সিন ফ্রম আর্লি লাইফ (উপন্যাস)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সিন ফ্রম আর্লি লাইফ তরুণ ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ফিলিপ হেনশার (ইং:Philip Hensher) বিরচিত একটি উপন্যাস যার প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ। গ্রন্থটি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা এবং মুক্তিকামী বাঙালীর সাহসিকতা উভয়ই এই উপন্যাসে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।[১]

সিন ফ্রম আর্লি লাইফ মূলত: এক উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বাঙালি পরিবারের গল্প। এটি কিছুটা আত্মজৈবনিক যা কি-না এর নায়ক জাবেদ মাহমুদের বয়ানে স্মৃতিকথার আদলে ধরনে বিবৃত। এই বর্ণনায় রয়েছে গীতলতা। এটি আংশিকভাবে একজনের জীবনের গল্প, আংশিকভাবে একটি উপন্যাস। উপন্যাসের শুরতে আছে ঢাকা শহরের ধানমণ্ডির বর্ণনা: "ধানমন্ডির রাস্তাঘাট নীরব, আর পাশজুড়ে গাছের সারি, সব গাছই গোড়া থেকে চার ফুট সাদা রঙ করা, পিঁপড়াদের হাত থেকে গাছগুলোকে বাঁচাতেই এমন করা হয়েছে। "পিঁপড়ারা সাদা রঙের ওপর দিয়ে হাঁটতে পারে না";- আমার মা প্রায়ই বলতেন: "তারা অন্যের চোখে-পড়ে-যাওয়ার আতঙ্কে ভোগে। তাই গাছের কা-টা সাদা করে রাখা।" আমি আজো জানি না কথাটির কতখানি সত্য।..."

ফিলিপ হেনশারের বন্ধু জাবেদ মাহমুদ ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের শেষাশেষি তখনকার পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করে। তার জন্মের এক বৎসরের মধ্যেই দেশের পূর্বাংশ-পূর্ব পাকিস্তান-একটি রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে পশ্চিমাংশ থেকে আলাদা হয়ে যায়। গৃহযুদ্ধের শিকার অগণন নিরীহ বাঙ্গালীর বেদনাবহ রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়ায়র মানচিত্রে একটা নতুন দেশের অভ্যূদয় ঘটে যার নাম "বাংলাদেশ"। এটি কেবল স্মৃতিকথা নয়, এটি মুক্তির জন্য বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত রক্ষক্ষয়ী এক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও বটে। বালক সাদির নিখুঁত বয়ানে পাঠক জানতে পারে একটি পরিবার কী করে দখলদার পাকিস্তানি সেনাদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল। [২]

"সিন ফম আর্লি লাইফ" প্রসঙ্গে ভারতীয় কথাসাহিত্যিক অমিতাভ ঘোষ বলেছেন, এই গ্রন্থ ফিলিপের একটি বড় মাপের কাজ। যুগপৎ সমমর্মিতা আর গল্প প্রতিভার বিস্ময়কর এক সাফল্য। এই উপন্যাস অনেক পুরস্কারের দাবী রাখে। আর ভারতীয় উপমহাদেশেই এই দাবী বেশি খাটে।[৩]

ফিলিপ হেনশার ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার-এ ক্রিয়েঠিভ রাইটিং-এর অধ্যাপক। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ২০ জন শ্রেষ্ঠ তরুণ ব্রিটিশ ঔপন্যাসিকের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তার উপন্যাস দ্য নর্দান ক্লেমেন্সি ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বুকার পুরস্কারের জন্য বিবেচনাধীন গ্রন্থাবলীর সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ২০১৩ অবধি তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৮ যার মধ্যে উপন্যাস ৬টি। ব্রিটেনের দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখে থাকেন।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. SCENES FROM EARLY LIFE BY PHILIP HENSHER
  2. "SCENES FROM EARLY LIFE"। ১৩ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৪ 
  3. "Philip Hensher's "Scenes from Early Life""। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৪ 
  4. "Philip Hensher"। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৪ 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]