শেখর বসু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শেখর বসু
শেখর বসু
জন্ম
শেখর বসু

(১৯৫২-০৯-২০)২০ সেপ্টেম্বর ১৯৫২
মৃত্যু২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০(2020-09-24) (বয়স ৬৭)
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারত
মাতৃশিক্ষায়তনবালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়
মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণআইএনএস-অরিহন্ত (পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ)
পুরস্কারপদ্মশ্রী (২০১৪)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রআণবিক পদার্থ বিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহভাভা পরমাণু অনুসন্ধান কেন্দ্র
পরমাণু শক্তি কমিশন

শেখর বসু (ইংরেজি: Sekhar Basu) (২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৫২ - ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০) ভারতের একজন প্রসিদ্ধ পরমাণু বিজ্ঞানী। ভারতের ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন অধিকর্তা, পরমাণু শক্তি মন্ত্রকের সচিব ও দেশের পারমাণবিক শক্তি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান।[১] পরমাণু শক্তিতে দেশকে স্বনির্ভর করার অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি।[২]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

শেখর বসুর জন্ম ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে সেপ্টেম্বর ভারতের বিহার রাজ্যের মজঃফরপুরে। বিদ্যালয়ের পড়াশোনা কলকাতার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে। বিদ্যালয়ের পাঠ শেষে চলে যান মুম্বইতে। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক হন মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ বীরমাতা জিজাবাই টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট হতে। [৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

এর পরে তিনি যোগ দেন ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষণ স্কুলে। এক বৎসর পরে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে রিঅ্যাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে গবেষণায় যুক্ত হন। দেশের প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন 'আইএনএস অরিহন্ত'-এর মূল স্থপতি তিনি। পরমাণু গবেষক হিসেবে তিনিই ওই সাবমেরিনের জটিল রিঅ্যাক্টরগুলি তৈরি করেছিলেন।এছাড়া শুধু গবেষণার কাজ নয়, তার মেধা ও পরিশ্রম তাঁকে পরবর্তীকালে ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের অধিকর্তার পদে অধিষ্ঠিত করেছিল। কিন্তু তার দায়িত্ব ছিল আরও অনেক বড়। তাই পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব পাওয়ার পরই ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের অধিকর্তার পদ ছেড়ে দেন তিনি। এখানেই শেষ হয় না তার কর্মজীবন। জীবনের শেষ পর্যন্ত পরমাণু শক্তি নিয়ে গবেষণার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন শেখর বাবু। দেশের পরমাণু শক্তিমন্ত্রকের সচিব পদও অলংকৃত করেছিলেন তিনি। এই পরমাণু শক্তি মন্ত্রকে থাকাকালীনই তিনি 'সার্ন'-এর প্রকল্পে ভারতের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় এবং মহাকর্ষীয় তরঙ্গ অনুসন্ধান সংক্রান্ত প্রকল্প 'লাইগো'-তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরে দেশে পরমাণু বর্জ্য নিষ্কাষণের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন ও বিভিন্ন পরমাণু চুল্লি নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন তিনি।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

কর্মক্ষেত্রে অসামান্য অবদান ও সাফল্যে তিনি ২০০২ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান নিউক্লিয়ার সোসাইটি পুরস্কার এবং ২০০৬ ও ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে পর পর আণবিক শক্তি কমিশনের বিভাগীয় পুরস্কার লাভ করেন। আর জীবনব্যাপী গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ খিস্টাব্দে ভারত সরকারের বেসামরিক সম্মান 'পদ্মশ্রী' লাভ করেন। এছাড়া তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল একাডেমির ফেলো ছিলেন। কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি.লিট প্রদান করে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে। [৩]

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

কিডনির সমস্যায় পরমাণু বিজ্ঞানী শেখর বসু ভুগছিলেন এবং কিডনির সমস্যায় ভর্তিও হয়েছিলেন কলকাতার মেডিকা হাসপাতালে। পরে তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং শেষে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে তিনি ৬৮ বৎসর বয়সে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে পরলোক গমন করেন। [৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী শেখর বসু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৫ 
  2. "করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী শেখর বসু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬ 
  3. Press Information Bureau (২৩ অক্টোবর ২০১৫)। "Sekhar Basu Writeup - Press Information Bureau" (পিডিএফ)। Press Information Bureau। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬ 
  4. "করোনা আক্রান্ত হয়ে পরমাণু বিজ্ঞানী শেখর বসুর মৃত্যু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৫