বিষয়বস্তুতে চলুন

শান্তামনি মুদ্দাইয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শান্তামনি মুদ্দাইয়া
জন্ম১৯৬৭
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাভাস্কর
কর্মজীবন১৯৮৪ সাল থেকে
পরিচিতির কারণভাস্কর্য এবং স্থাপন (ইনস্টলেশন) শিল্পী
উল্লেখযোগ্য কর্ম
www.shanthamani.com

শান্তামনি মুদ্দাইয়া হলেন একজন ভাস্কর্য শিল্পী। তিনি তাঁর দৃশ্যকলা (ভিজ্যুয়াল আর্ট) কাজে ক্ষণস্থায়ী প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করে ভাস্কর্যগুলি তৈরি, স্থাপন এবং প্রদর্শন করেন, উপাদানের মধ্যে আছে কাগজ এবং কাঠকয়লা। তাঁর ভাস্কর্যগুলি ভারতে এবং অনেক আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে বহু দ্বিবার্ষিক আর্ট শোতে প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি তাঁর কাজের জন্য অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।[][]

জীবনী

[সম্পাদনা]

শান্তামনি ১৯৬৭ সালে কর্ণাটকের মহীশূরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মহীশূরের চামরাজেন্দ্র একাডেমি অফ ভিজ্যুয়াল আর্টস থেকে চিত্রাঙ্কনে ব্যাচেলর অফ ফাইন আর্টস (বিএফএ) নিয়ে স্নাতক হন। এর পরে, তিনি বরোদার এমএস ইউনিভার্সিটি থেকে চিত্রকলায় তাঁর মাস্টার অফ ফাইন আর্টস (এমএফএ) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৪ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে চার্লস ওয়ালেস স্কলারশিপের ফেলোশিপের অধীনে কাগজ তৈরির একটি কোর্সে এক বছরের জন্য অধ্যয়ন করেন। তিনি ২০০৬ - ০৮-এর জন্য নতুন দিল্লির পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে জাতীয় জুনিয়র ফেলোশিপও পেয়েছেন।[]

কাজ এবং প্রদর্শনী

[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে কোচি-মুজিরিস বিয়েনেলে ব্যাকবোন[] নামের একটি ভাস্কর্য প্রদর্শিত হয়েছিল, এটি ছিল সিমেন্ট এবং উজ্জ্বল ভস্ম দিয়ে তৈরি।[][] এটির পরিমাপ ৭ x ৫x ৭০ ফুট এবং এটি আঁকাবাঁকা নদীর আকারে তৈরি একটি ভাস্কর্য। এই শিল্পকর্মের অনুপ্রেরণা এসেছিল ২০১০ সালে, আঁকাবাঁকা গঙ্গা নদী বরাবর তাঁর তিন মাসের সফর থেকে। এটি "আমাদের সংস্কৃতির মেরুদণ্ড" -এই রূপক হিসাবে বিবেচিত হয়। শান্তামনি এই সঙ্গে বলেছেন যে প্রসবের সময় তাঁর মেরুদণ্ডে দেওয়া একটি অ্যানেস্থেশিয়া ইনজেকশন তাঁকে এই ভাস্কর্যটির ধারণা দিয়েছিল।[][][] কোচিতে কোচি-মুজিরিস বিয়েনাল ২০১৪-তে ভাস্কর্যটি প্রদর্শিত হয়েছিল, এখানকার কিউরেটর জিতীশ কাল্লাট বলেন, এটি "আপাতদৃষ্টিতে উদ্ঘাটিত জীবাশ্মের আকারে যেন কিছু দীর্ঘদিনের অতীত ইতিহাস আহ্বান করেছে" এবং "আগ্নেয়গিরির শিলার মতো ভস্মের ব্যবহার খুব আকর্ষণীয় কারণ উপাদানটির সচ্ছিদ্র পৃষ্ঠতল কিছু ভূতাত্ত্বিক চিহ্ন বহন করে এবং নিজেই এটি একটি জীবাশ্মর মতো দেখায়"।[]

আরেকটি উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যের নাম মেটামরফোসিস ফেভারিট, এটি মূককীটের একটি ভাস্কর্য যা মূককীট থেকে প্রজাপতির মধ্যে বিবর্তন পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি কাঠের কয়লা এবং তুলোর ন্যাকড়ার সজ্জা দিয়ে তৈরি। এটি "ক্ষয়, অসুস্থতা এবং মৃত্যু"র ইঙ্গিত দেয়।[]

বছরের পর বছর ধরে, তাঁর কিছু অন্যান্য ভাস্কর্য প্রদর্শনী হল ফ্রোজেন ফিনিক্স, সাইলেন্ট স্পিক, জেসচার স্পিক এবং টার্নিং হুইল - ট্র্যাডিশন আনবাউণ্ড ইন ইণ্ডিয়া অ্যাণ্ড শ্রীলঙ্কা। শান্তামনির ভাস্কর্যগুলি বেঙ্গালুরুর কর্ণাটক স্টেট মিউজিয়ামের ভেঙ্কটপ্পা আর্ট গ্যালারিতে স্থায়ী প্রদর্শনী হিসাবে রাখা আছে। তাঁর কাজগুলি অনেক ব্যক্তিগত গ্যালারিরও অংশ।[]

২০১৯ সালে তিনি সেটেল স্টোরিজ এবং ইয়র্কশায়ার ডেলসের লোকেদের সাথে একটি নতুন কাজ লাইফ ইন আওয়ার হ্যাণ্ডস তৈরি করতে সহযোগিতা করেছিলেন। এটি ক্রেভেন জেলার জীবন এবং ইতিহাস সম্পর্কে স্থানীয়দের সাথে কথোপকথনের একটি ভিডিও রেকর্ড। সেখানে প্লাস্টার ঢালাই প্রযুক্তির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের হাতের ছবিও তৈরি করা হয়েছিল।[] একই বছরে, তিনি আরও একটি ভাস্কর্য নিয়ে আসেন, যার নাম ড্রপ[১০] এটি এক ফোঁটা কালির দৃশ্যায়ন যে ফোঁটাটি মাটি স্পর্শ করার মুহুর্তে জমাট বেঁধে যায়। এটি ছিল প্রতিটি ফোঁটার তাৎপর্যের স্মৃতিচারণ। শান্তামনি বলেছেন যে গঙ্গা নদীর মুখ থেকে শুরু তাঁর যাত্রা থেকে ভাস্কর্যটির উদ্ভূত হয়েছিল, যেখানে তিনি লক্ষ লক্ষ লোককে অর্ঘ্য (দেবতাকে জল নিবেদনের হিন্দু রীতি) নিবেদন করতে দেখেছিলেন। তাদের অঞ্জলিবদ্ধ হাত নদীর জলে পূর্ণ করে আবার নদীতে ফিরিয়ে দেওয়া দেখে তাঁর জীবনের চক্রাকার প্রকৃতির রূপক আকারের কথা মনে হয়েছিল।[১০]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 3 "Spinal fragments fuse Shanthamani's thoughts at biennale"। Daily India Mail। ৫ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৬
  2. 1 2 3 "Shantamani M"। crimsonartgallery.com। ২৮ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৬
  3. "Backbone - Shanthamani Muddaiah"Google Arts & Culture (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১
  4. 'Back Bone' reminds the menace of carbon use, Mathrubhumi News
  5. "Interview: Artist Shantamani Muddaiah in conversation with CB Editor-in-Chief K.G", YouTube, Creative Bands, ৩১ মার্চ ২০১৫, সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯
  6. Jacob, Rahul (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Kochi Biennale: Art al fresco"Business Standard India। Business Standard। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৬
  7. Madhukar (১৩ ডিসেম্বর ২০১৪)। "The big fat Indian art show - Bangalore Mirror"। Bangalore Mirror। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৬
  8. "Colombo Art Biennale 2014:Shanthamani Muddaiah"। Colombo Art Biennale। ২০১৪। ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৬
  9. "Life stories told through hand sculptures"
  10. 1 2 "Drop by Shanthamani Muddaiah | Swiss Re Art"www.swissre.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১