সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন
| সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন | |
|---|---|
তিনটি প্রধান সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্নের অবস্থান প্রদর্শনকারী চিত্র, সিস্টারনা ম্যাগনা-কে সিস্টারনা সেরিবেলোমেডুলারিস হিসাবে দেখানো হয়েছে | |
| বিস্তারিত | |
| শনাক্তকারী | |
| লাতিন | cisternae subarachnoideum |
| শারীরস্থান পরিভাষা | |
সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন হল মস্তিষ্কের মেনিনজেসে অবস্থিত শারীরস্থানিক স্থানের সাবঅ্যারাকনয়েড স্পেসে একটি রন্ধ্রের মাধ্যমে গঠিত স্থান।[১] এই স্থানটি দুই মেনিনজেস অর্থাৎ অ্যারাকনয়েড ম্যাটার এবং পিয়া ম্যাটারের মধ্যে অবস্থিত। এই সিস্টার্নগুলি সেরিব্রোস্পাইনাল তরল (সিএসএফ) দ্বারা পূর্ণ থাকে।[১]
গঠন
[সম্পাদনা]যদিও পিয়া ম্যাচটার মস্তিষ্কের পৃষ্ঠতলে লেগে থাকে এবং এর জাইরাই ও সলকাইয়ের রূপরেখা অনুসরণ করে, অ্যারাকনয়েড ম্যাটার কেবল এর পৃষ্ঠীয় পৃষ্ঠতল আবৃত করে এবং গাইরাইয়ের উপর সেতুর মতো বিস্তৃত থাকে। এটি পিয়া ও অ্যারাকনয়েডের মধ্যে বিস্তৃত স্থান রেখে দেয় এবং এই গহ্বরগুলি সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন নামে পরিচিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যদিও এগুলিকে প্রায়শই পৃথক প্রকোষ্ঠ হিসাবে বর্ণনা করা হয়, সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্নগুলি প্রকৃতপক্ষে শারীরস্থানিকভাবে সম্পূর্ণ পৃথক নয়। বরং, এই সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্নগুলি বিভিন্ন আকারের ছিদ্রযুক্ত ট্র্যাবেকুলেটেড প্রাচীর দ্বারা একে অপরের থেকে পৃথক করা থাকে।
সিস্টার্নসমূহ
[সম্পাদনা]মস্তিষ্কে অনেক সিস্টার্ন রয়েছে যার মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় সিস্টার্নের নিজস্ব নাম রয়েছে। স্পাইনাল কর্ডের গোড়ায় আরেকটি সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন রয়েছে: লাম্বার সিস্টার্ন যা লাম্বার পাংচারের স্থান। কিছু প্রধান সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্ন:
- সিস্টারনা ম্যাগনা যাকে সেরিবেলোমেডুলারি সিস্টার্নও বলা হয় - সাবঅ্যারাকনয়েড সিস্টার্নগুলির মধ্যে সর্ববৃহৎ। এটি সেরিবেলাম এবং মেডুলা অবলংগাটার মধ্যে অবস্থিত। এটি চতুর্থ ভেন্ট্রিকল থেকে মিডিয়ান অ্যাপারচারের (ফোরামেন অফ ম্যাজেন্ডি) মাধ্যমে সিএসএফ গ্রহণ করে। সিস্টারনা ম্যাগনায় রয়েছে:
- ভার্টিব্রাল ধমনী এবং পোস্টেরিয়র ইনফিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর (পিআইসিএ) উৎপত্তি
- নবম (IX), দশম (X), একাদশ (XI) এবং দ্বাদশ (XII) ক্র্যানিয়াল স্নায়ু
- পন্টিন সিস্টার্ন। পন্সের ভেন্ট্রাল দিক ঘিরে থাকে। এটি যুগ্ম ল্যাটারাল অ্যাপারচারের মাধ্যমে সিএসএফ গ্রহণ করে। এতে রয়েছে:
- বেসিলার ধমনী এবং অ্যান্টেরিয়র ইনফিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর (এআইসিএ) উৎপত্তি
- সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর উৎপত্তি
- ষষ্ঠ (VI) ক্র্যানিয়াল স্নায়ু
- ইন্টারপেডাংকুলার সিস্টার্ন। এটি মস্তিষ্কের গোড়ায়, মিডব্রেনের দুটি সেরিব্রাল পেডাঙ্কলের মধ্যে এবং ডোরসাম সেলাইয়ের নিচে অবস্থিত এবং নিচে পন্টিন সিস্টার্নের সাথে ও উপরে কায়াজম্যাটিক সিস্টার্নের সাথে সংযুক্ত থাকে। এতে রয়েছে:
- অপটিক কায়াজম
- বেসিলার ধমনীর বাইফারকেশন
- পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ধমনীর (পিসিএ) পেডাঙ্কুলার সেগমেন্ট
- সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর পেডাঙ্কুলার সেগমেন্ট
- পিসিএ-এর পারফোরেটিং শাখা
- পোস্টেরিয়র কমিউনিকেটিং ধমনী (পিসিওএ)
- বেসাল শিরা
- তৃতীয় (III) ক্র্যানিয়াল স্নায়ু, যা পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ও সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর মধ্যে দিয়ে যায়
- সেরিবেলোপন্টাইন অ্যাঙ্গেল সিস্টার্ন। এটি সেরিবেলোপন্টাইন অ্যাঙ্গেলে অবস্থিত - সেরিবেলাম ও পন্সের মধ্যকার পার্শ্বীয় কোণ। এতে রয়েছে:
- সপ্তম (VII) ও অষ্টম (VIII) ক্র্যানিয়াল স্নায়ু
- অ্যান্টেরিয়র ইনফিরিয়র সেরিবেলার ধমনী (এআইসিএ)
- পঞ্চম (V) ক্র্যানিয়াল স্নায়ু ও পেট্রোসাল শিরা
- কোয়াড্রিজেমিনাল সিস্টার্ন - এটি মিডব্রেনের ডরসালে অবস্থিত। সুপিরিয়র সিস্টার্নের পাতলা, চাদরের মতো বিস্তৃতি যা মিডব্রেনকে ঘিরে পার্শ্বে বিস্তৃত এবং এটিকে ইন্টারপেডাংকুলার সিস্টার্নের সাথে সংযুক্ত করে। অ্যাম্বিয়েন্ট সিস্টার্ন এই বিস্তৃতি ও সুপিরিয়র সিস্টার্নের সমন্বয়কেও বোঝাতে পারে। এটি একটি সুপ্রাটেন্টোরিয়াল ও ইনফ্রাটেন্টোরিয়াল প্রকোষ্ঠ নিয়ে গঠিত। এতে রয়েছে:
- গ্রেট সেরিব্রাল শিরা
- পোস্টেরিয়র পেরিক্যালোসাল ধমনী
- সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর তৃতীয় অংশ
- পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ও সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনীর পারফোরেটিং শাখা
- পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ধমনীর তৃতীয় অংশ
- এর সুপ্রাটেন্টোরিয়াল অংশে রয়েছে:
- বেসাল শিরা
- পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ধমনী
- এর ইনফ্রাটেন্টোরিয়াল অংশে রয়েছে:
- সুপিরিয়র সেরিবেলার ধমনী
- চতুর্থ (IV) স্নায়ু
- ক্রুরাল সিস্টার্ন। এটি মিডব্রেনের ভেন্ট্রোল্যাটারাল দিকে অবস্থিত। এতে রয়েছে:
- অ্যান্টেরিয়র কোরয়েড ধমনী
- মিডিয়াল পোস্টেরিয়র কোরয়েড ধমনী
- বেসাল শিরা
- ক্যারোটিড সিস্টার্ন। এটি ক্যারোটিড ধমনী ও একই পাশের অপটিক স্নায়ুর মধ্যে অবস্থিত। এতে রয়েছে:
- ইন্টারনাল ক্যারোটিড ধমনী
- অ্যান্টেরিয়র কোরয়েড ধমনীর উৎপত্তি
- পোস্টেরিয়র কমিউনিকেটিং ধমনীর উৎপত্তি
- ল্যাটেরাল সেরিব্রাল ফোসার সিস্টার্ন। এটি ফ্রন্টাল ও টেম্পোরাল লোবের মধ্যকার ফিসারে অবস্থিত। এতে রয়েছে:
- মিডল সেরিব্রাল ধমনী
- মিডল সেরিব্রাল শিরা
- ফ্রন্টো-অরবিটাল শিরা
- বেসাল শিরায় কোল্যাটেরাল
- ল্যামিনা টার্মিনালিসের সিস্টার্ন। এটি তৃতীয় ভেন্ট্রিকলের ঠিক রস্ট্রালে অবস্থিত। এতে রয়েছে:
- অ্যান্টেরিয়র সেরিব্রাল ধমনী (এ১ ও প্রক্সিমাল এ২)
- অ্যান্টেরিয়র কমিউনিকেটিং ধমনী
- হিউবনারের ধমনী
- হাইপোথ্যালামিক ধমনী
- ফ্রন্টো-অরবিটাল ধমনীর উৎপত্তি
- লাম্বার সিস্টার্ন। এটি কনাস মেডুলারিস (এল১-এল২) থেকে দ্বিতীয় স্যাক্রাল কশেরুকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে ফিলাম টার্মিনেল ও কডা ইকুইনার স্নায়ু শিকড় রয়েছে। লাম্বার সিস্টার্ন থেকেই লাম্বার পাংচারের সময় সিএসএফ উত্তোলন করা হয়।
ক্লিনিক্যাল তাৎপর্য
[সম্পাদনা]এটি ক্লিনিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ যে সেরিব্রাল ধমনী, শিরা ও ক্র্যানিয়াল স্নায়ুগুলি সাবঅ্যারাকনয়েড স্পেসের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে এবং খুলি থেকে বের হওয়া পর্যন্ত তাদের মেনিনজিয়াল আবরণ বজায় রাখে।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- 1 2 Purves, Dale (২০১১)। Neuroscience (5th সংস্করণ)। Sunderland, Mass.: Sinauer। পৃ. ৭৪২। আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৭৮৯৩-৬৯৫-৩।
- Nolte, J (2002) The Human Brain, 5th edition. আইএসবিএন ০-৩২৩-০১৩২০-১, 87