বিষয়বস্তুতে চলুন

শায়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

শায়া, বা পেটিকোট, মেয়েদের একধরনের বিশেষ পোশাকের নাম যা শাড়ি বা স্কার্টের তলায় পরা হয়। এর সুনির্দিষ্ট অর্থ দেশকালভেদে পরিবর্তিত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে, কোমরের নিচের অংশ আবৃত্ত করার জন্য ৬ কলি বা ৬ ছাট কাপড় দিয়ে বৃত্তাকার লুঙ্গির মতো করে তৈরি করা হয়।[][][]

পরিভাষা

[সম্পাদনা]

কখনও সখনও শায়া বা পেটিকোটকে ওয়েস্ট-স্লিপ বা আন্ডারস্কার্ট (যুক্তরাজ্য-এ ) বা হাফ-স্লিপ (মার্কিন-এ ) বলা হয়ে থাকে। শায়া একটি পুরোপুরি ঢাকা পোশাকের ভেতরেই সীমাবদ্ধ হয়ে ঢেকে থাকে। এর সাথে একটি শেমিজ কাঁধ থেকে ঝুলে থাকতে পারে। পেটিকোট বলতে যুক্তরাজ্যের একটি পুরো গা-ঢাকা লম্বাটে টেপ-জামাও বোঝাতে পারে, যদিও এই ব্যবহারটি কিছুটা আর্ষ।

ব্যুৎপত্তি

[সম্পাদনা]

শায়া কথাটা পোর্তুগিজ মূলের শব্দ। সংসদ বাংলা অভিধান মতে এটি পোর্তুগিজ saia থেকে বাংলায় প্রবেশ করেছে।[]

ভারতীয় শায়া

[সম্পাদনা]

এটি শাড়ির সাথে পরা মূল অন্তর্বাস বা আন্ডারস্কার্ট। শাড়ি শায়াগুলি সাধারণত শাড়ির রঙের সাথে মেলে এবং এটি স্যাটিন বা সুতির তৈরি হয়। পশ্চিমা শায়া এবং শাড়ি শায়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্যগুলির মধ্যে রয়েছে যে পরবর্তীটি গোড়ালির সামান্যই উপর অব্দি এবং সর্বদা কোমরের নীচ থেকে শুরু করেই পরা হয়ে থাকে। ভারতে একে কেউ কেউ ইনস্কার্টও বলে থাকেন।

গায়-সাঁটা শায়া বা শেপওয়্যার শায়া

[সম্পাদনা]

একটি শেপওয়্যার শায়া হল এমন একটি অন্তর্বাস যা পরনকারীর দেহের আকৃতিতে গায় সেঁটে তাক-লাগানো সৌন্দর্যমণ্ডিত লুক ফোটাতে ডিজাইন করা হয়েছে । এর কাজটি দেহের নিম্নাংশকে আরও উপস্থাপনীয় করে তোলা।

পরিধান

[সম্পাদনা]

শায়া বাছার সময় কিছু বিষয়গুলি নজর রাখা হয় :

  • গোড়ালির একটু উপর পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের শায়া নির্বাচন। শাড়ির ঝুল শায়ার থেকে আধ ইঞ্চি বেশি হতে হয়।
  • শায়া দড়ি দিয়ে বাঁধার নিয়ম থাকে। এখন চেন বা জিপার দেওয়া বা হুক লাগানো শায়া পাওয়া যায়।
  • শায়ার সঠিক রং নির্বাচন করাটা ব্লাউজ বাছাইয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। শাড়ির গায়ের মূল কালারের সঙ্গে মানানসই শায়া বেছে নিতে হয়। কেউ কেউ আবার শাড়ির সঙ্গে রঙের বৈপরীত্য বা কন্ট্রাস্ট রেখে শায়াও পরেন।

শাড়ি ক্যান্সার

[সম্পাদনা]

দীর্ঘদিন ধরে আঁটোসাঁটো ক’রে শায়া পরার অভ্যাস থাকলে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরে খুব শক্ত করে শায়ার দড়ি বাঁধলে হতে পারে প্রাণঘাতী ক্যান্সার। চিকিত্‍সকদের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে শায়ার দড়ি অত্যন্ত শক্ত করে বাঁধার ফলে ত্বকে চুলকানি ও ক্ষত তৈরি হয়। দিনের পর দিন তা উপেক্ষা করার ফলে শেষ পর্যন্ত মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার দেখা দেয়। উপসর্গটিকে ‘শাড়ি ক্যান্সার’ নাম দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে কিছু তর্ক খাড়া করেছে কিছু গবেষণাপত্র। []

কল্পকথা

[সম্পাদনা]

শায়া প্রশিক্ষণ

[সম্পাদনা]

শায়া প্রশিক্ষণটি মনস্তাত্ত্বিক মানস নিয়ন্ত্রণের একটি পুরাতন পদ্ধতির উল্লেখ করে; ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে বেশান্তর কল্পকাহিনিকে জনপ্রিয় করে তোলে।

সাধারণত কোনও স্ত্রী কোনও দুর্ব্যবহারকারী স্বামীকে নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন বা একটি মা তার অবাধ্য ছেলের সাথে এটি ব্যবহার করেন।

কাহিনিসূত্রগুলি বর্ণনা করে যে, স্বস্তি না পেয়ে বছরের পর বছর দুর্ব্যবহারের পরেও একজন মা তার ছেলেকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন বোধ করতে পারেন। এটি সম্পাদন করার জন্য, তিনি তার ছেলের জন্য শায়া প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু করেন। তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর, পুত্রকে প্রতিদিন শায়া পরতে বাধ্য ক’রে একটি কন্যায় রূপান্তরিত করা হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]