শাহ তুরাব উল হক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শাহ তুরাব উল-হক রজভী
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ (২৭ রমজান ১৩৬৩ হিজরি)
মৃত্যু৬ অক্টোবর ২০১৬ (৪ মুহররম ১৪৩৮ হিজরি)
সমাধিস্থলজামে মেমন মসজিদ, মুসলেহ উদ্দিন গার্ডেন
ধর্মইসলাম
আন্দোলনজামাত আহলে সুন্নাত
তরিকাকাদেরিয়া
কাজধর্মীয় পণ্ডিত, জামাত আহলে সুন্নাতের সভাপতি

শাহ তুরাব উল হক কাদেরী (জন্ম: ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ – ৬ অক্টোবর ২০১৬) (উর্দু: شاہ تراب الحق قادری) হায়দরাবাদের একজন সুন্নি মুসলিম আলেম, প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ যিনি পাকিস্তানের করাচিতে সুফি বেরলভী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সুন্নি সংগঠন জামাত আহলে সুন্নাতের প্রধান নেতা।[১]

পরিবার ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

শাহ তুরা উল হক ১৯৪৪ সালে ভারতের হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তার পরিবার দেশভাগের পরে পাকিস্তানে চলে আসেন।[২] তার পিতা ছিলেন সৈয়দ শাহ হোসাইন কাদেরী, তিনি সৈয়দ পরিবারের এবং তার মা ফারুকী পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। শাহ ১৯৬২ সালে মোস্তফা রেজা খান কাদেরীর শিষ্য হন এবং ১৯৬৮ সালে বেরেলি সফর করেন। তিনি করাচির দারুল উলূম আমজাদিয়ায় পড়াশুনা করেন।[৩]

ক্যারিয়ার[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক ক্যারিয়ার[সম্পাদনা]

তিনি শিক্ষা খাতসহ সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কাউন্সিলরের আসনের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[২]

ধর্মীয় নেতৃত্ব[সম্পাদনা]

শাহ সুন্নি মুসলমানদের সহায়তার জন্য ধর্মীয় স্কুল ও সংস্থা, পাশাপাশি একটি এনজিও তৈরি করেছিলেন। তিনি মোস্তফা রেজা খান কাদেরীর (আহমদ রেজা খান বেরলভীর ছেলে) এর সরাসরি খলিফা এবং জামায়াতে আহলে সুন্নাতের নেতা ছিলেন।[৪]

তিনি তেহরিক-ই-নিজাম-ই-মুস্তফা এবং মজলিস-এ- তাহাফুজ-ই-খতমে নবুওয়াতের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি উচ্চ শিক্ষার বিশিষ্ট সুন্নি প্রতিষ্ঠান জামিয়া আমজাদিয়া রিজভীয়ার ব্যবস্থাপক ছিলেন, করাচির ইন্টারমিডিয়েট বোর্ড এবং রুয়েত-এ-হিলাল কমিটির সদস্য, করাচির মাদারিস আহলে সুন্নাতের সভাপতি ছিলেন।[২] তিনি তার শ্বশুর মুহাম্মদ মুসলেহউদ্দিন সিদ্দিকীর খলিফাও ছিলেন এবং তার পুত্র শাহ আবদুল হক কাদেরী নূরীকে তার খেলাফত দান করেছিলেন।

কর্ম[সম্পাদনা]

শাহ তুরাব উল হকের বইগুলোর মধ্যে রয়েছে: [৩][৫]

  • জিয়া উল হাদিস
  • জামাল এ মোস্তফা
  • তাসাউফ ও তরিকত
  • দাওয়াত ও তানজীম
  • ফালহা এ দারিন
  • খাওয়াতিন আউর দ্বীনি মাসাইল
  • কিতাব উস সালাত
  • মাসনুন দোয়ান
  • তাফসীর এ সুরা ফাতিহা
  • ইসলামী আক্বাইদ
  • হুজুর কি বাচ্চো সে মুহাব্বত
  • সানা এ সরকার
  • মাজারাত এ আউলিয়া আউর তাওয়াসসুল
  • ইমাম আজম
  • ফাযাইল এ সাহাবা আউর আহলে বাইত
  • তেহরিক পাকিস্তান মে উলেমা আহলে সুন্নাত কাকিরদার
  • রাসুল-এ-খোদা কি নামাজ
  • হজ কা মাসনুন তরিকা

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর ৭২ বছর বয়সে করাচিতে মৃত্যুবরণ করেন। সৈয়দ শাহ আবদুল হক কাদেরীর ইমামতিতে জানাজার নামাজের পরে জামাতে আহলে সুন্নাতের প্রধান মাজহার সাঈদ কাজমী এবং মুহাম্মদ মুনিব উর রেহমানের দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।[৬]

সমবেদনা[সম্পাদনা]

অনেক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ নওয়াজ শরীফ শোক প্রকাশ করেছেন, এমন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তার অবদানকে স্মরণ করেছেন, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক রীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলেন যা শ্রদ্ধা ও প্রশংসা সহকারে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।[৭] বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছিলেন: "প্রখ্যাত ধর্মীয় পণ্ডিত আল্লামা শাহ তুরাব-উল-হক কাদেরীর মৃত্যুতে একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে, যা খুব অদূর ভবিষ্যতে পূরণ হতে পারে।"[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Eid Miladun Nabi celebrated with enthusiasm across country | Pakistan Today"www.pakistantoday.com.pk 
  2. "In memoriam: Shah Turabul Haq Qadri passes away - The Express Tribune"। ৬ অক্টোবর ২০১৬। 
  3. Syed Shah Turabul Haq ki Shaksiyat aur Khidmat Qadri, Muslehuddin Monthly, (special edition), Karachi Irfan manzil-2 available at https://www.ziaetaiba.com/en/scholar/hazrat-allama-syed-shah-turab-ul-haq-qadri ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে
  4. "Shah Turab-ul-Haq passes away"Dawn। Pakistan। ৭ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  5. "Allama Syed Shah Turab ul Haq Qadri"www.alahazrat.net 
  6. "Eminent scholar Allama Shah Turab-ul-Haq Qadri passes away"The Nation। ৬ অক্টোবর ২০১৬। 
  7. "Religious scholar Shah Turab-ul-Haq Qadri passes away"। ৬ অক্টোবর ২০১৬। 
  8. Reporter, The Newspaper's Staff (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Religious scholar laid to rest"DAWN.COM