শিবি
শিবি | |
---|---|
![]() ১৯১৬ সালের দিকে ঘুঘু এবং ঘুড়ির সাথে শিবির একটি চিত্র। | |
গ্রন্থসমূহ | মহাভারত |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
মাতাপিতা |
|
সন্তান | কাপোটারোমা |
রাজবংশ | চন্দ্রবংশী |
শিবি (সংস্কৃত: शिबि) হলেন একজন রাজা, যাকে হিন্দু ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত করা হয়েছে। তিনি চন্দ্রবংশী রাজা উষীনার পুত্র হিসেবে পরিচিত। তার এক কাহিনীতে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি তাঁর মাংস উৎসর্গ করে অগ্নিকে (ঘুঘুতে রূপান্তরিত) ইন্দ্রের (চিলে রূপান্তরিত) হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন। শিবি একজন মহান দয়ালু রাজা হিসেবে পরিচিত।[১]
কিংবদন্তি
[সম্পাদনা]সুহোত্রার সাথে সাক্ষাৎ
[সম্পাদনা]মহাভারতে বলা হয়েছে যে কুরু বংশের একজন রাজা সুহোত্র একবার মহর্ষিদের দর্শন করতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তিনি শিবির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুই রাজা তাঁদের রথে বসে একে অপরকে অভিবাদন জানান, তবে দুজনেই নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে অন্যজনকে পথ দিতে অস্বীকৃতি জানান। ঋষি নারদ তখন সেখানে উপস্থিত হন এবং এই অচলাবস্থার কথা শুনে সততা ও বিনয়ের সূক্ষ্মতা সম্পর্কে তাঁদের শিক্ষা দেন। তিনি ঘোষণা করেন যে শিবি গুণের দিক থেকে সুহোত্রের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হলেও, উভয়েই মহান হৃদয়ের অধিকারী এবং অবশ্যই একজনকে অন্যজনের জন্য পথ ছাড়তে হবে। এরপর সুহোত্র শিবির কৃতিত্বের প্রশংসা করেন এবং স্বেচ্ছায় তাঁকে পথ ছেড়ে দেন।[২]
মাংস উৎসর্গ
[সম্পাদনা]একবার দেবতারা শিবির খ্যাতি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। অগ্নি দেব একটি কবুতরের রূপ ধারণ করে রাজা শিবির আশ্রয় নেন এবং তাঁকে ধাওয়া করা একটি চিল থেকে রক্ষা চাইতে থাকেন। রাজপুরোহিত জানান যে রাজধর্ম অনুসারে শিবির কর্তব্য হল কবুতরের জীবন রক্ষা করা। তখন কবুতরটি নিজেই জানায় যে সে আসলে একজন মহর্ষি। এদিকে, ইন্দ্র চিলের রূপ ধারণ করে সেখানে উপস্থিত হন এবং শিবিকে বলেন যে তিনি যেন সেই কবুতরটি তাঁকে ফিরিয়ে দেন, কারণ তিনি সেটির পিছনে ধাওয়া করছিলেন। কিন্তু শিবি সেই কবুতরকে শত্রুর হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন এবং পরিবর্তে অন্য কোনো মাংস প্রদান করতে ইচ্ছুক হন। চিলরূপী ইন্দ্র শিবিকে জানান যে অগ্নিদেবকে (যিনি কবুতরের রূপে ছিলেন) রক্ষা করতে হলে তাঁকে নিজের ডান উরু থেকে সমপরিমাণ মাংস কেটে দিতে হবে। রাজা শিবি তাঁর মাংস কাটতে শুরু করেন এবং কবুতরের ওজনের সমান করতে পাল্লায় রাখেন, কিন্তু দেখা যায় যে কবুতরটি তাঁর কাটা মাংসের চেয়েও বেশি ওজনের। শেষ পর্যন্ত, রাজা নিজেই পাল্লায় বসেন। এরপর, দেবতারা তাঁদের আসল রূপ ধারণ করেন এবং শিবির প্রশংসা করেন। তাঁরা আশীর্বাদ দেন যে তিনি এক পুত্রসন্তানের জনক হবেন, যার নাম হবে কপোতারোম।[৩]
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
[সম্পাদনা]পাকিস্তানের সেহওয়ান পূর্বে শিবিস্তান নামে পরিচিত ছিল, শিবির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। রাজা দাহির এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ৮ম শতাব্দীতে মোহাম্মদ বিন কাসিম এটি দখল করেছিলেন । সেহওয়ান তার মাজার সেহওয়ান শরীফের জন্য জনপ্রিয় ।
স্থলপুরাণ অনুসারে পুণ্ডরীকক্ষণ পেরুমল মন্দিরটি প্রথমে রাজা কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল বলে জানা যায় ।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Elements of poetry in the Mahābhārata By Rāma Karaṇa Śarmā, page 99
- ↑ Valmiki; Vyasa (২০১৮-০৫-১৯)। Delphi Collected Sanskrit Epics (Illustrated) (ইংরেজি ভাষায়)। Delphi Classics। পৃষ্ঠা 3449। আইএসবিএন 978-1-78656-128-2।
- ↑ www.wisdomlib.org (২০১৯-০১-২৮)। "Story of Śibi"। www.wisdomlib.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-৩০।