সাংবাদিকতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সাংবাদিকতা হল বিভিন্ন ঘটনাবলী, বিষয়, ধারণা, মানুষ, প্রকৃতি, পরিবেশ, সমাজ, রাষ্ট্র সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি ও পরিবেশন, যা উক্ত দিনের প্রধান সংবাদ এবং তা সমাজে প্রভাব বিস্তার করে। এই পেশায় শব্দটি দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কৌশল ও সাহিত্যিক উপায় অবলম্বনকে বোঝায়। মুদ্রিত, টেলিভিশন, বেতার, ইন্টারনেট, এবং পূর্বে ব্যবহৃত নিউজরিল সংবাদ মাধ্যমের অন্তর্গত।

সাংবাদিকতার যথোপযুক্ত নিয়মের ধারণা ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিছু দেশে, সংবাদ মাধ্যমে সরকারি হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং পুরোপুরি স্বাধীন সত্তা নয়।[১] অন্যান্য দেশে, সংবাদ মাধ্যম সরকার থেকে স্বাধীন কিন্তু লাভ-লোকসান সাংবিধানিক নিরাপত্তার আওতায় থাকে। স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক সাংবাদিকতার মাধ্যমে সংগ্রহ করার মুক্ত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে সাহায্য করে।

ধরন[সম্পাদনা]

বিভিন্ন ধরনের পাঠকের জন্য সাংবাদিকতার বিভিন্ন ধরন রয়েছে। একটি একক প্রকাশনায় (যেমন সংবাদপত্র) বিভিন্ন ধরনের সাংবাদিকতা উপাদান থাকে এবং প্রত্যেক উপাদান বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়। সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি বিভাগ ভিন্ন ভিন্ন পাঠকের জন্য সংবাদ সরবরাহ করে থাকে।[২] সাংবাদিকতার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ধরন হলঃ

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমের বিকাশের ফলে সাংবাদিকতাকে একটি প্রক্রিয়া না বলে নির্দিষ্ট সংবাদ পণ্য বলে অভিহিত করার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই বিবেচনায়, সাংবাদিকতা হল এক ধরনের অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া যেখানে একাধিক লেখক ও সাংবাদিক এবং সামাজিকভাবে মধ্যস্থতাকারী জনগণ জড়িত থাকে।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইয়োহান কারোলাসের ১৬০৫ সালে স্ট্রাসবুর্গ থেকে প্রকাশিত রিলেশন অলার ফুর্নেমেন উন্ড গেডেনকভুর্ডিগেন হিস্টরিয়েনকে প্রথম সংবাদপত্র বলে অভিহিত করা হয়।[৬] প্রথম সফল ইংরেজি দৈনিক হল ১৭০২ থেকে ১৭৩৫ সালে প্রকাশিত ডেইলি ক্যুরান্ট। ১৯৫০ এর দশকে দিয়ারিও কারিওকা সংবাদপত্রের সংস্কার রূপকে ব্রাজিলে আধুনিক সাংবাদিকতার জন্ম বলে চিহ্নিত করা হয়।[৭]

ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯২০ এর দশকে যখন আধুনিক সাংবাদিকতা রূপ ধারণ করতে শুরু করে লেখক ওয়াল্টার লিপম্যান এবং মার্কিন দার্শনিক জন ডিউয়ি গণতন্ত্রে সাংবাদিকতার ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন। তাদের এই ভিন্ন ভিন্ন দর্শন এখনো সমাজ ও রাষ্ট্রে সাংবাদিকতার ভূমিকা বিষয়ে যুক্তি প্রদর্শনে ব্যবহৃত হয়।

পেশাদারী ও নৈতিক মানদণ্ড[সম্পাদনা]

বিদ্যমান নৈতিক মানদণ্ডে ভিন্নতা রয়েছে, বেশিরভাগই রীতিতে সত্যতা, সূক্ষ্মতা, বিষয়বস্তুর উদ্দেশ্য, পক্ষপাতহীনতা, এবং কৈফিয়ত – এই বিষয়গুলো সাধারণ উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই উপাদানসমূহ সংবাদ করার মত তথ্য সংগ্রহ করতে এবং জনগণের কাছে প্রচার করতে ব্যবহৃত হয়।[৮][৯]

কিছু সাংবাদকিতার নৈতিকতার বিধিতে, বিশেষ করে ইউরোপীয় বিধিতে, সংবাদে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বিষয়ক, এবং শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা নিয়ে বৈষম্যমূলক সূত্র বিষয়েরও অন্তর্ভুক্তি রয়েছে। আবার কিছু ইউরোপীয় নৈতিকতার বিধিতে, সকল সংবাদপত্র ইনডিপেন্ডেন্ট প্রেস স্ট্যান্ডার্টস অর্গানাইজেশনের বিধি মেনে চলতে বাধ্য এবং তা যুক্তরাজ্যেও প্রচলিত। এই বিধিতে জনগণের গোপনীয়তাকে সম্মান দেওয়া এবং নিখুঁতভাবে কাজ নিশ্চিত করা অন্তর্ভুক্ত।[১০][১১][১২][১৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "10 Most Censored Countries"Committee to Protect Journalists। ২ মে ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৭ 
  2. Gerald Stone, Kaye O’Donnell, K., & Stephen A. Banning (Winter/Spring 1997). Public perceptions of a newspaper’s watchdog role. Newspaper Research Journal, 18(1-2), 86-102.
  3. Corcoran, Mark (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Drone journalism takes off"Australian Broadcasting Corporation। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৭ 
  4. "Gonzo Journalism"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৭ 
  5. Robinson, Sue (2011). ""Journalism as Process": The Organizational Implications of Participatory Online News.". Journalism & Communication Monographs. 13 (3): 137.
  6. "First Journalism School". Columbia.: University of Missouti Press. p. 1.
  7. de Albuquerque, Afonso; Gagliardi, Juliana (2011). "THE COPY DESK AND THE DILEMMAS OF THE INSTITUTIONALIZATION OF "MODERN JOURNALISM" IN BRAZIL". Journalism Studies. 12 (1). doi:10.1080/1461670X.2010.511956.
  8. "Fourth Estate - Core Journalism Principles, Standards and Practices". Fourth Estate Public Benefit Corporation.
  9. "(Society of Professional Journalists) – Code of Ethics". SPJ.
  10. UK – Press Complaints Commission – Codes of Practice (see item 12, "Discrimination").
  11. "Italy – FNSI's La Carta dei Doveri (The Chart of Duties)". (in Italian). (section "Principi")
  12. Spain – FAPE's Código Deontológico (Deontological Code) (in Spanish) (see Principios Generales, item 7, "a")
  13. "Brazil – FENAJ's Code of Ethics" (PDF). (in Portuguese) (see Article 6, item XIV).

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]