সিঙ্গাপুরের প্রশাসনিক বিভাগ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

যদিও নগর-রাষ্ট্রে ক্ষুদ্র ভৌত আকার বড় বড় দেশগুলির মতো প্রদেশ, রাজ্য এবং অন্যান্য জাতীয় রাজনৈতিক বিভাগ আকারে জাতীয় উপবিভাগ তৈরির যোগ্যতা অর্জন করে না, তবুও স্থানীয় প্রশাসন এবং নগর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে শহরটি তার ইতিহাস জুড়ে প্রশাসনিকভাবে বিভিন্ন ভাবে বিভক্ত হয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ঐতিহাসিকভাবে এই উপবিভাগসমূহ বিশেষ করে ঔপনিবেশিক যুগে ডাক জেলাগুলির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচনী জেলা স্থাপনের প্রয়োজন হয়, তবে, এটি স্থানীয় জেলা প্রশাসনের বিকল্প রূপ হিসাবে ডাক জেলাগুলি পরিপূরক হিসাবে কাজ করে, যেহেতু প্রতিটি নির্বাচনী জেলার নেতৃত্বে সংসদ সদস্য থাকে এবং তারা সংশ্লিষ্ট জেলার ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করেন ও তাদের হয়ে বক্তব্য রাখেন।

প্রশাসনিক এবং নির্বাচনী বিভাগ[সম্পাদনা]

সমাজ উন্নয়ন পরিষদ জেলা[সম্পাদনা]

সিঙ্গাপুরের সমাজ উন্নয়ন পরিষদ জেলা
শ্রেণিএককেন্দ্রীক রাষ্ট্র
অবস্থানসিঙ্গাপুর
প্রতিষ্ঠাকারক আইনপিএ আইন ১৯৯৭
প্রতিষ্ঠার তারিখ
  • ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ [১]
  • ১১ নভেম্বর ২০০১ (চূড়ান্ত)
সংখ্যা৫টি জেলা (২০১৫ অনুযায়ী)
সরকার
উপবিভাগ

১৯৯৭ সালে পিএ আইন বলে প্রতিষ্ঠিত এগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়, এখানে আগে ৯ টি জেলা ছিল, যা ৯ টি ভিন্ন সমাজ উন্নয়ন পরিষদ (সিডিসি) দ্বারা পরিচালিত হতো। ২০০১ সালে ৯ টি জেলা এবং সিডিসিকে ৫টিতে রূপান্তরিত করা হয়, তাদের নাম রাখা হয় উত্তর-পূর্ব সিডিসি, উত্তর-পশ্চিম সিডিসি, দক্ষিণ পূর্ব সিডিসি, দক্ষিণ পশ্চিম সিডিসি এবং মধ্য সিঙ্গাপুর সিডিসি।[১][২] প্রতিটি জেলাকে পরবর্তীতে আরও নির্বাচনী এলাকা এবং নগর পরিষদে বিভক্ত করা হয়েছে।

পরিষদের সীমানা বিদ্যমান রাজনৈতিক বিভাগগুলিকে অনুসরণ করে, প্রতিটি পরিষদ চার থেকে ছয়টি জিআরসি এবং এসএমসি পরিচালনা করে এবং দেশের জনসংখ্যাকে প্রায় সমান অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি সিডিসি একটি পরিষদ দ্বারা পরিচালিত হয়, যার নেতৃত্বে থাকেন একজন নগরাধ্যক্ষ এবং এতে ১২ থেকে ৮০ জন সদস্য থাকে। সদস্যদেরকে পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বা সহ চেয়ারম্যান নিয়োগ করেন।

স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক বন্ধন এবং সামাজিক সংহতি প্রচারের জন্য সামাজিক কার্যক্রম প্রবর্তন, পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা সিডিসির দায়িত্ব।[৩] সিঙ্গাপুরের নির্বাচনী সীমানা তুলনামূলকভাবে পরিবর্তনশীল, এবং প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনের আগে পর্যালোচনা করা হয়। জেলাগুলি নির্বাচনী এলাকা এবং নির্বাচনী জেলাগুলির সমন্বয়ে গঠিত (২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের পরে)।

বর্তমানে পাঁচটি সিডিসি রয়েছে, সিডিসিগুলির নাম হলো:

নগর পরিষদ[সম্পাদনা]

এস্টেট পরিচালনার মূল লক্ষ্য নিয়ে নগর পরিষদ আইন বলে ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম নগর পরিষদ স্থাপন করা হয়।[৪] নগর পরিষদ প্রবর্তনের আগে আবাসন সম্পদ আবাসন উন্নয়ন বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হত।[৫] যেহেতু এই সম্পদগুলি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হতো, বোর্ড সমস্ত আবাসন সংস্থার জন্য যে প্রমিত মানের নিয়ম তৈরি করেছিল তা এইচডিবি শহরকে চেহারাতে একঘেয়ে করে তোলে এবং বিভিন্ন এস্টেটের বাসিন্দাদের যে সমস্যার মুখোমুখি হয় তা খুব দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হয়নি।[৫]

নির্বাচনী জেলা সীমানার উপর ভিত্তি করে নগর পরিষদের সীমানা চিহ্নিত করা হয়। একটি নগর পরিষদের এলাকা একটি গ্রুপ প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনী এলাকা (জিআরসি), একটি একক সদস্য নির্বাচনী এলাকা (এসএমসি), বা একই রাজনৈতিক দলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রতিবেশী জিআরসি এবং এসএমসি দ্বারা গঠিত হতে পারে। নগর পরিষদের সীমানা নতুন শহরের সীমানার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়; একটি এইচডিবি শহরের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন নগর পরিষদ পরিচালনা করতে পারে। [৬]

বর্তমানে ২০২০ সালে ১৭ টি টাউন নগর পরিষদ রয়েছে:[৭]

নগর পরিষদ নির্বাচনী এলাকা
আলজুনিয়েদ – হুগ্যাং আলজুনিয়েদ জিআরসি
হুগ্যাং এসএমসি
আং মো কিও আং মো কিও জিআরসি
কেবুন বারু এসএমসি
ইয়ো চু ক্যাং এসএমসি
বিশান–তোয়া পায়োহ বিশান–তোয়া পায়োহ জিআরসি
মেরিমাউন্ট এসএমসি
চোয়া চু ক্যাং চোয়া চু ক্যাং জিআরসি
উত্তর হংক কাহ এসএমসি
পূর্ব উপকূল পূর্ব উপকূল জিআরসি
হল্যান্ড–বুকিত প্যাঞ্জাং হল্যান্ড–বুকিত তিমাহ জিআরসি
বুকিত প্যাঞ্জাং এসএমসি
জালান বেসার জালান বেসার জিআরসি
পতোং পাসির এসএমসি
জুরং–ক্লেমেন্তি জুরং জিআরসি
বুকিত বাতোক এসএমসি
ইউহুয়া এসএমসি
মেরিন প্যারেড মেরিন প্যারেড জিআরসি
ম্যাকফারসন এসএমসি
মাউন্টব্যাটেন এসএমসি
মার্শিলিং–ইয়েউ তি মার্শিলিং–ইয়েউ তি জিআরসি
নী সুন নী সুন জিআরসি
পাসির রিস–পুংগোল পাসির রিস–পুংগোল জিআরসি
পশ্চিম পুংগোল এসএমসি
সেম্বাওয়াং সেম্বাওয়াং জিআরসি
সেংক্যাং সেংক্যাং জিআরসি
ত্যাম্পাইনস ত্যাম্পাইনস জিআরসি
তানজং পাগার তানজং পাগার জিআরসি
রডিন মাস এসএমসি
পশ্চিম উপকূল পশ্চিম উপকূল জিআরসি
পাইওনিয়ার এসএমসি

নির্বাচনী এলাকা[সম্পাদনা]

নগর পরিষদকে এরপর আরও বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করা হয়, যা একক সদস্য নির্বাচনী এলাকা (এসএমসি) বা গ্রুপ প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনী এলাকা (জিআরসি) হিসাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়। নির্বাচনী এলাকার সীমানা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নির্বাচন দফতর নির্ধারণ করে থাকে ।[৮]

অন্যান্য প্রশাসনিক উপবিভাগ[সম্পাদনা]

ইউআরএ মহা পরিকল্পনার সীমা[সম্পাদনা]

প্রশাসনিক অঞ্চল[সম্পাদনা]

প্রশাসনিক অঞ্চল হলো পরিকল্পনা অঞ্চলের বিন্যাস।

পরিকল্পনা অঞ্চল[সম্পাদনা]

অঞ্চলগুলি আবার পরিকল্পনা অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে পৌর পুনঃউন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দেশকে ৫৫ টি পরিকল্পনা অঞ্চলে বিভক্ত করে। তাদের সীমানা ক্রমবর্ধমানভাবে দেশকে বিভক্ত করার বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে, নির্বাচনী সীমানা অধিক পরিবর্তনশীল প্রকৃতির তুলনায় সীমানা পরিবর্তন না হওয়ায় আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সিঙ্গাপুর পরিসংখ্যান বিভাগ সর্বশেষ ২০০০ সালে দেশব্যাপী জনসংখ্যা আদম শুমারির জন্য এই সীমানা নির্ধারণ করেছে এবং সিঙ্গাপুর পুলিশ বাহিনী যখন আশেপাশের পুলিশ কেন্দ্রগুলির সীমানা নির্ধারণ করে তখন তাদের আনুমানিক সহায়িকা হিসাবে ব্যবহার করেছে, পূর্ববর্তী প্রতিবেশী পুলিশ পোস্ট ব্যবস্থান বিপরীত যা নির্বাচনী বিভাগগুলির ভিত্তিতেও ছিল।

জরিপ জেলা[সম্পাদনা]

সিঙ্গাপুরকে ৬৪ টি জরিপ জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে যার মধ্যে ৩৪ টি মুকিম (মূলত গ্রামীণ জেলা) এবং ৩০ টি নগর উপবিভাগ।[৯]

ডাক জেলা[সম্পাদনা]

১৯৯৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর কার্যকর হওয়া নতুন ব্যবস্থার আওতায় ডাক জেলার সংখ্যা ১ থেকে ৮৩ টি ছিল। ১৯৯০ এর দশকে নতুন পরিকল্পনার সীমানা প্রবর্তনের আগ পর্যন্ত আদমশুমারি তথ্য এবং অভ্যন্তরীণ সীমানার সর্বাধিক রূপ ডাক জেলাগুলির উপর ভিত্তি করে ছিল।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Full map of CDCs released for first time."। The Straits Times, p. 25 (Retrieved from Newspaper SG)। ২১ আগস্ট ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৬ 
  2. "First 2 CDCs preparing for launch."। The Straits Times, p. 27. (Retrieved from Newspaper SG)। ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৬ 
  3. Fernandez, W. (19 August 1996). PM Goh urges young to rally behind him. The Straits Times, p. 1. Retrieved from NewspaperSG; The Straits Times, 19 Aug 1996, p. 24.
  4. Low, A. (1 September 1986). Town councils take over from HDB. .The Straits Times, p. 8. Retrieved from NewspaperSG.
  5. Ngoo, I., et al. (7 April 1987). My kind of town. The Straits Times, Retrieved from NewspaperSG; Koh, T., et al.
  6. "TOWN COUNCILS ACT (CHAPTER 329A)"Singapore Statutes Online। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  7. "Town Councils (Declaration) Order 2020"Singapore Statues Online। ২৯ জুলাই ২০২০। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. Alex Au Waipang, 'The Ardour of Tokens: Opposition Parties' Struggle to Make a Difference', in T.Chong (eds), Management of Success: Singapore Revisited (Singapore, 2010), p. 106.
  9. "Land Titles Search"Singapore Land Authority। ২০১৫-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]