সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট
সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট-এর লোগো
সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট-এর লোগো
অবস্থান
সিলেট জেলা

বাংলাদেশ
তথ্য
প্রতিষ্ঠাকাল১৯০৩; ১২১ বছর আগে (1903)
প্রতিষ্ঠাতাহেমন্তকুমারী চৌধুরানী
বিদ্যালয় বোর্ডসিলেট শিক্ষা বোর্ড
লিঙ্গবালিকা
ভাষাবাংলা
ওয়েবসাইটwww.gaghscsyl.edu.bd/edu/index/bn

সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ জেলার প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারে কয়েক একর জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষের পুরোনো সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় "সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ"। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে হেমন্তকুমারী চৌধুরানী এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। সূচনালগ্ন থেকে খেলাধুলা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সাফল্য অর্জন করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে বিদ্যালয় বার্ষিকী প্রকাশ করা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিদ্যালয়টি সিলেট বিভাগের নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে এক বিরাট ভূমিকা রাখছে। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে হেমন্তকুমারী চৌধুরানী এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।[১] তিনি এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। বিদ্যালয়টি ২০০০ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছিল।

প্রতিষ্ঠাতা[সম্পাদনা]

হেমন্তকুমারী চৌধুরানী

হেমন্তকুমারী চৌধুরানী[২] জন্মেছিলেন লাহৌরে ১৮৬৮ সালে, মৃত্যু ১৯৫০ সালে। হেমন্তকালে জন্ম, বাবা নবীনচন্দ্র রায় তাই মেয়ের নাম রেখেছিলেন হেমন্তকুমারী। নবীনচন্দ্র তখন লাহৌরের ওরিয়েন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ, তাঁর সম্পাদনায় ব্রাহ্মসমাজের হিন্দি ও উর্দু মাসিক পত্রিকা `জ্ঞান প্রদায়িনী'। হিন্দি ভাষার ব্যাকরণ, হিন্দিতে প্রযুক্তিবিজ্ঞান ও স্ত্রীশিক্ষা বিষয়ক কিছু বই ও লিখে ছিলেন তিনি। হেমন্তকুমারী এ দিক থেকে আক্ষরিক অর্থেই `বাপ কী' বেটি। হেমন্তকুমারী ১৮৮৫ সালে লাহৌরে তৈরি করেছেন `বনিতা-বুদ্ধি-বিকাশিনী সভা। ওই বছর মুম্বইয়ে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস তৈরি হয়েছিল। ১৭ বছরের এক বঙ্গতনয়া যে লাহৌরে নারীমুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। সুগৃহিনী সন্দেশ ছড়ানো এই নারী আবার ১৯০৩ সাল থেকে টানা তিন বছর বাংলা মাসিক `অন্তঃপুর'-এর সম্পাদক। ভারতের দু'টি মুখ্য ভাষার সাহিত্যে নারীর এমন উজ্জ্বল উপস্থিতি হেমন্তকুমারীর আগে কখনোও ঘটেনি। সাহিত্যচর্চাই তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়। তাঁর চেষ্টাতেই ১৯০৩ সালে তৈরি হয়েছিল শ্রীহট্টের প্রথম মহাবিদ্যালয়, (সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ) তিনিই সেখানে প্রধান শিক্ষিকা। শ্রীহট্ট ও বাংলার মানচিত্র ছাড়িয়ে তাঁর শিক্ষাবিস্তারের প্রয়াস ক্রমশ উজ্জ্বল হয়েছে ভারতের অন্যান্য জায়গাতেও। পাটিয়ালায় টানা কুড়ি বছর ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ, অতঃপর ১৯২৮ সালে দেহরাদূন পৌরসভার কমিশনার। তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একটি কক্ষের নামকরণ করা হয়েছে "হেমন্তকুমারী চারুকক্ষ"।

অগ্রগামী ছাত্রী কনক পুরকায়স্থ ঊষা[সম্পাদনা]

কনক পুরকায়স্থ ঊষা

কনক পুরকায়স্থ ঊষা,[৩] শুধু একটি অগ্রগামী নাম নয়, শিক্ষার আলোকবর্তিকাস্বরূপ। তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাধর। কনক পুরকায়স্থ ঊষা ছিলেন সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট-এর প্রাক্তন ছাত্রী। তখন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ছিল-সিলেট গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুল। কনক পুরকায়স্থ ঊষা এই প্রতিষ্ঠান থেকেই ১৯৪০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভারতবর্ষকে তাক লাগিয়ে দেন। তৎকালীন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার নিয়ন্ত্রণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে ছিল। কনক দুই বাংলার প্রায় এক লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এমন অভাবনীয় ফলাফল কোনো ছাত্রী এর আগে করতে পারেননি। তিনি আমাদের অহংকার।

ছবি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "আমাদের সম্পর্কে"www.gaghscsyl.edu.bd/edu/index/bn। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০২১ 
  2. Ltd, IT Lab Solutions। "Home - সরকারী অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ"www.gaghscsyl.edu.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৩ 
  3. দাশ, সুমনকুমার। "কনক পুকুরের গল্প"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৩