ৪৮ ৭১৪
উইকেট ১৪
বোলিং গড় ১১.০০ ২৭.৭৮
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ১/১১ ৩/১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/০ ৪৯/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ জানুয়ারি, ২০২০

কোইম্বাতারো দোরাইকান্নু সি. ডি. গোপীনাথ (উচ্চারণ; তামিল: சீ. டி. கோபிநாத்; জন্ম: ১ মার্চ, ১৯৩০) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মাদ্রাজ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতি অফ ব্রেক কিংবা ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘গোপী’ ডাকনামে পরিচিত সি. ডি. গোপীনাথ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

মর্যাদাপূর্ণ মাদ্রাজ ক্রিশ্চিয়ান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৬২-৬৩ মৌসুম পর্যন্ত সি. ডি. গোপীনাথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দৃষ্টিনন্দন ও ব্যাপক আঙ্গিকে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটাতে পারতেন সিডি গোপীনাথ। তবে, টেস্ট ক্রিকেটের ন্যায় বড় ধরনের খেলায় মোটেই সুবিধে করতে পারেননি তিনি। কিন্তু, ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় উপস্থাপন করেছিলেন নিজেকে। গোপী ধ্রুপদী শৈলীর ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অফের দিকে যথেষ্ট দক্ষতা ছিল তার। এছাড়াও আউটফিল্ডে চমৎকার ফিল্ডিং করতেন তিনি।

রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় ব্যাপকভাবে রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ৫১.০৬ গড়ে ২৩৪৯ রান তুলেছিলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ২৩৪ রান। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে সফররত নিউজিল্যান্ডীয় একাদশের বিপক্ষে দক্ষিণ অঞ্চলের সদস্যরূপে ১৭৫ রানের স্মরণীয় ইনিংস খেলেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে মহীশূরের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

বেশ কয়েক বছর মাদ্রাজ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৬২-৬৩ মৌসুম পর্যন্ত তামিলনাড়ু দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এছাড়াও দিলীপ ট্রফিতে দক্ষিণ অঞ্চলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।[১] তুলনামূলকভাবে তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে স্বল্পকালীন ছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আটটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন সি. ডি. গোপীনাথ। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৫১ তারিখে মুম্বইয়ে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৩ জানুয়ারি, ১৯৬০ তারিখে কলকাতায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫১-৫২ মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন তিনি। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ৫০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২ রান তুলেন তিনি। উভয় ইনিংসেই আট নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন। প্রথম ইনিংসে ধ্রুপদী ক্রীড়াশৈলী ভরপুর হলেও পরের ইনিংসে দ্রুতলয়ে পতন ঘটা রোধের তৎপরতা লক্ষণীয় ছিল। মাদ্রাজে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে দ্রুতলয়ে ৩৫ রানের মনোরম ইনিংস খেলেন তিনি। এ পর্যায়ে পলি উমরিগড়ের সাথে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন। ফলশ্রুতিতে, ভারত দলকে ইতিহাসের প্রথম বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

ইংল্যান্ড গমন, ১৯৫২[সম্পাদনা]

১৯৫২ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। তবে, ব্যাট হাতে নিয়ে একেবারেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন ও দূর্বল খেলা প্রদর্শন করেন তিনি। এরপর থেকে ভারত দলে আসা-যাওয়ার পালায় থাকতেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে পাকিস্তান ও ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজদেশে মুখোমুখি হন। এছাড়াও, ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে পাকিস্তান গমন করেছিলেন তিনি। এ সফরে কিছুটা ভালো খেলেন। সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৫৮.৩৩ গড়ে রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে দলে নেয়া হলেও তিনি এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯৫৯-৬০ মৌসুমে কলকাতা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। এরপর, আবারও সেই পুরনো রূপ ধারণ করেন।

অবসর[সম্পাদনা]

ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে খেলার জগৎ থেকে দূরে সরে আসেন। কিন্তু, সত্তর বৎসরান্তে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন ও ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০-এর দশকে বিজয় মার্চেন্টের অধীনে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ১৯৭৯ সালে জাতীয় দলের ব্যবস্থাপক হিসেবে ইংল্যান্ড গমন করেন। ভারতের প্রথম টেস্ট বিজয়ী দলের সর্বশেষ জীবিত সদস্য।[২]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। সাবেক গল্ফ চ্যাম্পিয়ন কোমালা’র সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলার কুনুর এলাকায় তারা বসবাস করছেন।[১] কিছু সূত্রে তার নামের প্রথম অংশকে চিঙ্গলকূট হিসেবে দেখানো হয়েছে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ramnarayan, V. (১ আগস্ট ২০১৩)। "An aristocrat among cricketers"Madras Musings। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯ 
  2. "CD Gopinath"TimesContent। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯ 
  3. Chingleput Duraikannu Gopinath (Mr.) at Directors Database website.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]