সইদা ফৈজ
মুহতরামে সইদা ফৈজ সাহিবা ( হিন্দি: स्व॰ सईदा फैज , উর্দু: محترمہ سعیدہ فیض صاحب; ৯ই জুন ১৯২৫ - ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১০) উত্তর প্রদেশের গাজীপুরের একজন শিক্ষাবিদ এবং সমাজ সংস্কারক ছিলেন। তিনি গাজীপুরের মহিলাদের উন্নয়নে, বিশেষ করে শিক্ষাগত সংস্কারের কাজে, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]সইদা ফৈজ তাঁর অন্য পাঁচ বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ সুলাইমান আদমি এবং মা হলেন মরিয়ম আদমি। তাঁরা উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাবা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন এবং তাঁর দেশপ্রেমের জন্য স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতে জনপ্রিয় ছিলেন। সইদা ফৈজ এমন একটি ভারতীয় সমাজে বড় হয়ে ওঠেন যেখানে তখনও নারী শিক্ষা এবং স্বাধীনতার বিষয়ে ব্যাপক বৈষম্য ছিল। কিন্তু নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে এই সামাজিক কুসংস্কারের মধ্যেও, তাঁর বাবা-মা তাঁকে সর্বোত্তম শিক্ষা প্রদানের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]সইদা ফৈজ উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন এবং এমএ, বিটি ডিগ্রি অর্জন করেন।[২][৩]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]শিক্ষাজীবন শেষ করার পর, তিনি উত্তরপ্রদেশের বস্তী অঞ্চলের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে, তিনি উত্তর প্রদেশের অনেক সরকারি বালিকা আন্তঃকলেজে একজন প্রভাষক এবং তার পরে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর, তিনি ১৯৮৫ সালে গাজীপুরে শাহ ফৈজ পাবলিক স্কুল শুরু করেন।[৪]
১৯৬২ সালে, সইদা ফৈজ শাহ আবুল ফৈজের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর, তিনি গাজীপুরের সরকারি বালিকা আন্তঃ কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। শাহ আবুল ফৈজ গাজীপুরের বাসিন্দা। শহরে তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন এবং ১৯৭৪ সালে তিনি এমএলএ পদ অর্জন করেন। শহরে একটি স্কুল খোলার স্বপ্ন ছিল তাঁর, কিন্তু ১৯৮৪ সালে অসুস্থতার কারণে তিনি মারা যান। সইদা তাঁর স্বামীর ইচ্ছা পূরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ১৯৮৫ সালে গাজীপুরের মিয়ানপুরায় তাঁর নিজের বাড়ির কাছে এল-কেজি থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত একটি ছোট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তাঁর স্বামীর নামে স্কুলটির নামকরণ করেন শাহ ফৈজ মেমোরিয়াল স্কুল এবং পরে নতুন দিল্লির কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এর অধিভুক্তি লাভ করেন। পরবর্তীতে অধিভুক্তির পর স্কুলটির নামকরণ করা হয় শাহ ফৈজ পাবলিক স্কুল।[৫]
সম্মাননা এবং পুরস্কার
[সম্পাদনা]
গাজীপুরে সমাজের উন্নয়ন এবং শিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য সইদা ফৈজ নতুন দিল্লির জাতীয় সংহতি পরিষদ-এর থেকে ২০০৯ সালে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ পুরস্কার অর্জন করেন।
জীবনী
[সম্পাদনা]একাধিক লেখক সইদা ফৈজের সমস্ত কাজ এবং জীবন সম্বন্ধে লিখেছেন, যেখানে তাঁর কাজ, অনুপ্রেরণা এবং তাঁর কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাগুলি লেখকদের নিজস্ব ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি সংকলিত করে, ২০১০ সালে সইদা ফৈজ - অ্যান ইন্সপিরেশন নামে একটি বই প্রকাশিত হয়।[৬] বইটি গাজীপুরের শিক্ষা উন্নয়ন ফোরাম দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল। বইটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন নাদিম আদমি। বইটির প্রধান সম্পাদক ছিলেন কে পি তিওয়ারি এবং সম্পাদক ওবায়দুর রহমান সিদ্দিকী। ছয়জন সহযোগী সম্পাদক ছিলেন: আতিয়া আদমি, মীনা আদমি, উমা শর্মা, ওয়াকিম এফ রহমান এবং মোহাম্মদ সালেন।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- গাজীপুর
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "History | Mother Mariam Global School"। mmgs.edu.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৩।
- ↑ "The Twentieth Century Muslim Women in India" (পিডিএফ)। Covanetwork। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২৫।
- ↑ "Partition's First Generation: Space, Place, and Identity in Muslim South Asia 9781350142664, 9781350142695, 9781350142688"। dokumen.pub (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-২৮।
- ↑ "History | Mother Mariam Global School"। mmgs.edu.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-২৮।
- ↑ "About Shah Faiz Public School"। www.shahfaizschool.edu.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-২৮।
- ↑ "অনুবাদ 'लेखक-कार्य' – অভিধান ইংরেজি-হিন্দি | Glosbe"। glosbe.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-২৮।
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় শিক্ষাবিদ
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় নারী শিক্ষাবিদ
- উত্তরপ্রদেশের পণ্ডিত
- নারী আত্মজীবনীকার
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় নারী বিজ্ঞানী
- ভারতীয় অ-কল্পকাহিনী লেখিকা
- ভারতীয় আত্মজীবনীকার
- উত্তরপ্রদেশের লেখক
- উত্তরপ্রদেশের লেখিকা
- ভারতীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক
- আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় মুসলিম
- ২০১০-এ মৃত্যু
- ১৯২৫-এ জন্ম