শাহর-ই সুখতেহ

স্থানাঙ্ক: ৩০°৩৫′৪৩″ উত্তর ৬১°১৯′৩৫″ পূর্ব / ৩০.৫৯৫২৮° উত্তর ৬১.৩২৬৩৯° পূর্ব / 30.59528; 61.32639
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শাহর-ই সুখতেহ
شهر سوخته
শাহর-ই সুখতেহ
শাহর-ই সুখতেহ
ইরানে অবস্থান
ইরানে অবস্থান
ইরানে অবস্থান
ইরানে অবস্থান
অবস্থানসিস্তন ও বালুচেস্তন প্রদেশ, ইরান
অঞ্চলসিস্তান
স্থানাঙ্ক৩০°৩৫′৪৩″ উত্তর ৬১°১৯′৩৫″ পূর্ব / ৩০.৫৯৫২৮° উত্তর ৬১.৩২৬৩৯° পূর্ব / 30.59528; 61.32639
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠিত৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ
পরিত্যক্ত২৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ
সময়কালব্রোঞ্জ যুগ
সংস্কৃতিহেলমান্দ সংস্কৃতি
স্থান নোটসমূহ
অবস্থাধ্বংসাবশেষ
জনসাধারণের প্রবেশাধিকারহ্যাঁ (০৮:০০–১৯:০০)
প্রাতিষ্ঠানিক নামশাহর-ই সুখতেহ
ধরনসাংস্কৃতিক
মানকii, iii, iv
অন্তর্ভুক্তির তারিখ২০১৪ (৩৮তম সভা)
রেফারেন্স নং1456
অঞ্চলএশিয়া প্যাসিফিক

শাহর-ই সুখতেহ (ফার্সি: شهر سوخته, অনু. "দগ্ধ শহর"), আনু. ৩২০০ – আনু. ২৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ,[১] শাহর-ই সুখতে এবং শাহর-ই সোখতা নামেও বানান করা হয়, হেলমান্দ সংস্কৃতির সাথে যুক্ত বিশাল ব্রোঞ্জ যুগের নগর বসতির একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এটি ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে সিস্তন ও বালুচেস্তন প্রদেশের হেলমান্দ নদীর তীরে, জহেদন-জাবোল সড়কের নিকট অবস্থিত। ২০১৪ সালের জুনে স্থানটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় স্থান পায়।[২][৩]

শহরের অপ্রত্যাশিত উত্থান-পতনের কারণগুলো এখনো রহস্যে মোড়ানো। শহর থেকে উদ্ধারকৃত প্রত্নবস্তুগুলি সেই সময়ের কাছাকাছি সভ্যতার সাথে একটি অদ্ভুত অসঙ্গতি প্রদর্শন করে এবং এটি অনুমান করা হয়েছে যে শাহর-ই-সুখতেহ শেষ পর্যন্ত প্রাগৈতিহাসিক পারস্যের পূর্বের একটি সভ্যতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ প্রদান করতে পারে যা প্রাচীন মেসোপটেমিয়া থেকে স্বতন্ত্র ছিল।

প্রত্নতত্ত্ব[সম্পাদনা]

১৫১ হেক্টর এলাকা জুড়ে শাহর-ই সুখতেহ শহুরে যুগের শুরুতে বিশ্বের বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে একটি ছিল। বর্তমানে এটি লুত মরুভূমির পূর্ব প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থিত, যা পৃথিবীর অন্যতম উষ্ণ স্থান। কিন্তু প্রাচীনকালে জলবায়ু অনেকবেশি পরিমিত ছিল। সেই সময়ে, শহরটির নিকট অবস্থিত হামুন হ্রদ আকারে অনেক বড় ছিল এবং এই এলাকায় প্রচুর জলাভূমি ছিল। এছাড়াও, দহন-ই গোলামন (৫৫০-৩৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), একটি প্রধান হাখমানেশি কেন্দ্র এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান উত্তর-পূর্বে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার (২২ মা) দূরে অবস্থিত।

শাহর-ই সুখতেহের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে[৪] ২৫ হেক্টর (৬২ একর) আয়তনের একটি বিশাল সমাধিন্থান রয়েছে। এটিতে ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০টি প্রাচীন কবর রয়েছে।[৫]

দগ্ধ শহরের প্রবেশদ্বার

বসতিটি ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আবির্ভূত হয়েছিল। শহরটিতে সভ্যতার চারটি স্তর ছিল এবং পরিত্যক্ত হওয়ার আগে তিনবার পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। এই পরিত্যাগের পূর্বে ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে ইতালিয় প্রত্নতাত্ত্বিক মিশন কর্তৃক সংঘটিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ইতালিয় ও ইরানি প্রত্নতাত্ত্বিক বারবারা হেলউইং ও হাসান ফাজেলি নাশলি কর্তৃক সংঘটিত গবেষণা এবং একটি নতুন মিশনে দেখা গেছে যে নিকটবর্তী স্থান তাপেহ গ্রাজিয়ানিতে সম্প্রতি ক্রমাঙ্কিত রেডিওকার্বন নমুনার উপর ভিত্তি করে নতুন সাইটটি প্রকৃতপক্ষে ২৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি পরিত্যক্ত হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক ম্যাসিমো ভিদালের মন্তব্য শাহর-ই সোখতার কালানুক্রম নিম্নরূপ:[১]

সময়কাল তারিখ বসতি আকার পর্যায়
৩২০০–২৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ ১০.৫–১৫.৫ হেক্টর (২৬–৩৮ একর)[৬]:৮৮২ ১০-৮
২৮০০–২৬০০ ৮০ হেক্টর (২০০ একর)[৪]:২১ ৭-৫এ
২৬০০–২৪৫০ ৮০ হেক্টর (২০০ একর) ৪-৩
২৪৫০–২৩৫০ ২-১

স্থানটি ১৯০০-এর দশকের গোড়ার দিকে অরেল স্টেইন দ্বারা আবিষ্কৃত এবং তদন্ত করা হয়েছিল।[৭][৮]

১৯৬৭ সালের শুরুতে, মাউরিজিও টোসির নেতৃত্বে আফ্রিকা এবং প্রাচ্যের জন্য ইতালিয় ইনস্টিটিউট (IsIAO) দল কর্তৃক স্থানটি খনন করা হয়েছিল।[৯][১০][১১] কিছু ব্যবধানের পর, এসএমএস সাজ্জাদির নেতৃত্বে ইরানি কালচারাল হেরিটেজ অ্যান্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন দল এই স্থানে পুনরায় কাজ শুরু করে।[৪][১২] নতুন আবিষ্কার সময়ে সময়ে প্রতিবেদন করা হয়।[১৩]

প্রথম সময়কালে[সম্পাদনা]

প্রথম সময়কালে, শাহর-ই সুখতেহ ইতোমধ্যেই দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তানের স্থানগুলির সাথে আফগানিস্তানের কান্দাহার অঞ্চল, কোয়েটা উপত্যকা এবং ইরানের বামপুর উপত্যকার সাথে ঘনিষ্ঠ সংযোগ দেখায়। এছাড়াও, হুজেস্তান এবং ফর্সের আদি-ইলামি শহরগুলির সাথে এর সংযোগ রয়েছে।[১৪] প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, শাহর-ই সোখতার কুমোররা উত্তরে ৭৫০ কিলোমিটার (৪৭০ মা) দূরে অবস্থিত সুদূর তুর্কমেনিস্তান থেকে সিরামিক শৈলীর পুনরুত্পাদন করেছিল এবং অন্যান্য সিরামিকগুলি পাকিস্তানের কেচ-মাকরান-ইরানি বেলুচিস্তান এলাকা থেকে আমদানি করা হয়েছিল, যা দক্ষিণে প্রায় ৪০০–৫০০ কিলোমিটার (২৫০–৩১০ মা) স্থান জুড়ে অবস্থিত, এবং আফগানিস্তানের মুন্ডিগাক (কান্দাহার) অঞ্চল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মা) পূর্বে সিরামিকও আমদানি করা হয়েছিল।[৬] শাহর-ই সোখতার ৩৩ নম্বর এলাকায়, এনরিকো অ্যাসকালোনের সাম্প্রতিক এক খননে দেখা যায় যে, তথাকথিত "স্থপতির বাড়ি" এবং পূর্ব ভবন ৩০০০ থেকে ২৮৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে একটি স্তর রেডিওকার্বনের অন্তর্গত।[১৫]

এই সময়ের মধ্যে মৃৎশিল্প, ১০, ৯, এবং ৮ পর্যায়, সাধারণত শরীরের জন্য হালকা পেস্ট রঙ এবং সমৃদ্ধ অলঙ্করণ প্রদর্শন করে যা বেলুচিস্তানের মুন্ডিগাক ৩ এবং কোয়েটার পাত্রের সিরামিকগুলিতে পাওয়া যায়।[১৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ভিডালে, ম্যাসিমো (১৫ মার্চ ২০২১)। A Warehouse in 3rd Millennium B.C. Sistan and Its Accounting Technology (ইংরেজি ভাষায়)। Early Urbanization in Iran। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২২ 
  2. "Shahr-i Sokhta" (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনেস্কো। ২০১৪। ২ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২২ 
  3. "Twenty six new properties added to World Heritage List at Doha meeting"UNESCO World Heritage Centre। UNESCO। ২৬ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৭ 
  4. সাজ্জাদী, এস.এম.এস.; ফ্রউজানফার, এফ; শিরাজী, রুহুল্লাহ; বাগেস্তানি, সুজান (২০০৩)। "Excavations at Shahr-i Sokhta. First Preliminary Report on the Excavations of the Graveyard,1997-2000" (ইংরেজি ভাষায়)। ৪১ইরান: ব্রিটিশ ইনস্টিটিউট অব পার্সিয়ান স্টাডিজ: ২১-৯৭। ডিওআই:10.2307/4300639। ১২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২২ 
  5. সালভাতোরি, সান্দ্রো; ভিদালে, মাসিমো (১৯৯৭)। Shahr-i Sokhta 1975 - 1978: central quarters excavations ; preliminary report। IsIAo। আইএসবিএন 9788863231458ওসিএলসি 860186214। ১০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২২ 
  6. মুতিন, বেঞ্জামিন; মিঙ্ক, লেহ (২০১৯)। "The formative phase of the Helmand Civilization, Iran and Afghanistan: New data from compositional analysis of ceramics from Shahr-i Sokhta, Iran"Journal of Archaeological Science (ইংরেজি ভাষায়)। ইরান। ২৩: ৮৮১-৮৮৯। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২২ 
  7. স্টেইন, অরেল (১৯২৮)। Innermost Asia: Detailed Report of Explorations in Central Asia, Kan-su and Eastern Iran, Carried Out and Described Under the Orders of H.M. Indian Government (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড: ক্ল্যারেন্ডন প্রেস। ১২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২২ 
  8. স্টেইন, অরেল (১৯৩৮)। "An Archaeological Journey in Western Iran"। দ্য জিওগ্রাফিক্যাল জার্নাল (ইংরেজি ভাষায়)। ৯২ (৪): ৩১৩-৩৪২। আইএসএসএন 0016-7398ওসিএলসি 781786946জেস্টোর 1787218ডিওআই:10.2307/1787218 
  9. তোসি, মাউরিজিও (১৯৬৯)। "Excavations at Shahr-i Sokhta Preliminary Report on the Second Campaign, September-December 1968" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ (৩/৪)। Istituto Italiano per l'Africa e l'Oriente (IsIAO): ২৮৩-৩৮৬। জেস্টোর 29755447 
  10. তোসি, মাউরিজিও (১৯৬৯)। "Excavations at Shahr-i Sokhta, a Chalcolithic Settlement in the Iranian Sīstān. Preliminary Report on the First Campaign, October-December 1967" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ (১/২)। Istituto Italiano per l'Africa e l'Oriente (IsIAO): ৯-৬৬। জেস্টোর 29755211 
  11. অ্যামিয়েট, পিয়ের; তোসি, মাউরিজিও; মেরিগি, পিয়েরো (১৯৭৮)। "Phase 10 at Shahr-i Sokhta: Excavations in Square XDV and the Late 4th Millennium B.C. Assemblage of Sīstān" (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ (১/৪)। ইরান: Istituto Italiano per l'Africa e l'Oriente (IsIAO): ৯-৩১। জেস্টোর 29756451 
  12. সাজ্জাদী, এস.এম.এস.; ক্যাসানোভা, মিশেল; কস্টান্টিনি, এল.; লরেন্টজ, কে.ও. (২০০৮)। "SISTAN AND BALUCHISTAN PROJECT: SHORT REPORTS ON THE TENTH CAMPAIGN OF EXCAVATIONS AT SHAHR-I SOKHTA" (ইংরেজি ভাষায়)। ৪৬ (১)। ইরান: টেলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস, লিমিটেড: 307-334। জেস্টোর 25651449 
  13. "CHN - News"। ১৩ মার্চ ২০১২। ১৩ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  14. Genito, Bruno, (April 5, 2012), "Excavations in Sistān" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে, in Callieri, Pierfrancesco, and Bruno Genito, Italian Excavations in Iran, Encyclopaedia Iranica.
  15. Ascalone, Enrico, (12 December 2020). "Emergence of Complex Societies in Eastern and South-Eastern Iran: Shahr-i Sokhta in Bronze Age" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে, Lecture minute 5:30.
  16. Eftekhari, Negar, et al., (2021). "To be or not to be local: a provenance study of archaeological ceramics from Shahr-i Sokhta, eastern Iran" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে, in Archaeological and Anthropological Sciences Volume 13, Article number: 68 (2021), Introduction.

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • F. H. Andrewa, Painted Neolithic Pottery in Sistan discovered by Sir Aurel Stein, The Burlington Magazine, vol. 47, pp. 304–308, 1925

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:সিস্তন ও বালুচেস্তন প্রদেশ