স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(সিমি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া ( সিমি), (Students Islamic Movement of India (SIMI) ১৯৭৭ সালে উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে প্রতিষ্ঠা হয়।ভারত সরকার এবং অনেকে বিশ্বাস করে যে সংস্থাটি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত।[১] ২০০১ সালে সিমিকে এক বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও শেষ পর্যন্ত ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনটি ভারতের সর্বত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। ২০০৮ আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও ৬ আগস্ট,২০০৮ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সিমির উপর ঐ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

ভারত সরকার সিমির বিভিন্ন কার্যকলাপের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদার দ্বারা চালিত হচ্ছে বলে মনে করা হয়। [২] এমন সন্দেহ করা হয় যে সিমি এখন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের অন্য নাম মাত্র,যারা ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন,২০০৮ সালের আহমেদাবাদজয়পুরের বোমা বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করেছে। [৩].

গঠন[সম্পাদনা]

সিমির প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আহমদউল্লাহ সিদ্দিকি বর্তমানে আমেরিকার ওয়েস্টার্ন ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও জনসংযোগের অধ্যাপক। সিদ্দিকি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সময় ‘উপলিব্ধ’ করেন, ভারতীয় গণমাধ্যম মুসলিমদের বিষয়ে ভুল তথ্য প্রচার করে। পদার্থবিদ্যা থেকে তিনি সাংবাদিকতাতে শুরু করেন এবং এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা করেন। সিদ্দিকি সিমি ছেড়েছেন বহু আগে। তবে তার মতে, সিমির উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় মুসলিমদের শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা এবং ভারতকে পশ্চিমী ভোগবাদের প্রভাব থেকে মুক্ত করে ইসলামি সংস্কৃতি প্রচার করা।। কিন্তু পরবর্তী কালে সিমি তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ-এর ছাত্রশাখা হিসাবে সিমি কিছু দিন কাজ করলেও পরে এই জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ থেকে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।[১][৪]

দর্শন[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে আরাফত ভারতে এলে সিমি-র সদস্যরা তাকে কালো পতাকা দেখান এবং স্লোগান দেন যে তিনি ‘পশ্চিমের পুতুল’।[১] অন্য দিকে জামাত-ই-ইসলাম হিন্দ তাকে দরাজ শংসাপত্র দেয়। সিমি-র এই উগ্রবাদে উত্তরণ ধীরে আরও ভয়াবহ চেহারা নেয়। সিমি-র বহু নেতা-কর্মী লাদেনকেই অবিসংবাদী নেতা বলে মেনে নেন। আম-মুসলিমের কাছে পৌছনোর জন্য তারা নানা ভাষায় পত্রিকা প্রকাশ করেন। বাংলা ভাষায় ‘রূপান্তর, হিন্দি ভাষায় তারিখ ,গুজরাতি ভাষায় ইকক্রা, তামিল ভাষায় সেধি মাদল , মালায়ালাম ভাষায় ভিভেকাম ইংরেজিতে মুভমেন্ট কিশোরদের জন্য শাহিন টাইমস নামের পত্রিকা প্রকাশিত করত। ২০০১ সালে সিমিকে এক বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও শেষ পর্যন্ত ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনটি ভারতের সর্বত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।সিমি-র মতাদর্শের সঙ্গে তালিবানদের তেত্ত্বর প্রচুর মিল পাওয়া যায়। [১] এরা জাতীয়তাবাদকে ইসলামের পরিপন্থী মনে করে। মুসলিম বিশ্বের খিলাফতেই এদের বিশ্বাস। অনেকের মতে, সিমি অথবা দেওবন্দ-ঘরানা থেকে উদ্ভূত[১] আবার কারুর মতে তালিবানি-তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত।[৪] পাকিস্তানের আই এস আই এদের আর্থিক সহায়তা করে। সৌদি আরব ও পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকেও এরা অর্থ পায়।[১][৪] কুয়েতের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডন্ট অর্গানাইজেশন এবং ওয়াল্ডর্ অ্যাসেম্বলি অব মুসলিম ইউথ- এর সঙ্গে সিমির আর্থিক সম্পর্ক আছে। [১]

সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ[সম্পাদনা]

ভয়াবহ উত্তর প্রদেশ বিস্ফোরন-২০০৭, জয়পুর বিস্ফোরন-২০০৮,ব্যাঙ্গালোর বিস্ফোরন-২০০৮আহমেদাবাদ বিস্ফোরন-২০০৮ ঘটে যাওয়ার পর ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এর দায় স্বীকার করেছে।[৫][৬][৭]হুজি, লশকর-ই-তৈবা অথবা জৈশ-ই-মহম্মদের সঙ্গে এদের যোগও খুজে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন আসলে নিষিদ্ধ সিমি-রই অন্য নাম মাত্র।[৩]. আমদাবাদে বিস্ফোরণসমূহের কিছুক্ষণ আগে এই জেহাদি সংগঠনটি তার পূর্বাভাস দিয়েছিল।[৮] ২০০৫ সালে অযোধ্যার বিতর্কিত এলাকায় ঢুকে পড়ে হামলা চালানোর অভিযোগে পাচ সিমি কর্মীকে আটক করা হয়।[১][৪] ২০০৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের কুমারডুবি-বরাকর শাখায় রেলের স্লিপার ক্লিপ সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পাচ সিমি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৪ সালে গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হরেন পাণ্ড্য হত্যাকাণ্ডে সিমির ‘হাত’ আছে বলে দাবি করা হয়। [১][৪]

ভারতীয় রাজনীতি[সম্পাদনা]

দিল্লি হাইকোর্টের ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য বিজেপি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ দমনে নরম মনোভাব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিবরাজ পাটিলকে বরখাস্ত করার দাবি জানায়। বিজেপির অভিযোগ, সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সিমির বিরুদ্ধে ‘নতুন’ তথ্যপ্রমাণ না দিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পথ প্রশস্ত করেছিল। এর আগে মুলায়ম সিংহ যাদব সিমির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কংগ্রেস এখন তার প্রতিশ্রুতি পালন করছে।বিজেপির এই অভিযোগে আরও ইন্ধন যুগিয়েছে খোদ মুলায়ম সিংহ যাদব ও কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের মন্তব্য। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ আসার আগেই মুলায়ম সিংহ যাদব ট্রাইব্যুনালের ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,

[৯] লালুপ্রসাদ যাদব বলেন,

[৯] ভারত সরকার পক্ষের এই মন্তব্য পরই বিজেপি সাংবাদিক সম্মেলন করে এবং বিজেপির মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি প্রশ্ন করেন,

[১০]

বিজেপি দল থেকে অভিযোগ করে এমন বক্তব্য বলা হয়,'

'[৯][১০][১১][১২][১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া
  2. "Students Islamic Movement of India: A Profile"। ৩ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০০৮ 
  3. "Investigators say Indian Mujahideen is SIMI v2.0"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২৭ 
  4. আহমেদ, শামিম। "কেন সিমি-র মতো সংগঠন ক্রমশ প্রভাবশালী হচ্ছে"সম্পাদনা। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৮-০৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Unknown Islamic group threatens more blasts in tourist India ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুলাই ২০০৮ তারিখে", Agence France-Presse, May 14, 2008.
  6. Nanjappaচ, Vicky (07-29-2008)। "Revealed: Indian Mujahideen's two-pronged terror strategy"Rediff.com  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য), Retrieved on 07-29-2008
  7. "Indian Mujahideen sends pre-blast video footage", India Today, May 14, 2008.
  8. Rosenberg, Matthew (২০০৮-০৭-২৭)। "Islamic group claims India blasts that killed 45"Yahoo!। ২০০৮-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২৭ 
  9. http://economictimes.indiatimes.com/News/PoliticsNation/Lalu__Mulayam_bats_for_SIMI/articleshow/3335587.cms
  10. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৮ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০০৮ 
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০০৮ 
  12. http://news.in.msn.com/national/article.aspx?cp-documentid=1613271[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  13. http://www.indianexpress.com/story/346198.html

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]