শিতালং শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিতালং শাহ
ꠡꠤꠔꠣꠟꠋ ꠡꠣꠢ
জন্মমে ১৭০০
খিত্তাশিলচর, করিমগঞ্জ মহকুমায় বদরপুর থানা, সিলেট
মৃত্যু১৭৮৯
পেশাকবি ও সাহিত্যিক
পরিচিতির কারণমরমী সাধক কবি ও সাহিত্যিক

শিতালং শাহ (নাগরি: ꠡꠤꠔꠣꠟꠋ ꠡꠣꠢ) (জন্মঃ মে, ১৭০০-মৃত্যুঃ ১৭৮৯) দেশবিভাগ-পূর্ব সিলেটের একজন খ্যাতনামা মরমী সাধক কবি ও সাহিত্যিক।[১][২][৩]। এ ধারায় ইবরাহীম তশ্না দুদ্দু শাহ্‌, পাঞ্জ শাহ্‌, পাগলা কানাই, রাধারমণ দত্ত, আরকুম শাহ্‌, শিতালং শাহ, জালাল খাঁর নাম উল্লেখযোগ্য।[৪]

জন্ম ও বংশপরিচয়[সম্পাদনা]

শিতালং শাহ বা সুফি শিতালং শাহ । শিতালং ফারসী শব্দ ইহার অর্থ পায়ের গোঁড়ালির গোল হাড় । তার জন্ম ১৭০০ সালের মে মাসে ।[১২০৭-১২৯৬বাংলা] দেশবিভাগ-পূর্ব সিলেটের অন্তর্গত করিমগঞ্জ মহকুমায় বদরপুর থানার খিত্তাশিলচর গ্রামে। শিতালং শাহ তার মুর্শিদ প্রদত্ত ফকিরী নাম। প্রকৃত নাম মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ। তার পিতার নাম মোহাম্মদ জাঁহাবখস, মাতার নাম সুরতজান বিবি। জনশ্রুতি মোতাবেক জাহাবখস ছিলেন ঢাকার নবাব বংশের লোক। বাণিজ্য উপলক্ষে তিনি এ অঞ্চলে আসেন। নৌকা ডুবিতে তার বাণিজ্য দ্রব্য বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে তিনি খিত্তাশিলচরের জমিদার মীর মাহমুদের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। মীর মাহমুদ জাহাবখসের গুণে মুগ্ধ হয়ে তার সঙ্গে কন্যা সুরতজান বিবির বিয়ে দেন। কিছু দিন পরেই তাদের ঘরে শিতালং শাহের জন্ম হয়। পরবর্তি কালে জমিদার মীর মাহমুদ তার জামাতকে তারিণীপুরে বেশ কিছু ভুসম্পত্তি দান করেন। ফলে তিনি এখানেই বসতি স্থাপন করে পরিবারিক জীবন যাপন শুরু করেন। জাহাবখসের কনিষ্ঠ পুত্রের অধঃস্থন বংশধর আজও তারিণীপুরে বসবাস করছেন বলে জানা যায়[১]

শিক্ষাদীক্ষা[সম্পাদনা]

শিতালং শাহের লেখাপড়া শুরু হয় তারিণীপুর মক্তবে। পরে তিনি আরবীতে উচ্চ শিক্ষা লাভে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি আজিরিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। সেখানে তিনি কুরআন হাদিস শিক্ষা সহ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও মুর্শিদ শাহ সুফি আব্দুল ওয়াহাব চৌধুরী ও অন্য শিক্ষক আব্দুল কাহিরের কাছে আধ্যাত্মিক দীক্ষা গ্রহণ করে ধীরে ধীরে তিনি আধ্যাত্মিক ভাবে পাদর্শী হয়ে উঠেন। গুরু প্রদত্ত শিক্ষা-দীক্ষায় অল্প দিনেই তিনি মানসিক প্রস্তুতি তৈরি করে ইলমে তাসাউফের দারপ্রান্তে পৌছেন। এক পর্যায়ে মুর্শিদের নির্দেশ মোতাবেক শিতালং শাহ লাউড়ের ভুবন পাহাড়ে নির্জন সাধনায় আত্মবিভোর হয়ে কয়েক বছর গোপনে অবস্থান করেন। গোপন সাধনা থেকে ফিরে এসে মুর্শিদের আদেশে দীন দুঃখি মানুষের মাঝে বিচরণ করে মানব কল্যাণের বাণী প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। ইসলামি মতাদর্শের ভিত্তিতে তিনি আল্লাহর পথে জীবন যাপন করতে সঙ্গীতের মাধ্যমে মানুষকে আহব্বান জানান।তার একটি গানে তিনি বলেনঃ-

মানব সৃষ্টির ভেদ রহস্য উদ্‌ঘাটন করে শিতালং শাহ মানুষকে বুঝাতে থাকেন স্রষ্টাই চিরসত্য, তার পরে সত্য কিছুই নয়। তাই সৃষ্টির জন্য উচিত স্রষ্টার প্রতি নথ হয়ে থাকে। শিতালং শাহ স্রষ্টার সত্য হওয়ার তাত্পর্যময় বিষয়টি তার স্বরচিত ভাব সঙ্গীতে এভাবে বলেছেনঃ-

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সিলেটের মরমী মানস সৈয়দ মোস্তফা কামাল, প্রকাশনায়- মহাকবি সৈয়দ সুলতান সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ, প্রকাশ কাল ২০০৯
  2. সিলেটের আঞ্চলিক গান 'শিতালং শাহ প্রবন্ধ', মোহাম্মদ খালেদ মিয়া, প্রকাশক - সাইদুর রহমান, প্রকাশ কাল- মে, ২০০৫ খ্রিঃ
  3. "সরকারি ওয়ের সাইট জেলা তথ্য বাতায়ন প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। ২৩ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১১ 
  4. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "সিলেটের মরমি গান"Prothomalo। ২০২১-০৯-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 

৪ মরমী কবি শিতালংশাহ -সংকলন ও সম্পাদনা নন্দলাল শর্মা । প্রথম প্রকাশ ডিসেম্বর ২০০৫ বাংলা একাডেমী

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]