বিষয়বস্তুতে চলুন

সংখ্যালঘু গোষ্ঠী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আক্ষরিক অর্থে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বলতে কোনো সমাজের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের কম সংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত কোনো গোষ্ঠীকে বোঝায়। অন্যদিকে, সমাজের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি সংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত গোষ্ঠীকে আক্ষরিক অর্থে সংখ্যাগুরু গোষ্ঠী বলে। সাধারণত কোনো সমাজে একটি সংখ্যাগুরু গোষ্ঠীর তুলনায় একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ক্ষমতারহিত হয়, আর এর জন্য "সংখ্যালঘু" শব্দটি অর্থবহ হয়ে দাঁড়ায়।

তবে অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান ও রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় জনসংখ্যায় সংখ্যালঘিষ্ঠ কোনো গোষ্ঠী কর্তৃত্বময় ক্ষমতা লাভ করলে সে গোষ্ঠী আবশ্যিকরূপে "সংখ্যালঘু" তকমার অধিকারী নয়। বরং পণ্ডিতমহলে ক্ষমতায় আধিপত্য বোঝানোর জন্য "সংখ্যালঘু" আর "সংখ্যাগুরু" শব্দদ্বয় ব্যবহার করা হয়। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার আপার্টহাইট যুগে কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের তুলনায় শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়রা প্রায় সমস্ত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী ছিল, আর সেইজন্য দক্ষিণ আফ্রিকার জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানরা "সংখ্যালঘু" বলেই পরিচিত। তাই পণ্ডিতগণ "সংখ্যালঘু গোষ্ঠী" বলতে কোনো কর্তৃত্বময় সমাজগোষ্ঠীর তুলনায় প্রতিকূলতা অনুভব করা জনগোষ্ঠীকে বোঝায়।[]

সাধারণত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও প্রথাগত পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে কোনো ব্যক্তি কোনো সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্য হয়, যেমন জাতি (সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী), নরবর্ণ (সংখ্যালঘু বর্ণগোষ্ঠী), ধর্ম (সংখ্যালঘু ধর্মসম্প্রদায়), যৌনতা (সংখ্যালঘু যৌনগোষ্ঠী) কিংবা প্রতিবন্ধিতা[] এছাড়া কোনো ব্যক্তি একাধিক সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্য হতে পারে (যেমন একইসঙ্গে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু ধর্মসম্প্রদায়ের সদস্য)।[] শুধু তাই নয়, কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য কোনো ব্যক্তি কোনো সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্য, আবার কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য সে কোনো সংখ্যাগুরু গোষ্ঠীর সদস্য হতে পারে।[]

সংখ্যালঘু গোষ্ঠী সামাজিক জীবনের বিভিন্ন দিক থেকে বৈষম্যের শিকার হয়, যেমন বাসস্থান, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ইত্যাদি।[][] ব্যক্তিস্তরে বৈষম্য করা হলেও অনেকসময় গঠনগত অসাম্যের জন্যও কোনো সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বৈষম্যের শিকার হতে পারে, আর সেখানে অধিকার ও সুযোগ সবার জন্য সমানভাবে অভিগম্য নয়।[] সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থকরা অনেকসময় বৈষম্যের হাত থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করে, আর সংখ্যাগুরুদের ন্যায় তাদের সমান সামাজিক মর্যাদা ও আইনি সুরক্ষা প্রদান করে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Healey, Joseph F. (২০১৮-০৩-০২)। Race, ethnicity, gender, & class : the sociology of group conflict and change। Stepnick, Andi; O'Brien, Eileen, 1972– (Eighth সংস্করণ)। Thousand Oaks, California। আইএসবিএন 9781506346946ওসিএলসি 1006532841 
  2. Ritzer, George (২০১৪-০১-১৫)। Essentials of sociology। Los Angeles। আইএসবিএন 9781483340173ওসিএলসি 871004576 
  3. Hughes, Melanie (২০১১)। "Intersectionality, Quotas, and Minority Women's Political Representation Worldwide"। American Political Science Review3 (105): 604–620। এসটুসিআইডি 2592368ডিওআই:10.1017/S0003055411000293 
  4. Laurie, Timothy; Khan, Rimi (২০১৭), "The Concept of Minority for the Study of Culture", Continuum: Journal of Media & Cultural Studies, 31 (1): 3, এসটুসিআইডি 152009904, ডিওআই:10.1080/10304312.2016.1264110 
  5. Becker, Gary S. (১৯৭১)। The economics of discrimination (2nd সংস্করণ)। Chicago: University of Chicago Press। আইএসবিএন 9780226041049ওসিএলসি 658199810 
  6. Williams, David R. (১৯৯৯)। "Race, Socioeconomic Status, and Health The Added Effects of Racism and Discrimination" (পিডিএফ)Annals of the New York Academy of Sciences (ইংরেজি ভাষায়)। 896 (1): 173–188। hdl:2027.42/71908অবাধে প্রবেশযোগ্যআইএসএসএন 0077-8923এসটুসিআইডি 26852165ডিওআই:10.1111/j.1749-6632.1999.tb08114.xপিএমআইডি 10681897বিবকোড:1999NYASA.896..173W। ২০১২-০১-২৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৩ 
  7. Verloo, Mieke (২০০৬)। "Multiple Inequalities, Intersectionality and the European Union"European Journal of Women's Studies (ইংরেজি ভাষায়)। 13 (3): 211–228। hdl:2066/46605অবাধে প্রবেশযোগ্যআইএসএসএন 1350-5068এসটুসিআইডি 21752012ডিওআই:10.1177/1350506806065753। ২০১৯-০২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৪ 
  8. Skrentny, John David (২০০২)। The minority rights revolution। Cambridge, Mass.: Belknap Press of Harvard University Press। আইএসবিএন 9780674043732ওসিএলসি 431342257 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]