বিষয়বস্তুতে চলুন

সাংবিধানিক আইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফরাসি সংবিধানের নীতি সমূহ

সাংবিধানিক আইন হল একটি আইনের শাখা যা একটি রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা, যেমন কার্যনির্বাহী, সংসদ বা আইনসভা, এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা, ক্ষমতা ও কাঠামো নির্ধারণ করে; এছাড়াও এটি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডার মতো ফেডারেল দেশগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য, প্রাদেশিক, বা আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে।

সব জাতি-রাষ্ট্রের একটি বিধিবদ্ধ সংবিধান নেই, যদিও সকল রাষ্ট্রের একটি সাধারণ আইন বা দেশের আইন থাকে, যা বিভিন্ন বাধ্যতামূলক এবং সম্মতিমূলক নিয়মাবলীর সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে। এর মধ্যে প্রথাগত আইন, প্রথাসম্মত নিয়ম, বিধিবদ্ধ আইন, বিচারকৃত আইন বা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মানদণ্ড অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সাংবিধানিক আইন সেই মৌলিক নীতিগুলির সাথে সম্পর্কিত যা দ্বারা সরকার তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে। কিছু ক্ষেত্রে, এই নীতিগুলি সরকারকে নির্দিষ্ট ক্ষমতা প্রদান করে, যেমন জনগণের কল্যাণের জন্য কর আরোপ ও ব্যয় করার ক্ষমতা। অন্যদিকে, সাংবিধানিক নীতিগুলি কখনও কখনও সরকারের ক্ষমতার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে, যেমন যথাযথ কারণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান।

বেশিরভাগ দেশে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুর, সাংবিধানিক আইন একটি দলিলে ভিত্তি করে গঠিত, যা দেশ প্রতিষ্ঠার সময় অনুমোদিত হয়েছিল। অন্য সংবিধানগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের,[][] প্রধানত অ-কোডিফাইড নিয়মাবলীর উপর নির্ভর করে, যেখানে একাধিক আইনসঙ্গত স্ট্যাটিউট এবং সংবিধানিক প্রথা অন্তর্ভুক্ত থাকে। এদের সাংবিধানিক আইনের মধ্যে অবস্থান ভিন্ন হতে পারে, এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রথাগুলির শর্তাবলী নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়।[]

রাষ্ট্র ও আইন কাঠামো

[সম্পাদনা]

সাংবিধানিক আইনকে দ্বিতীয় স্তরের নিয়ম প্রণয়ন বা ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য নিয়ম তৈরির নিয়ম হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি বিচার বিভাগ, আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যকার সম্পর্কগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, যা তার কর্তৃত্বের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর সাথে সম্পর্কিত।[] এই প্রসঙ্গে সংবিধানের একটি মূল কাজ হল ক্ষমতার সম্পর্ক এবং শ্রেণিবিন্যাস নির্ধারণ করা। উদাহরণস্বরূপ, একটি একক রাষ্ট্রে, সংবিধান চূড়ান্ত কর্তৃত্ব একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসন, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের হাতে প্রদান করে, যদিও স্থানীয় বা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায়ই ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব অর্পণ করা হয়। যখন একটি সংবিধান সংঘীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, তখন এটি আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নের বিষয়ে একক বা ভাগাভাগি অধিক্ষেত্রের সাথে সহাবস্থানের জন্য বিভিন্ন স্তরের সরকার চিহ্নিত করে। কিছু সংঘীয় রাষ্ট্রে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে, পৃথক ও সমান্তরাল কেন্দ্রীয় এবং অঙ্গরাজ্যের বিচার বিভাগ রয়েছে, যাদের প্রত্যেকের নিজস্ব আদালতের শ্রেণিবিন্যাস এবং প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সর্বোচ্চ আদালত থাকে।[] অন্যদিকে, বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা রয়েছে, যা জেলা আদালত, উচ্চ আদালত বা সুপ্রিম কোর্টে (হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগ) বিভক্ত।

মানবাধিকার

[সম্পাদনা]

মানবাধিকার বা নাগরিক অধিকার একটি দেশের সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে গঠিত হয় এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যক্তির অধিকার রক্ষা করে।[] বেশিরভাগ বিচারব্যবস্থায়, যেমন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স, একটি মৌলিক অধিকার সনদ সহ একটি সংহত সংবিধান রয়েছে। সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার সনদ, যা ইউরোপের জন্য সংবিধান প্রণয়ন সংক্রান্ত চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল, তবে এটি অনুমোদিত হয়নি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী মৌলিক মানবাধিকার ঘোষণা। এসব সনদ রাষ্ট্র বা আন্তঃসরকারীয় সংস্থা কর্তৃক নাগরিকদের জন্য মৌলিক রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মান নিশ্চিত করার জন্য গৃহীত হয়, যদিও অনেক ক্ষেত্রে সরকারেরও এর অধিকার রয়েছে। কানাডা আরেকটি উদাহরণ যেখানে কানাডার অধিকার ও স্বাধীনতার সনদ সহ একটি সংহত সংবিধান, দেশের বিচারাধীন ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষা করে।[]

কিছু দেশ, যেমন যুক্তরাজ্য, মৌলিক অধিকারের কোন সংহত নথি নেই; এইসব অঞ্চলে সংবিধানটি আইন, বিচারিক সিদ্ধান্ত এবং সংবিধানিক প্রথা দ্বারা গঠিত। একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার উদাহরণ হলো Entick বনাম Carrington[], যা প্রচলিত আইন থেকে উদ্ভূত একটি সংবিধানিক নীতি। জন এনরিক এর বাড়ি শেরিফ ক্যারিংটন কর্তৃক তল্লাশি এবং লুটপাট করা হয়েছিল। ক্যারিংটন যুক্তি দেন যে সরকারের একজন মন্ত্রী, এর্ল অফ হ্যালিফ্যাক্স এর কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি পরোয়ানা যথাযথ ছিল, যদিও এর জন্য কোন আইনগত বিধান বা আদালতের আদেশ ছিল না। আদালত, লর্ড ক্যামডেন এর নেতৃত্বে, বলেছিলেন,

"পুরুষেরা সমাজে প্রবেশ করার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তাদের সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই অধিকারটি পবিত্র এবং অপরিবর্তনীয়, যতক্ষণ না এটি কিছু পাবলিক আইনের মাধ্যমে জনসাধারণের কল্যাণের জন্য প্রত্যাহার বা সীমাবদ্ধ করা হয়। ইংল্যান্ডের আইনে, ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর যে কোন আক্রমণ, তা যতই ক্ষুদ্র হোক, একটি অপরাধ... যদি কোনো বৈধ অজুহাত না পাওয়া যায় বা উপস্থাপন করা না হয়, তবে বইগুলির নীরবতাই আসামির বিরুদ্ধে একটি কর্তৃত্ব, এবং মামলাটি বাদীর পক্ষে রায় দেওয়া উচিত।"[]

কমন ল এবং সিভিল ল বিচারব্যবস্থা, সমান সংবিধানিক ভিত্তি ভাগ করে না। কমন ল' দেশসমূহ, যেমন কমনওয়েলথ দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র, তাদের আইন ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের আইনি প্রথা থেকে উদ্ভূত, এবং এর ফলে তারা বিচারিক নজিরের উপর জোর দেয়।[১০][১১][১২] যেখানে গুরুত্বপূর্ণ আদালতের রায় (বিশেষত উচ্চ আদালতগুলোর রায়) একটি আইনের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে, সিভিল ল' বিচারব্যবস্থাগুলো বিচারিক পুনর্বিবেচনার উপর কম গুরুত্ব দেয় এবং আইন প্রণয়নের ক্ষমতা শুধুমাত্র সংসদ বা আইনসভায় থাকে। এর ফলে, বিচারব্যবস্থার কাঠামো দুই ব্যবস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হয়, যেখানে কমন ল বিচারব্যবস্থা প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সিভিল ল' বিচারব্যবস্থা অনুসন্ধানমূলক। কমন ল বিচারব্যবস্থায় আদালত এবং প্রসিকিউশন আলাদা থাকে,[১৩][১৪][১৫] যা আদালতকে আইনসভা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রতিষ্ঠা করে। ফলস্বরূপ, এই দেশগুলোর মানবাধিকার আইন প্রায়ই আদালতের সংবিধানিক আইন ব্যাখ্যার বিচারিক নজিরের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়, যেখানে সিভিল ল' দেশগুলোতে মানবাধিকার আইন প্রায় সম্পূর্ণভাবে সংহতকৃত আইনের মাধ্যমে গঠিত হয়, সংবিধানিক হোক বা না হোক।

আইন বা বিধান প্রণয়নের পদ্ধতি

[সম্পাদনা]

পার্লামেন্টারি পদ্ধতি সংবিধানের আরেকটি প্রধান কাজ হতে পারে আইন প্রণয়নের জন্য পার্লামেন্টের পদ্ধতি বর্ণনা করা।[১৬] উদাহরণস্বরূপ, সংবিধান সংশোধনের জন্য বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হতে পারে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায়, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে বিলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় পাঠের জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকতে পারে। এছাড়াও, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সরকারের সর্বাধিক মেয়াদের পর একটি নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তাও থাকতে পারে।[১৭]

সংবিধান আইন অধ্যয়ন

[সম্পাদনা]

সংবিধান আইন আইনগত শিক্ষা ও গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ[১৮][১৯][২০], যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সহ বিভিন্ন দেশের আইন শিক্ষার্থীর প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষে সংবিধান আইনের ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক, এবং বিভিন্ন আইন জার্নাল সংবিধান সংক্রান্ত বিষয়ের আলোচনার জন্য নিবেদিত।

আইনের শাসন

[সম্পাদনা]

আইনের শাসন মতবাদ অনুসারে সরকারকে অবশ্যই আইন অনুসারে পরিচালিত হতে হবে। এই ধারণাটি প্রথম ব্রিটিশ আইনতত্ত্ববিদ এ. ভি. ডাইসি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়।

ডাইসি ব্রিটিশ সংবিধানের তিনটি মৌলিক উপাদানকে চিহ্নিত করেছিলেন যা আইনের শাসনের প্রতি ইঙ্গিত দেয়:

সাধারণ আইনের পরম কর্তৃত্ব, যা স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার প্রভাবের বিরোধী;[২১] আইনের দৃষ্টিতে সমতা; সংবিধানটি দেশের সাধারণ আইনের ফলাফল। ডাইসির আইনের শাসনের সূত্র তিনটি ক্লাসিক নীতিতে গঠিত। প্রথমত, সাধারণ আইন স্বেচ্ছাচারী ও বিবেচনামূলক ক্ষমতার উপরে প্রাধান্য পায়। "[ক]োনও মানুষ শাস্তিযোগ্য নয় ... কেবলমাত্র সাধারণ আইনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত আদালতে আইন লঙ্ঘনের জন্য।"[২২]

দ্বিতীয়ত, সকল মানুষ আইনের চোখে সমান। "...কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়...প্রত্যেক মানুষ, তার স্থান বা অবস্থান যাই হোক না কেন, দেশের সাধারণ আইনের অধীন এবং সাধারণ আদালতের অধিকারভুক্ত।" [২৩]

তৃতীয়ত, সংবিধান সমর্থিত সাধারণ ধারণা এবং নীতিগুলি সরাসরি বিচার বিভাগের দেওয়া রায় এবং দৃষ্টান্ত থেকে উদ্ভূত হয়। "আমরা বলতে পারি যে সংবিধানটি আইনের শাসনে পরিপূর্ণ কারণ সংবিধানের সাধারণ নীতিগুলি... আমাদের কাছে বিচারিক সিদ্ধান্তের ফলাফল, যা ব্যক্তিদের অধিকার আদালতে বিশেষ মামলার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে।" [২৪]

ক্ষমতার পৃথকীকরণ

[সম্পাদনা]

ক্ষমতার পৃথকীকরণ প্রায়শই আইনের শাসনের সাথে সমান্তরালভাবে কাজ করা একটি দ্বিতীয় উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়, যা সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার উদ্দেশ্যে। আধুনিক অনেক জাতিরাষ্ট্রে ক্ষমতা তিনটি শাখায় বিভক্ত এবং সংরক্ষিত থাকে: আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগ, যাদেরকে অনুভূমিক ক্ষমতার পৃথকীকরণ বলা হয়। প্রথম দুটি শাখা ঐতিহ্যবাহী ওয়েস্টমিনস্টার পদ্ধতিতে সুসংগঠিত থাকে।[২৫] ক্ষমতার উল্লম্ব পৃথকীকরণ হল বিকেন্দ্রীকরণ।

নির্বাচন আইন

[সম্পাদনা]

নির্বাচন আইন হল সংবিধান আইনের একটি শাখা।[২৬] এটি নির্বাচনের প্রক্রিয়া পরিচালনার নিয়মগুলি অন্তর্ভুক্ত করে। এই নিয়মগুলি জনগণের ইচ্ছাকে কার্যকর গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে সহায়তা করে। নির্বাচন আইন এমন বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করে যেমন কে ভোট দেওয়ার অধিকারী, ভোটার নিবন্ধন, ব্যালট অ্যাক্সেস, নির্বাচনী প্রচারের অর্থায়ন এবং রাজনৈতিক দলের অর্থায়ন, পুনর্বন্টন, আনুপাতিক ভোট ভাগ, ইলেকট্রনিক ভোটিং এবং ভোটিং মেশিন সমূহ, নির্বাচনের অ্যাক্সেসিবিলিটি, নির্বাচন ব্যবস্থা ও সূত্র, ভোট গণনা, নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ, গণভোট এবং এমন বিষয়গুলি যেমন নির্বাচনী জালিয়াতি এবং নির্বাচনী নীরবতা।[২৭]

বাংলাদেশের সাংবিধানিক আইন

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের সংবিধান দেশের শাসনব্যবস্থার মূল কাঠামো নির্ধারণ করে এবং এটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নীতিমালা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে। ১৯৭২ সালে প্রণীত এই সংবিধানটি বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে, তবে এর মূল ভিত্তি অপরিবর্তিত রয়েছে। সংবিধানটি ১১টি ভাগে বিভক্ত, যেখানে রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো এবং নাগরিকদের অধিকার সন্নিবেশিত আছে।[২৮][২৯][৩০]

বাংলাদেশের সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, এবং রাষ্ট্রের শাসন কাঠামো। দেশের সরকারব্যবস্থা একটি সংসদীয় কাঠামোতে পরিচালিত হয়, যেখানে সংসদ আইন প্রণয়ন করে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং এর দায়িত্ব হলো সংবিধানের বিধিবিধান বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।[৩১]

সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে সমানাধিকার, বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বিচার পাওয়ার অধিকার অন্যতম। এ ছাড়াও, সংবিধানে রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জনগণের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হাতে রয়েছে। তবে সংবিধানের কিছু মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন থাকলে সংবিধান সংশোধন করা যায়। এর মধ্যে মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত কিছু বিধান পরিবর্তনযোগ্য হলেও সংবিধানের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য, যেমন গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা, এবং জনগণের অধিকারগুলোর ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশের সংবিধান একটি জীবন্ত দলিল, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হতে পারে, তবে এটি দেশের আইন ও নীতির কেন্দ্রীয় ভিত্তি হিসেবে অপরিবর্তিত থাকে। সংবিধানের যে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধনী কেবল সংসদের অনুমোদনের মাধ্যমে সম্ভব হয় এবং এসব পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।[৩২]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Blick, Andrew; Blackburn, Robert (২০১২), Mapping the Path to Codifying - or not Codifying - the UK's Constitution, Series paper 2. Centre for Political and Constitutional Studies, King's College London, Parliament UK, সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. H Barnett, Constitutional and Administrative Law (5th edn Cavendish 2005) 9, "A written constitution is one contained within a single document or a [finite] series of documents, with or without amendments"
  3. Markwell, Donald (২০১৬)। Constitutional Conventions and the Headship of State: Australian Experience। Connor Court। আইএসবিএন 9781925501155 
  4. Meese III, Edwin. "Law of the Constitution." Tul. L. Rev. 61 (1986): 979.
  5. Dodd, Walter Fairleigh. "The Function of a State Constitution." Political Science Quarterly 30.2 (1915): 201-221.
  6. Perry, Michael J. The Constitution, the courts and human rights. New Haven, CT: Yale University Press, 1982.
  7. Heritage, Canadian (২০১৭-১০-২৩)। "Guide to the Canadian Charter of Rights and Freedoms"www.canada.ca। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২০ 
  8. Entick বনাম Carrington (১৭৬৫) ১৯ হাওয়েল'স স্টেট ট্রায়ালস ১০৩০
  9. "Entick বনাম Carrington"19 Howell's State Trials 1029 (1765)United States: Constitution Society। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-১৩ 
  10. Garner, Bryan A. (২০০১)। A Dictionary of Modern Legal Usageবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন (2nd, revised সংস্করণ)। New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 177আইএসবিএন 978-0-19-507769-8In modern usage, common law is contrasted with a number of other terms. First, in denoting the body of judge-made law based on that developed in England... [P]erhaps most commonly within Anglo-American jurisdictions, common law is contrasted with statutory law ... 
  11. Black's Law Dictionary - Common law (10th সংস্করণ)। ২০১৪। পৃষ্ঠা 334। 1. The body of law derived from judicial decisions, rather than from statutes or constitutions; CASE LAW [contrast to] STATUTORY LAW. 
  12. Macpherson, Heidi S.; Kaufman, Will (২০০৫)। Britain and the Americas: Culture, Politics, and History। Manchester, NH: Ezekial Books, LLC। পৃষ্ঠা 259। আইএসবিএন 9791851094317 
  13. Hale, Sandra Beatriz (জুলাই ২০০৪)। The Discourse of Court Interpreting: Discourse Practices of the Law, the Witness and the Interpreter। John Benjamins। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-1-58811-517-1 
  14. Richards, Edward P.; Katharine C. Rathbun (১৯৯৯-০৮-১৫)। Medical Care Law। Jones & Bartlett। পৃষ্ঠা 6। আইএসবিএন 978-0-8342-1603-7 
  15. Care, Jennifer Corrin (২০০৪-০১-১২)। Civil Procedure and Courts in the South Pacific। Routledge Cavendish। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 978-1-85941-719-5 
  16. James, Simon. "The Constitution, Government and Parliament." Britain Since 1945 (1945): 19-40.
  17. Mulgan, R. G. "Palmer, Parliament and the Constitution." Political Science 32.2 (1980): 171-177.
  18. LLB Program, BRAC University, https://www.bracu.ac.bd/academics/institutes-and-schools/school-law/bachelor-laws-ll-b-hons/llb-program-structure
  19. LLB Program, University of Dhaka, https://www.du.ac.bd/undergrad/LAW
  20. LLB Program, Bangladesh University of Professionals, https://bup.edu.bd/academics/academic_details/462
  21. A. V. Dicey, Introduction to the Study of the Law of the Constitution (Macmillan, 10th ed, 1959) p.202
  22. A. V. Dicey, Introduction to the Study of the Law of the Constitution (10th ed, 1959) p.188
  23. A. V. Dicey, Introduction to the Study of the Law of the Constitution (9th ed, 1945) p.193
  24. A. V. Dicey, Introduction to the Study of the Law of the Constitution (9th ed, 1945) p.195
  25. W B Gwyn, The Meaning of the Separation of Powers: An Analysis of the Doctrine From Its Origin to the Adoption of the United States Constitution, Tulane University (1965).
  26. Benoit, Kenneth. "Electoral laws as political consequences: Explaining the origins and change of electoral institutions." Annu. Rev. Polit. Sci. 10.1 (2007): 363-390.
  27. Duranti, Francesco. "Constitutional Dialogues on Electoral Law." Comp. L. Rev. 6 (2015): 1.
  28. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-957.html
  29. Islam, Mahmudul. Constitutional law of Bangladesh. Vol. 90. Dhaka: Bangladesh Institute of Law and International Affairs, 1995.
  30. মোঃ আব্দুল হালিম, সংবিধান, সাংবিধানিক আইন ও রাজনীতিঃ বাংলাদেশ প্রসঙ্গ
  31. Mahmudul Islam, Constitutional Law of Bangladesh
  32. মোঃ বোরহান উদ্দিন, সাংবিধানিক আইন