সিনসিনাতুস লেকন্তে
সিনসিনাতুস লেকন্তে | |
---|---|
হাইতির ১৯তম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ আগস্ট ১৫, ১৯১১ – আগস্ট ৮, ১৯১২ | |
পূর্বসূরী | ফ্রাঞ্চাইজ সি. অ্যাটর্নি সিমন |
উত্তরসূরী | ট্যানক্রেড অগাস্ট |
গণপূর্ত ও কৃষি মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ডিসেম্বর ১৩,১৮৯৭ – মে ১২,১৯০২ | |
পূর্বসূরী | জিন-ক্রিসোস্টোম আরটিওড |
উত্তরসূরী | ডোমোস্টে সিজারিয়ানস |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মাইকেল সিনসিনাতুস লেকন্তে ২৯ সেপ্টেম্বর ১৮৫৪ সেন্ট-মিশেল-ডি-এল'আতলায়, হাইতি |
মৃত্যু | ৮ আগস্ট ১৯১২ পোর্ত-ও-প্রাঁস, হাইতি | (বয়স ৫৭)
জাতীয়তা | হাইতিয়ান |
রাজনৈতিক দল | জাতীয় দল |
সম্পর্ক | জিন-জ্যাক ডেসালাইনস
ফ্লোরভিল হাইপোলাইট নিসেজ সেজেট ইওলেট লেকোন্টে |
জীবিকা | প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও শিক্ষক |
মিশেল সিনসিনিটাস লেকন্তে (ইংরেজি: Michel Cincinnatus Leconte, জন্ম: ২৯ সেপ্টম্বর, ১৮৫৪) ১৫আগস্ট, ১৯১১ থেকে শুরু করে ০৮ আগস্ট, ১৯১২ তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত হাইতির রাষ্ট্রপতি ছিলেন।[১] তিনি ছিলেন জিন-জ্যাক ডেসালাইনসের পপৌত্র ছিলেন হাইতি বিপ্লবের একজন নেতা ও স্বাধীন হাইতির প্রথম শাসক এবং ছিলেন জোসেফ ল্যারোচির চাচা, যিনি টাইটানিক জাহাজ ডুবিতে নিহত একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ।[২][৩][৪]
রাজনৈতিক কর্মজীবন
[সম্পাদনা]বাণিজ্যিক আইনজীবী থাকা অবস্থায় লেকন্তে রাষ্ট্রপতি পিয়েরি নর্ড অ্যালেক্সিসের অধীনে অভ্যন্তরীন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯০৮ সালের বিদ্রোহে আলেকিসকে পদচ্যুত হওয়ার পরে এবং ফ্রান্সোইস সি. এন্টোইন সাইমনকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি জ্যামাইকায় নির্বাসিত হতে বাধ্য হন।[৫]
১৯১১ সালে নির্বাসন থেকে ফিরে লেকন্তে একটি বিশাল সামরিক বাহিনী একত্রিত করেন।[৬] রাষ্ট্রপতি সাইমনকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিপ্লবকে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে ৭ আগস্ট, ১৯১১ লেকন্তে পর্তোপ্রাঁস বিজয়ী হিসেবে ফেরে আসে এবং তারপরে ১৪ আগস্ট লেকন্তে কংগ্রেস এর হয়ে সর্বসম্মতভাবে সাত বছর মেয়াদে হাইতির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।[৭][৮] সেসময় তার বেতন বছরে ২৪০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।[৯]
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে তিনি বেশ কয়েকটি সংস্কার কাজ করেন। যেমন রাস্তাগুলি তৈরি করা, শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি, টেলিফোন লাইন স্থাপন এবং সেনাবাহিনীর আকার হ্রাস।[১০] কলিয়ার সাপ্তাহিক ১৯১২ সালের আগস্টে যুক্তি দিয়েছিল যে রাষ্ট্রপতি লেকন্তের প্রশাসন ছিল "সাধারণভাবে স্বীকৃত" এবং চল্লিশ বছরে হাইতির সবচেয়ে সক্ষম ও নির্ভেজাল সরকার ছিল।[৫] "হাইতিতে ব্যাপক গবেষণার পরে 1930-এর দশকে জোরা নিলে হুরস্টন লিখেছিলেন যে লেকন্তের "অসংখ্য সংস্কার শুরু করার এবং সাধারণত ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার কৃতিত্ব ছিল।"[১১]
লেকন্তে স্থানীয় সিরিয়ান জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি অবলম্বন করে ছিলেন (অটোমান সিরিয়া থেকে খ্রিস্টান অভিবাসীরা), যা তখন ইতিমধ্যে নিপীড়িত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ছিল, তাদের মধ্যে থেকে একজন ঐতিহাসিক বর্ণনা করেছিলেন যে "1900 এর দশকের গোড়ার দিকে হাইতির আমেরিকান অর্থনৈতিক বিজয়ের উদ্বোধন শুরু ছিল”।[১২][১৩] রাষ্ট্রপতি পদে আরোহণের আগে, তিনি হাইতি থেকে সিরিয়ার জনগণকে বিতাড়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ১৯১২ সালে লেকন্তের বিদেশমন্ত্রী এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছিলেন যে "পূর্বাঞ্চলের যার জাতীয়তা অনিশ্চিত ছিল ,নাগরিকত্বের প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে সেই সকল নাগরিকদের রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়ে ছিল ।"[১৪][১৫] ১৯০৩ সালের একটি আইনে (বিশেষত সিরিয়ানদের উদ্দেশ্যে) পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে বিদেশিদের অভিবাসন স্তর এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করা হয়ে এবং ১৯০০ এর দশকের প্রথম কয়েক বছরে প্রচলিত সিরিয়ানদের হয়রানি আবার শুরু হয়েছিল। লেকন্তে প্রশাসন অবশ্য সিরিয়ানদের দ্বারা দাবি করা প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছিল যারা নর্ড অ্যালেক্সিসের সরকার কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছিল।[১৬] ১৯২১ সালে যখন লেকন্তে হঠাৎ মারা গেলেন, তখন বেশিরভাগ সিরিয়ান তার মৃত্যুবার্ষিকী উদ্যাপন করেছিল এবং তার ফলস্বরূপ তাদের কারাবরণ করতে হয়েছিল, অন্যদের নির্বাসিত করা হয়েছিল। তাঁর সিরিয়ার নীতিটি তার উত্তরসূরি টানক্রাডে আগস্টে চালিয়ে যান।[১৭]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]সাত বছরের মেয়াদে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও, লেকন্তে অফিসে সময় অল্পকালীন ছিল। 1912 সালের 8 আগস্ট একটি সহিংস বিস্ফোরণে জাতীয় রাষ্ট্রপতি ভবন ধ্বংস হয়ে যায়, এতে রাষ্ট্রপতি এবং কয়েক'শ সেনা নিহত হন।[১৮]
সেসময় নিযুক্ত একটি সংবাদ মাধ্যম লিখেছিল:
বিস্ফোরণটির শক্তি এতটাই বিশাল ছিল যে প্রচুর ছোট ছোট তোপ, লোহার টুকরো গুলো অনেক দূর দুরান্ত ছড়িয়ে ছিল। শহরের প্রতিটি বাড়ি কম্পিত হয়েছিল এবং পুরো জনগণ, ভীষণ ভীত হয়ে রাস্তায় ছুটে এসেছিল।[৫]
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ত্রৈমাসিকে ১৯১২সালের বিস্ফোরণের বিবরণে রিপোর্ট করা হয়েছিল যে "গোলাবারুদ ভান্ডারে দুর্ঘটনাক্রমে জ্বলনের ফলে জেনারেল সিনসিনাতুস লেকন্তের কারণে মৃত্যু ঘটেছে,"[১৯] একই জার্নালে ১৯২৭ সালের একটি নিবন্ধে তাঁর মৃত্যুকে একটি "হত্যাকাণ্ড" বলে মনে করেছিল।[১] হাইতির মৌখির ইতিহাস প্রচলিত আছে, যার অধিকাংশ ১৯৪০-এর দশকে টেল মাই হর্স : ভুডো এন্ড লাইফ ইন হাইতি এন্ড জামাইকা শিরোনামে হার্স্টনের লেখা বইটি থেকে যা পরবর্তী তে বেশিরভাগ লিখিত বিবরণ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছিল। হার্স্টন ব্যাখ্যা করেছিলেন, "ইতিহাসের বইগুলিতে সমস্তই বলা হয় যে সিনসিনাতুস লেকন্তে দুর্গ বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল, ভবনটি ধ্বংস হয়েছিল, কিন্তু সাধারণ জনগণ সেভাবে তা বলে না। উচ্চ বা নিম্ন, কোনও ব্যক্তিই আমাকে কখনও বলেনি যে লেকন্তে বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল। সাধারণত এটি গৃহীত হয় যে ভবন ধ্বংসটি এই সত্যটি বিবৃত করে যে রাষ্ট্রপতি সহিংসতায় মারা গিয়েছিলেন। " হার্স্টনের মতে "কথিত হত্যার জন্য অনেক কারণ দেওয়া হয়েছিল", তবে কথিত চক্রান্তের মূল অভিনেতারা ছিলেন "উচ্চাভিলাষী এবং রাষ্ট্রপতি লেকন্তের মৃত্যুর পরে ... রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনে মুখীয়ে ছিলেন।"[২০]
লেকন্তে মারা যাওয়ার ঠিক কয়েক মাস আগে, তার ভাগ্নে, জোসেফ ফিলিপ লেমেরসিয়ার ল্যারোচে, তার প্রথম যাত্রাপথের জন্য আরএমএস টাইটানিক ডুবতে মারা যান, যেখানে ২,২০০ এরও বেশি যাত্রী ছিলেন এবং ক্রু ছিলেন। লারোচের স্ত্রী এবং কন্যাগণ সমুদ্রের জাহাজ ডুবি দুর্ঘটনার পরও বেঁচে গিয়েছিলেন। লরোচ একমাত্র আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ব্যক্তি ছিলেন যিনি এই জাহাজ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Douglas, Paul H. (জুন ১৯২৭)। "The American Occupation of Haiti I": 232। ডিওআই:10.2307/2142787।
- ↑ Jacques Carmeleau, Jean Price-Mars and Haiti (Three Continents Press, 1981), p. 77
- ↑ Dantès Bellegarde, Histoire de du peuple haïtien, 1492–1952 (Held, 1953), p. 233
- ↑ ক খ Hughes, Zondra (জুন ২০০০)। "What Happened to the Only Black Family on the Titanic"। Ebony। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০।
- ↑ ক খ গ Ferris, William Henry (১৯১৩)। The African Abroad,: Or, His Evolution in Western Civilization, Tracing His Development Under Caucasian Milieu, V. 2। The Tuttle, Morehouse & Taylor press। পৃষ্ঠা 624–625।
- ↑ Chisholm, Hugh (১৯১৩)। The Britannica year book। The Encyclopædia Britannica Company। পৃষ্ঠা 1086।
- ↑ "Leconte in Haiti's Capital; Revolutionary Leader Takes Possession of National Palace" (PDF)। The New York Times। আগস্ট ৮, ১৯১১। পৃষ্ঠা 4। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০।
- ↑ Ferris, p. 623.
- ↑ Horace Greeley, The Tribune Almanac and Political Register (The Tribune Association, 1912), p. 502
- ↑ Reading, Andrew। "Democracy and Human Rights in Haiti" (পিডিএফ): 13। জানুয়ারি ১, ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০।
- ↑ Hurston, Zora Neale (১৯৯০)। Tell My Horse: Voodoo and Life in Haiti and Jamaica। Harper & Row। পৃষ্ঠা 104।
- ↑ Plummer, Brenda Gayle (অক্টোবর ১৯৮১)। "Race, Nationality, and Trade in the Caribbean: The Syrians in Haiti, 1903–1934": 517–518। ডিওআই:10.1080/07075332.1981.9640260।
- ↑ In 1905 the Syrian population of Haiti was estimated to be 15,000.
- ↑ Charles Arthur and J. Michael Dash, A Haiti Anthology: Libète (Markus Wiener Publishers, 1999), p. 219
- ↑ Caribbean Societies, Volume 2 (University of London, Institute of Commonwealth Studies, 1985), p. 115
- ↑ Plummer, pp. 522–23, 533.
- ↑ Plummer, p. 536.
- ↑ Danner, Mark (আগস্ট ১১, ১৯৯১)। "To Haiti, With Love and Squalor"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০।
- ↑ Hayes, Carlton H.; Edward M. Sait (ডিসেম্বর ১৯১২)। "Record of Political Events": 752। ডিওআই:10.2307/2141264।
- ↑ Hurston, p. 103.
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ফ্রাঞ্চাইজ সি. অ্যাটর্নি সিমন |
হাইতির রাষ্ট্রপতি ১৯১১–১৯১২ |
উত্তরসূরী ট্যানক্রেড অগাস্ট |