শিবা রাজকুমার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিবা রাজকুমার
২০১১ সালে শিবা রাজকুমার
জন্ম
নাগারাজু শিবা পুত্তা স্বামী

(1961-07-12) ১২ জুলাই ১৯৬১ (বয়স ৬২)[১]
অন্যান্য নামশিবান্ন
মাতৃশিক্ষায়তনদ্য নিউ কলেজ, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়
এম.জি.আর. গভর্নমেন্ট ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট
পেশাচলচ্চিত্র অভিনেতা
প্রযোজক
নৈপথ্যে গায়ক
টেলিভিশন উপস্থাপক
কর্মজীবন১৯৬৬–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীগীতা (বি. ১৯৮৬)
সন্তান
পিতা-মাতারাজকুমার (বাবা)
পার্বতাম্মা (মা)
আত্মীয়রাজকুমার পরিবার দেখুন

নাগারাজু শিবা পুত্তা স্বামী (জন্ম: ১২ জুলাই ১৯৬১), মঞ্চ নাম শিবা রাজকুমার হিসাবেই অধিক পরিচিত, হচ্ছেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, নৈপথ্যে গায়কটেলিভিশন উপস্থাপক, কন্নড় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[২] তিনি অভিনেতা রাজকুমারের বড় ছেলে। ৩ দশকের কর্মজীবনে, শিবা ১২৫টিরও বেশি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।[২]

বিএসসি (রসায়ন) স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করার পর, শিবা সিঙ্গীতামা শ্রীনিবাস রাওয়ের চলচ্চিত্র আনান্দ (১৯৮৬)-এর চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে, যা তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য সিনেমা এক্সপ্রেস পুরস্কার এনে দেয়। তার প্রথম তিন চলচ্চিত্র, যথা: আনান্দ, রাধা সপ্তম (১৯৮৬) ও মানা মেচ্চিদা হুদুগি (১৯৮৭), যেগুলো বক্স অফিসে অত্যন্ত সফল হয়, এবং তাকে তার ভক্ত ও মিডিয়া কর্তৃক হ্যাট-ট্রিক হিরো খেতাব এনে দেয়।[৩][৪]

শিবা চলচ্চিত্র শিল্পে ৩০ বছরেরও উপরে কাজ করেন, উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল আনান্দ, রাধা সপ্তমী (১৯৮৬), ওম (১৯৯৫), জানুমাধা যদি, নাম্মুরা মান্দারা হুভে, এ.কে. ৪৭, জোগি বাজারাঙ্গী, কিলিং বীরাপ্পনশিবলিঙ্গ, যা কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যন্য মাইলফলক অর্জন করে, এবং বক্স অফিসে অনন্য রেকর্ড গড়ে। তাকে ২০১৪ সালে বিজয়নগর শ্রী কৃষ্ণদেবরাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।[৫][৬] ২০১০ সালে, তিনি টকশো নানিরুভুদে নিমাগাগি'র মাধ্যমে তার টেলিভিশন অভিষেক করেন, যা জি কন্নড় টিভি সম্প্রচার করে।[৭] শিবা হেট ইউ রোমিও নামে একটি ওয়েব সিরিজের সহ-প্রযোজক হিসাবেও কাজ করছেন, যার বর্তমানে ভিয়েতনামে চিত্রগ্রহণের কাজ চলছে।[৮]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

শিবা রাজকুমার অভিনেতা রাজকুমার ও চলচ্চিত্র প্রযোজক পার্বতাম্মা ঘরে মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই, তামিলনাড়ু) জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শিবা সবার বড়, তার দুই ভাই, রাগবেন্দ্র রাজকুমার, একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও সাবেক অভিনেতা এবং অন্যজন পুনীত রাজকুমার, কন্নড় চলচ্চিত্রের একজন অভিনেতা। শিবা তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা টি. নগর, চেন্নাই-এ সম্পন্ন করেন, পরে তিনি নিউ কলেজ, চেন্নাই-এ পড়াশোনা করেন।[৯]

পরিচালক কৈলাশ বলচন্দ্রের উপর জিদ করে, শিবা ১৯৮৩ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করার পর, একটি অভিনয় শিখন বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তার কলেজ দিনগুলোতে চেন্নাইয়ের ভেম্পেত্তি চিন্নি সত্যাম থেকে কুচিপুড়ি নৃত্য প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর, তিনি আনন্দ (১৯৮৬) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পে অভিষেক করেন।[৪]

শিবা ১৯৮৬ সালে কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এস. বাঙ্গারাপ্পর মেয়ে গীতাকে বিয়ে করেন। এই দম্পত্তির নিবেদিতা ও নিরুপমা নামে দুই কন্যা সন্তান আছে।[১০]

২০১৪ সালে বিজয়নগর শ্রী কৃষ্ণদেবরায় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।[১১]

তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)-এ তাদের ১১তম মৌসুমের প্রচার দূত। তিনি দ্বিতীয় কন্নড় অভিনেতা হিসাবে মারুতি ৮০০ কিনেছিলেন।[১২]

অভিনয় কর্মজীবন[সম্পাদনা]

শিবা ১৯৮৬ সালে আনন্দ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় কর্মজীবন শুরু করেন।[৪] ৩০ বছরেরও উপরে কর্মজীবনে, তিনি বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার কর্মজীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে জানুমাদা যদি, জুগি, আনন্দ, রাধা সপ্তমী, নাম্মুরা মানদারা হুভে, ওমচিগুরিদা কানাসু[৪] তিনি সুগ্রীবা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যেখানে টানা ১৮ ঘণ্টা শুটিং ছিল। তার উপেন্দ্র পরিচালিত ওম চলচ্চিত্রটি একটি গ্যাংস্টার চলচ্চিত্র, যা কন্নড় চলচ্চিত্র ও ভারতের অন্যান্য চলচ্চিত্র শিল্পে প্রবণতা সৃষ্টি করে।[১৩]

তার চেলুভেয়ে নিন্নে নোদালু চলচ্চিত্রটি পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যে চিত্রায়িত হয়।[১৪] তার ১০০তম চলচ্চিত্র জোগায়্যা চলচ্চিত্রটি, তার অভিনীত আরেক ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র জুগি-এর সিকুয়েল।[১৫]

তার অভিনীত বাজরাঙ্গী (২০১৩) বক্স অফিসে সফল হয়, এবং প্রেক্ষাগৃহে ১০০ দিনের উপরের চলে। চলচ্চিত্রটি কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশতামিলনাড়ুতে মুক্তি দেওয়া হয়। এটি শুধু কর্ণাটক রাজ্যে ২১২টি থিয়েটারে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি স্পোর্টস ড্রামা চলচ্চিত্র আর্যন-এ কোচের ভূমিকায় অভিনয় করেন, এটি তার ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

শিবা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও চারটি রাজ্য পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি অনেক সিনে-এক্সপ্রেস, সিরিগন্নড়া ও ইটিভি পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি সামাজিক বিভিন্ন কাজ এবং দাতব্য সচেতনতা তৈরির জন্য তার নাম ধার দিয়েছেন। তাঁর জন্মদিনে, দাতব্যের জন্য "শিব রাজকুমার সুবর্ণ মহোৎসব অভিনন্দন সমিতি" গঠিত করা হয়েছিল।[১৬]

সম্মানসূচক পুরস্কার[সম্পাদনা]

  • সামাজিক দায়িত্বশীলতার জন্য সিমা পুরস্কার (২০১২)

কর্ণাটক রাজ্য পুরস্কার[সম্পাদনা]

ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ
বছর পুরস্কারের ধরন চলচ্চিত্র টীকা
১৯৯৫ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ওম বিজয়ী
১৯৯৬ নাম্মুরা মান্দারা হুভে বিজয়ী
১৯৯৯ এ. কে. ৪৭ (চলচ্চিত্র) বিজয়ী
২০১০ থামাসসু বিজয়ী
২০১৩ বাজরাঙ্গী মনোনীত
২০১৫ বজ্রকায়া মনোনীত
২০১৬ সান্তেয়াল্লি নিন্তা কাবিরা মনোনীত
২০১৭ মুফতি মনোনীত

দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার[সম্পাদনা]

  • সামাজিক দায়িত্বশীলতার জন্য সিমা পুরস্কার (২০১২)
  • শিবলিঙ্গার জন্য সিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার - কন্নড়
  • বাজরাঙ্গী জন্য সিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার - কন্নড়(২০১৩)
  • শিবলিঙ্গার জন্য সিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার - কন্নড় (২০১৭)
  • মুফতি-এর জন্য সিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার - কন্নড়, ২০১৮ (মনোনীত)
  • তাগারু-এর জন্য সিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার - কন্নড়, ২০১৯ (মনোনীত)

আন্তর্জাতিক সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • দক্ষিণ ভারতের কোহিনূর – ব্রিটিশ সাউথ ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব কমার্স অ্যান্ড ভিশনাইর এন্টারটেইনমেন্ট – লন্ডন কর্তৃক প্রদত্ত (২০১৬)

অন্যান্য[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Shivarajkumar celebrates his birthday family and stars"। The Times of India। ১২ জুলাই ২০১৪। ১২ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭ 
  2. 25 years of Shivaraj Kumar! আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ৮ মার্চ ২০১১ তারিখে. Cinecurry.com (3 February 2011). Retrieved on 29 March 2013.
  3. "Shivaraj Kumar aiming for a third award"The Hindu। ৭ জুন ২০০৫। 
  4. "Shiva Rajkumar – The Versatile Actor"। ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৯ 
  5. "VSKU to honour Hazare, U.R. Rao with doctorates" 
  6. "Anna Hazare, U R Rao to be conferred honorary doctorate" 
  7. "Shivrajkumar to make TV debut"Rediff.com। ১৩ আগস্ট ২০১০। 
  8. "Shivarajkumar's first web series to be shot in foreign locale", New Indian Express, ২০১৮-০৬-০২ 
  9. Galatta Tamil। "Shiva Rajkumar at Kalyan Jewellers Inauguration in Chennai | Galatta Tamil"Youtube। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৫ 
  10. Shivarajkumar ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে, CineCurry.
  11. [১]. Shivarajkumar receives an honorary doctorate – The Times of India
  12. https://bangaloremirror.indiatimes.com/entertainment/south-masala/the-first-sandalwood-celebrity-ramakrishna-to-buy-a-maruti-800-when-it-was-launched-in-1983-is-still-driving-just-that-car/articleshow/65662013.cms
  13. ಪ್ರೇಕ್ಷಕರ ಒತ್ತಾಯದ ಮೇರೆಗೆ ಮತ್ತೆ ಬಂದಿದೆ ಓಂ!, One India, 1 September 2010
  14. "Shivrajkumar in seven wonders"। Sify.com। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৪ 
  15. Shivanna reduces weight for Mylari, One India, 6 April 2010
  16. "Shivaraj Kumar's family goes charitable on his birthday"News18 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-০৮-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]