শাহাদাত হোসেন (ক্রিকেটার)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শাহাদাত হোসেন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকাজী শাহাদাত হোসেন
জন্ম (1986-08-07) ৭ আগস্ট ১৯৮৬ (বয়স ৩৭)
নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ
ডাকনামরাজীব
উচ্চতা৬ ফুট ৬ ইঞ্চি (১.৯৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট বোলার
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২)
২৬ মে ২০০৫ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৮ মার্চ ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৭৮)
১৭ মার্চ ২০০৬ বনাম কেনিয়া
শেষ ওডিআই২৮ মার্চ ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৫-০৬–বর্তমানঢাকা ডিভিশন
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩৫ ৫১ ৭১ ৮৪
রানের সংখ্যা ৪৮৯ ৭৯ ৯৪১ ২১৯
ব্যাটিং গড় ১০.১৮ ৭.৯০ ১১.৪৭ ৯.১২
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৪০ ১৬* ৪০ ২৬
বল করেছে ৫,১৮০ ২,১৯৮ ১০,৩৮৮ ৩,৬০৪
উইকেট ৭০ ৪৭ ১৭৯ ৮৯
বোলিং গড় ৫১.৯০ ৪৫.৫৯ ৩৮.৩৬ ৩৭.৫৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট n/a -
সেরা বোলিং ৬/২৭ ৩/৩৪ ৬/২৭ ৪/৩৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/– ৫/– ১৬/– ৮/–
উৎস: ইএসপিএন ক্রিনইনফো, ৩১ নভেম্বর ২০১৩

কাজী শাহাদাত হোসেন (জন্ম: ৭ আগস্ট ১৯৮৬) একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার। তার টেস্ট ক্রিকেটে ২০০৫ সালে ২৬ মে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে; যেটি ছিল ইংল্যান্ড এর সফরে প্রথম খেলা। যখন তিনি জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন তখন প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর এবং তিনি ছিলেন দলের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার। একই বছরে শাহাদাত একদিনের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে কেনিয়ার বিরুদ্ধে ১৭ মার্চ। ২০১০ সালে তিনি এশিয়ান গেমসে প্রথম স্বর্ণজয়ী বাংলাদেশ দলের স্কোয়াড সদস্য ছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

শাহাদাত হোসেন নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুবই অল্প বয়স থেকে তার নিজের শহরে ক্রিকেট জীবন শুরু করেন। তার পিতা ছিলেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং তিনি শীঘ্রই ক্রিকেট প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।[১] প্রশিক্ষন ক্যাম্প থেকে সেবা গ্রহণ করে উন্নতি করার পরে বাংলাদেশ ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত হন।[২]

শাহাদাত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দলে নিজের জায়গা করে নেন ২০০৩/০৪ টুর্নামেন্ট পাকিস্তান, কিন্তু উক্ত খেলায় তিনি তেমন সাফল্য দেখাতে পারেননি। তিনি মাত্র ২ উইকেট লাভ করেন এবং বাংলাদেশ ফাইনালে যেতে ব্যর্থ হয়।[৩][৪][৫] তারপরও তিনি ধারাবাহিকভাবে ২০০৪ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট যোগ দেন। গ্রুপ পর্বে তিনি পুরো তিনটি ম্যাচ খেলেন এবং ৫ উইকেট নেন। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ ১৬ দলের মধ্যে নবম স্থান দখল করেন।[৬] ৬ উইকেট নিয়ে বোলিং গড় ২৮.৫০[৭] এবং ক্রিকইনফো লেখক রাবেড তাকে সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার এবং এই প্রতিযোগীতার একজন উজ্জল সম্ভাবনাময়ী খেলোয়াড় হিসেবে উল্লেখ করেন।[২][৮]

আন্তর্জাতিক জীবনী[সম্পাদনা]

শাহাদাত হোসেন এর ২০০৫ সালে টেষ্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এর লর্ডসের এই মাঠে অভিষেক ঘটে এবং পাচ বছর পরে তার দ্বিতীয় সফরে প্রথম কোন বাংলাদেশী হিসেবে লর্ডস অনার বোর্ড তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কিছুটা বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড এর বিরুদ্ধে লর্ডসে টেস্ট ক্রিকেটে আগমন করেন। উক্ত টেস্টে তিনি মাত্র ১২ ওভারে বল করে ১০১ রান দিয়েছিলেন যাতে কোন উইকেট ছাড়া ইকোনমি ছিল ৮.৪১।

২০০৬ সালের জিম্বাবুয়ে সফরে তিনি প্রথম কোন বাংলাদেশী হিসেবে একদিনের আন্তজাতিক ক্রিকেটে হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ২টি টেস্ট ম্যাচ এবং ৩টি ওডিআই ম্যাচ খেলার জন্য বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং তারা উভয় সিরিজ জেতার জন্য আশাবাদী ছিলেন। তবে শাহাদাত হোসেনের দ্রুতগতিসম্পন্ন বল এবং নিয়ন্ত্রিত বলের সাহায্য বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস লিড নিতে সক্ষম হয়েছিল; যার ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেষ্টটি জেতা খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে তিনি তার সেরা বোলিং ইনিংস ৬/২৭ দ্বিতীয় ইনিংসে আরও তিন উইকেট লাভ করেন কিন্তু তারপরেও দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয় লাভ করে।[৯][১০] বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেষ্ট ইনিংস এবং ২০৫ রানে হেরে যায়; যাতে শাহাদাত ১০৭ রান খরচ করে ৩ উইকেট লাভ করেন।[১১] ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। চিফ সিলেক্টর রফিকুল ইসলাম জানান যে; ২০০৮ সালের ১৮টি ওডিআই ম্যাচে শাহাদাত এর বোলিং ইকোনমি ছিল ব্যয়বহুল ৬.৬৩ এবং আশা করছি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে তিনি খুবই শ্রীঘ্রই জাতীয় দলে জায়গা করে নেবেন।[১২]

শাহাদাত হোসেন
পদক রেকর্ড
পুরুষ ক্রিকেট
 বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধিত্বকারী
এশিয়ান গেমস
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০১০ গুয়াঝো lদল

২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ৬টি দল নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ গঠন করে। টি-২০ ফরমেটের এই প্রতিযোগিতা ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল[১৩] এবং নিলামে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের কেনা হয়েছিল।[১৪] শাহাদাত হোসেনকে খুলনা রয়েল বেঙ্গলস মার্কিন ডলার ৩০,০০০ বিনিময়ে ক্রয় করেন।[১৫] বাংলাদেশ এশিয়া কাপ আয়োজন করলে উক্ত বাংলাদেশ দলের স্কোয়াডে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ২০১০ সালের পর প্রথম ওডিআই ম্যাচ খেলেন।[১৬] তিনি সবচেয়ে ব্যয়বহুল বোলার হিসেবে বিবেচিত হন অন্য বোলার থেকে যাতে ৪ উইকেট নেন এভারেজ ৬২.০০।[১৭] এপ্রিলে যখন বিসিবি মধ্যবর্তী কন্টাক্ট করে তখন শাহাদাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।[১৮]

বোলিংয়ের ধরন[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে প্রাক্তন কোচ ডেভ হোয়াটমোর বলেন তার উচ্চতা এবং বোলিং আক্রমণ প্রমাণ করে যে সে বাংলাদেশ দলের দ্রুতগতির বোলার।[১৯] ২০১০ সালে তার বোলিং ধীরেধীরে কমে ৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (১৩০ কিমি/ঘ).[২০] তিনি সোজাসুজি দৌড়ান, তার ডেলিভারী আসে কিছুটা কোনাকৃত্রির গতি হয়ে।[২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Brydon Coverdale, Young, bubbly and vicious, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১১ 
  2. Imam, Rabeed (৯ মার্চ ২০০৪), Polishing the rough diamonds, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১১ 
  3. Pakistan U-19s v Bangladesh U-19s in 2003/04, CricketArchive, ৩১ অক্টোবর ২০০৩, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  4. Bangladesh U-19s v Sri Lanka U-19s in 2003/04, CricketArchive, ২ নভেম্বর ২০০৩, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  5. Bangladesh U-19s v India U-19s in 2003/04, CricketArchive, ৪ নভেম্বর ২০০৩, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  6. Bangladesh U-19s v Australia U-19s in 2003/04, CricketArchive, ৪ মার্চ ২০০৪, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  7. Bowling for Bangladesh U-19s ICC U-19 World Cup 2003/04, CricketArchive, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  8. Rabeeb Imam (১৬ মার্চ ২০০৬), On the fast track, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  9. Shahadat and Siddique help hosts seize momentum, Cricinfo, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৭  Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য)
  10. Premachandran, Dileep (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮), South Africa complete hard-fought win, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৭ 
  11. Premachandran, Dileep (৩ মার্চ ২০০৮), South Africa wrap up series win, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৭ 
  12. Shahadat and Kayes dropped for ODIs, Cricinfo, ৭ জানুয়ারি ২০০৯, সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-১৯ 
  13. Engineer, Tariq (২৮ ডিসেম্বর ২০১১), Bangladesh Premier League to begin on February 9, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১১ 
  14. Isam, Mohammad (১৯ জানুয়ারি ২০১২), Afridi and Gayle fetch highest BPL prices, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১১ 
  15. Bangladesh Premier League: players standing after auction (PDF), Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১২ 
  16. One-Day International matches played by Shahadat Hossain, CricketArchive, ২০১২-০৭-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১৪ 
  17. Asia Cup, 2011/12 / Records / Most wickets, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-০২ 
  18. Ashraful chopped from central contracts list, Cricinfo, ১ এপ্রিল ২০১২, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-০২ 
  19. Whatmore, Dav (১০ মে ২০০৫), Bangladesh profiles: Shahadat Hossain, BBC, সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-১৩ 
  20. Miller, Andrew (৭ জুন ২০১০), Tamim goes global, the rest go missing, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]