সিতভাতোরোকের শান্তিচুক্তি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সিতভাতোরোকের শান্তিচুক্তি
{{{image_alt}}}
রাদভান নাদ দুনাজোমে সিতভাতোরোকের শান্তিচুক্তি স্মৃতিসৌধ
ধরণশান্তিচুক্তি
স্বাক্ষর১১ নভেম্বর ১৬০৬
স্থানরাদভান নাদ দুনাজোম
মূল স্বাক্ষরকারীউসমানীয় সাম্রাজ্য প্রথম আহমেদ
পুণ্য রোমান সম্রাজ্য ম্যাথিয়াস
অংশগ্রহণকারী উসমানীয় সাম্রাজ্য
পুণ্য রোমান সম্রাজ্য হাবসবুর্গ সাম্রাজ্য

সিতভাতোরোকের শান্তিচুক্তি বা সিতভাতোরোকের সন্ধি ছিল একটি শান্তি চুক্তি যা ১১ নভেম্বর ১৬০৬-এ উসমানীয় সাম্রাজ্য এবং হাবসবুর্গ রাজতন্ত্রের মধ্যে পনের বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটায়। চুক্তিটি শান্তি চুক্তির একটি ব্যবস্থার অংশ ছিল যা স্টিফেন বকস্কে (১৬০৪-১৬০৬) এর হ্যাবসবার্গ বিরোধী বিদ্রোহের অবসান ঘটায়।

চুক্তিটি ১৬০৬ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বরের মধ্যে আদ সিতুয়া তোরকে, জিতাভা নদীর (হাঙ্গেরীয়: Zsitva) মুখে (যা রাজকীয় হাঙ্গেরির (বর্তমানে স্লোভাকিয়ার অংশ) দানিউবে প্রবাহিত হয়) আলোচনা করা হয়েছিল।[১] এই অবস্থানটি পরে জিটাভস্কা তোনা (হাঙ্গেরীয়: Zsitvatorok), রাদভান নাদ দুনাজোম (হাঙ্গেরীয়: Dunaradvány) পৌরসভার একটি অংশে পরিণত হয়েছে।

শান্তিচুক্তি বিশ বছরের মেয়াদের জন্য স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং কূটনৈতিক ইতিহাসবিদরা বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা করেছেন। চুক্তির উসমানীয় তুর্কি এবং হাঙ্গেরীয় পাঠ্যের মধ্যে পার্থক্য ভিন্ন ব্যাখ্যাকে প্রমাণ করে। যেমন হাঙ্গেরীয়রা কেবলমাত্র একবার ২০০,০০০ ফ্লোরিন কর দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল (যুদ্ধের আগে দেওয়া ৩০,০০০ গুলডেনের বার্ষিক করের পরিবর্তে), যেখানে উসমানীয় পাঠ্যের পূর্বাভাস ছিল যে, করপ্রদান তিন বছর পর পুনরাবৃত্তি করতে হবে। চুক্তিটি রাজকীয় হাঙ্গেরির ভূখণ্ডে উসমানীয় লুণ্ঠন অভিযান নিষিদ্ধ করে এবং শর্ত দেয় যে উসমানীয় শাসনের অধীনে হাঙ্গেরীয় বসতিগুলো গ্রামের বিচারকের মাধ্যমে নিজেরাই কর আদায় করতে পারবে। উসমানীয়রাও অভিজাতদের করমুক্ত সুযোগ-সুবিধা স্বীকার করেছিল। যাইহোক, উসমানীয়রা কখনই এই শর্তগুলো মেনে চলেনি।

সুলতান প্রথম আহমেদ এবং পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের পক্ষে অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ম্যাথিয়াস এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। ৯ ডিসেম্বর ম্যাথিয়াসের ভাই সম্রাট রুডলফ দ্বিতীয় চুক্তিটি অনুমোদন করেন।[১] দীর্ঘ যুদ্ধের সময় উসমানীয়দের হ্যাবসবার্গ অঞ্চলে (রাজকীয় হাঙ্গেরি) আরও অনুপ্রবেশ করতে অক্ষমতা প্রমাণ করেছিল, যা তাদের প্রথম ভূ-রাজনৈতিক পরাজয়ের একটি। যাইহোক চুক্তিটি উভয় পক্ষের সুবিধার জন্য হাবসবার্গ-উসমানীয় সীমান্তে অর্ধ শতাব্দীর জন্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল করে। পরবর্তী বছরগুলোতে হ্যাবসবার্গগুলি গুরুতর অভ্যন্তরীণ বিরোধিতার মুখোমুখি হয়। এবং উসমানীয়দের মধ্যেও অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ছাড়াও তাদের সীমান্তের অন্যান্য অংশে (পোল্যান্ড এবং ইরান) প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ছিল।

সিতভাতোরোকে প্রথমবারের মত, উসমানীয় সুলতানের আগমন; যিনি কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর থেকে কায়সার-ই রুম (রোমান সাম্রাজ্যের সিজার) উপাধি বহন করেছিলেন ও নিজেদেরকে পাদিশা (সম্রাট, বা আরও আক্ষরিক অর্থে, "রাজাদের রাজা") উপাধি দিয়ে পবিত্র রোমান সম্রাটের মর্যাদার সমতা স্বীকার করেছিলেন। যা ছিল সুলতানের নিজের উপাধি। এটিকে দিভিসিও ইমপেরি-এর স্বীকৃতি হিসাবে দেখা হয়েছিল। যার ফলে সাম্রাজ্যের আধিপত্য পশ্চিম (পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য) এবং পূর্বে (উসমানীয় সাম্রাজ্য) বিভক্ত হয়। এর আগে, পবিত্র রোমান সম্রাট উপাধিটি উসমানীয় কূটনীতিতে ভিয়েনার ক্রাল (রাজা) হিসাবে গণ্য করা হয়েছিল। পরবর্তী ইউরোপীয় শাসক যিনি ১৭৭৪ সালের কুচ কায়নার্কা চুক্তিতে এই স্তরের সম্মানের অধিকারী ছিলেন, তিনি ছিলেন রাশিয়ার ক্যাথরিন দ্য গ্রেট[২][৩]

এই চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সামন্ত্য হিসেবে ক্রিমীয় খানাতের অন্তর্ভুক্তি ছিল।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kenneth Meyer Setton, The Papacy and the Levant, 1204–1571, Volume IV: The Sixteenth Century from Julius III to Pius V (Philadelphia: American Philosophical Society, 1984), p. 1097, n. 191.
  2. Bernard Lewis, What Went Wrong?: Western Impact and Middle Eastern Response (Oxford University Press, 2002), pp. 12 and 164, n. 3. In the Russian treaty, the title was Padischag (in Italian).
  3. Mehmet Sinan Birdal, The Holy Roman Empire and the Ottomans: From Global Imperial Power to Absolutist States (I. B. Tauris, 2011), p. 6.
  4. Kenneth Meyer Setton, Venice, Austria, and the Turks in the Seventeenth Century (American Philosophical Society, 1991), p. 22.

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Bayerle, Gustav (১৯৮০)। "The compromise at Zsitvatorok": 5–53।