লিচ্ছবি (গোষ্ঠী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

লিচ্ছবি ( মাগধী প্রাকৃত : 𑀮𑀺𑀘𑁆𑀙𑀯𑀺;) হলো উত্তর-পূর্ব ভারতীয় উপমহাদেশের একটি প্রাচীন ইন্দো-আর্য উপজাতি যাদের অস্তিত্ব লৌহ যুগ থেকে শাস্ত্রীয় যুগ পর্যন্ত ছিল বলে জানা যায়। লিচ্ছবি জনগনদের লিচ্ছবিক হিসাবেও অভিহিত করা হত। তাদের বাসভূ্মি বর্তমানে লিচ্ছবি প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত, যা বৃহত্তর ভাজ্জিকা দলগোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় রাজ্য ছিল।

অবস্থান[সম্পাদনা]

লিচ্ছাবিকরা বৃজি জনপদের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বাস করত বলে মনে করা হয়। এই অঞ্চলের সীমানা উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা এবং পূর্ব, দক্ষিণ এবং পশ্চিমে মহানদী, গঙ্গা এবং সাদানিরা নদী দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। সাদানিরা নদী ছিল লিচ্ছাবিকদের পশ্চিম সীমানা এবং গঙ্গা নদী ছিল দক্ষিণে মগধ রাজ্যের সাথে তাদের সীমানা। লিচ্ছাবিকদের রাজধানী বৈশালী নগরে অবস্থিত ছিল। এই নগর লিচ্ছভির নেতৃত্বে বৃজির সদর দপ্তর হিসেবেও পরিচিত ছিল।[১]

রাজধানী শহর বৈশালীতে একটি অশোকস্তম্ভ সহ আনন্দ স্তূপ।

নাম[সম্পাদনা]

লিচ্ছবি ( 𑀮𑀺𑀘𑁆𑀙𑀯𑀺 ) উপজাতীয় নামটি লিচ্ছা শব্দের মাগধী প্রাকৃত থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ " ভাল্লুক "। ভিন্নমতে লিচ্ছবি, লেচ্ছবি বা লিচ্ছাই এই সকল শব্দই সমার্থক । [১]

লিচ্ছবি নামের সংস্কৃত রূপটি রুক্সবী বা ঋক্ষবী ( ऋक्षवी​) থেকে এসেছে। ভাল্লুকের সংস্কৃত শব্দ হলো রুক্স বা ঋক্ষ (ऋक्ष), এবং এই শব্দ থেকেই লিচ্ছবি নামটির উৎপত্তি। নামের এই সংস্কৃত রূপটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত হত না। সংস্কৃত এবং পালি উভয় শাস্ত্রেই এর পরিবর্তে মাগধী প্রাকৃত নাম লিচ্ছবি বেশি ব্যবহার করা হত।[১] ভাল্লুকের নাম থেকে উদ্ভূত একটি উপজাতীয় নামের এই ব্যবহারের একটি টোটেমিক তাৎপর্য থাকতে পারে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

উৎপত্তি[সম্পাদনা]

বৃহত্তর মগধ সাংস্কৃতিক অঞ্চলের পূর্ব গাঙ্গেয় সমভূমিতে বসবাসকারী লিচ্ছাবিকরা ছিল একটি ইন্দো-আর্য উপজাতি।[২][৩][৪] তারা মহা-বিদেহ রাজ্যের অঞ্চল জয় করে, এবং অস্থায়ীভাবে মিথিলার বৈদেহ রাজধানী দখল করে, যেখান থেকে তারা মহা-বিদেহ অঞ্চলের সর্বোত্তমভাবে পরিচালনা করত। প্রজাতন্ত্রী লিচ্ছাবিকদের দ্বারা মহা-বিদেহ দখলের পরিণতি এই হয় যে, পরবর্তীকালে অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণভাবেই দুর্বল হয়ে পড়া বিদেহ রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উৎখাত করা হয় এবং একটি প্রজাতন্ত্রী ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sharma 1968
  2. Levman, Bryan G. (২০১৪)। "Cultural Remnants of the Indigenous Peoples in the Buddhist Scriptures": 145–180। ডিওআই:10.1558/bsrv.v30i2.145। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২২ 
  3. Bronkhorst, Johannes (২০০৭)। Bronkhorst, J. (2007). Greater Magadha, Studies in the culture of Early India, p. 6. Leiden, Boston, MA: Brill.আইএসবিএন 9789047419655ডিওআই:10.1163/ej.9789004157194.i-416 
  4. Singh, Upinder (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century। Pearson Longman। পৃষ্ঠা 268-289। আইএসবিএন 9788131716779