সিরিয়ার সঙ্গীত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলেপ্পো থেকে আসা কিছু সিরিয়ান বাদকদল

সিরিয়ার সঙ্গীত বলতে সিরিয়াতে বসতি স্থাপন করা এখনকার মানুষদের সঙ্গীতের ধরন এবং বৈশিষ্ট্যকে বোঝায়। এটি ক্লাসিক্যাল আরব মিউজিকের প্রসারে সিরিয়া অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল; যেমন, আলেপ্পো শহর মুয়াশশাহ সঙ্গীতের জন্য বিখ্যাত। আন্দালুসিয়ান মুয়াশশাহ কবিতা থেকেই এই সঙ্গীতের উৎপত্তি।

লোক সঙ্গীত[সম্পাদনা]

কায়রোতে তৈরি করা একটি ওউদ

সিরিয়ার লোক সঙ্গীত সাধারণত ওউদ বাদ্যযন্ত্র দিয়ে বাজানো হয়। এটি তার যুক্ত বাদ্যযন্ত্র। ইউরোপীয় লুট, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের আগেও এই ওউদ বাজানো হতো।[১] নোমাডিক অঞ্চলে, মিযমার এবং রিবাব বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গাওয়া বেদুঈন সঙ্গীত অনেক জনপ্রিয়।

আধুনিক সিরীয় সঙ্গীত অবশ্য লোক সঙ্গীত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আধুনিক সঙ্গীতে সাধারণত ইউরোপীয় বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়। এই সঙ্গীতে একজন প্রধান গায়ক থাকেন এবং সমস্বরে গাওয়ার জন্য আরো গায়ক থাকেন।[১] এই ধরনের সঙ্গীত অল্পবয়সীদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ করে ফরিদ আল আত্রাস, ফাহার বালান, সাবাহ ফকিরি, মায়াদা আল হেননায়ে এবং জর্জ ওয়াসসফদের মত শিল্পীরা এই আধুনিক সিরীয় সঙ্গীত বেশি গায়।[২]

মুয়াশশাহ[সম্পাদনা]

মুয়াশশাহ সঙ্গীত আরবীয় কবিতার একটি রূপ। এটি এক বা দুটি বাক্য দিয়ে শুরু হয় এবং গানের দ্বিতীয় অংশের সাথে এর মিল থাকে। এই সঙ্গীত আলেপ্পোতেই বেশি জনপ্রিয়।

সিরিয়াক সঙ্গীত[সম্পাদনা]

ইসলাম প্রসারের আগে সিরিয়া খ্রিস্টানদের প্রধান অঞ্চল ছিল। সিরীয় সঙ্গীতের সাথে চার্চে গাওয়া সঙ্গীতের যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়। বিশেষ করে স্তব সঙ্গীতের জন্ম সিরিয়াতেই।[৩] উল্লেখ্য, স্তবসমূহ এমন এক ধরনের সঙ্গীত যা খ্রিস্টানরা চার্চে প্রার্থনার সময় গেয়ে থাকে এবং এই গান পৃথিবীর প্রাচীন সঙ্গীতগুলোর মধ্যে অন্যতম।

এছাড়া সিরিয়ায় বসবাস করা ইহুদিদের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্মীয় গান আছে। নিউ ইয়র্ক শহর, মেক্সিকোসহ বিশ্বের নানান প্রান্তে বসবাস করা অনেক সিরীয় ইহুদি এখনো এই গান গায়।

নাচ[সম্পাদনা]

ডাবকেহ সিরিয়ার অন্যতম প্রধান একটি নৃত্য। গোল করে বা সারিবদ্ধভাবে এই নৃত্য পরিবেশন করা হয়। একজন প্রধান নৃত্যশিল্পী এই নাচের নেতৃত্ব দেন। দর্শকশ্রোতার দিকে ফিরে ও নৃত্যশিল্পীদের দিকে ফিরে তিনি এই নাচের নেতৃত্ব দেন। এটি সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়। এছাড়া আরাদা নামে আরেক লোকজ নৃত্য আছে যা তরবারি হাতে নিয়ে পরিবেশন করা হয়। বিশেষ করে মহিলারা ওরিয়েন্টাল নৃত্যের অংশ হিসেবে এই নৃত্য পরিবেশন করেন। ওরিয়েন্টাল নৃত্য মধ্যপ্রাচ্যে অতি জনপ্রিয় এক প্রকার নৃত্য।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. South, Coleman; Jermyn, Leslie (২০০৫)। Syria। পৃষ্ঠা 102। আইএসবিএন 9780761420545 
  2. "Music of Syria"Traditional Arabic music। ৩০ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. Apel, Willi (১৯৬৯)। Harvard Dictionary of Music। Harvard University Press। আইএসবিএন 9780674375017 

বাইরের সংযোগ[সম্পাদনা]