লরেন্স ওয়াইসক্রানৎজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লরেন্স ওয়াইসক্রানৎজ

জন্ম(১৯২৬-০৩-২৮)২৮ মার্চ ১৯২৬
মৃত্যু২৭ জানুয়ারি ২০১৮(2018-01-27) (বয়স ৯১)
জাতীয়তাব্রিটিশ
নাগরিকত্বব্রিটিশ
মাতৃশিক্ষায়তনসোয়ার্থমোর কলেজ
পরিচিতির কারণঅন্ধত্ব
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রমনোবিজ্ঞান, স্নায়ুমনোবিজ্ঞান, জ্ঞানীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

লরেন্স ওয়াইসক্রানৎজ এফআরএস (২৮ মার্চ ১৯২৬ - ২৭ জানুয়ারী ২০১৮) একজন ব্রিটিশ স্নায়ু-মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। অন্যদৃষ্টির ঘটনা আবিষ্কার এবং আবেগিক শিক্ষা ও আবেগিক আচরণে অ্যামিগডালার ভূমিকা প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব অবশ্যই ওয়াইসক্রানৎজকে দিতে হয়।[১] অন্যদৃষ্টি হলো একপ্রকার কর্টিক্যাল অন্ধত্ব। মস্তিষ্কের কর্টিক্সে কোনো প্রকার ক্ষত বা ত্রুটির কারণে এটি হয়ে থাকে। অন্যদৃষ্টিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণ অর্থে অন্ধ নয়, এমনকি তারা উপস্থাপিত বস্তু সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারে, নির্দেশ করতে পারে এবং এমনকি একাধিক বস্তুর মধ্যে তুলনা ও পার্থক্যও করতে পারে।[২]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

ওয়াইসক্রানৎজের বয়স যখন ছয় বছর তখন তার পিতার মৃত্যু হয়, ফলস্বরূপ তাকে পড়াশোনা করতে হয়েছিলো জিরার্ড কলেজ নামক ফিলাডেলফিয়ার একটি বোর্ডিং স্কুলে।[৩] জিরার্ড কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি সোয়ার্থমোর কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। স্নাতক শেষ করার অল্প সময় আগেই তাকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাথরউড ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছিল।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ওয়াইসক্রানৎজ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েছিলেন, ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিনি সেখানে একজন পূর্ণকালীন অধ্যাপক অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।[৩] অবসর নেওয়ার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং ম্যাগডালেন কলেজের ইমেরিটাস ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রুশ স্নায়ুমনোবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার লুরিয়ার লেখালেখি এবং গবেষণার প্রতি জীবনভর অনুরাগ ছিল ওয়াইসক্রানৎজের। তিনি লুরিয়ার সাথে সাক্ষাৎও করেছিলেন এবং বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিলেন তাকে, লুরিয়া তখনও গবেষণায় নিযুক্ত ছিলো।[৪] ১৯৭৭ সালে লুরিয়ার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দুজনই সহকর্মী ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে ওয়াইসক্রানৎজ ক্লুভার-বুকি সিন্ড্রোমের অনিয়মিত সংবেদনশীল আচরণের জন্য দায়ী টেম্পোরাল লোবের অঞ্চলটি বর্ণনা করেছিলেন। ১৯৩০ সাল থেকে এটি একটি ঘটনা যা আবেগের লিম্বিক মস্তিষ্ক অনুমানের অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে[১] যদিও এই হাইপোথিসিসটি তার দাবির সাথে মিল ছিল না, ওয়াইসক্রানৎজ ক্লুভার-বুকি সিনড্রোমের জন্য দায়ী অস্থায়ী কাঠামোর পরিচয় দিতে ক্ষতপ্রাপ্ত প্রাণীদের মধ্যে উপকরণের ভয় শর্তের ব্যবহার করেছিলেন। যখন থেকে অ্যামিগডালা আবেগের বৈজ্ঞানিক বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। ওয়াইসক্রানৎজ সাধারণত ঘটনাটি আবিষ্কৃত থাকার কৃতিত্ব দিতে হয়। ১৯৮৬ সালে অন্ধত্ব বিষয় উপর তার বই প্রকাশ হয়েছিল। যেখানে এটি একটি স্কোটোমাতে উপস্থাপিত একটি উদ্দীপকটির স্বেচ্ছাসেবক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিক্রিয়া দেখাইছিলেন।

তিনি তার জীবনে যেসব প্রাতিষ্ঠানিক বা অপ্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করেছেন ও যেসব কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • খণ্ডকালীন প্রভাষক, টুফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫২
  • গবেষণা সহযোগী, লিভিং ইনস্টিটিউট। ১৯৫২-৫৫
  • সিনিয়র পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলো, মার্কিন জাতীয় গবেষণা কাউন্সিল, ১৯৫৫-৫৬
  • গবেষণা সহযোগী, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৬-৬১
  • সহকারী গবেষণা পরিচালক, কেমব্রিজ, ১৯৬১–৬৬
  • শারীরবৃত্তীয় মনস্তত্ত্বের পাঠক, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬৬–৬৭।
  • ১৯৬৯ সালে ইউরোপিয়ান ব্রেইন ও বিহ্যাভিয়ার সোসাইটির (মস্তিষ্ক ও আচরণ সমিতি) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
  • অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং অক্সফোর্ডের ম্যাগডালেন কলেজের ফেলো, ১৯৬৭–১৯৯৩;
  • ইমেরিটাস অধ্যাপক, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৩–২০১৮
  • ইমেরিটাস ফেলো, ম্যাগডালেন কলেজ, অক্সফোর্ড, ১৯৯৩–২০১৮
  • দর্শন ও মনোবিজ্ঞান জন্য ইউরোপীয় সোসাইটির সম্মানিত সভাপতি।
  • ইউরোপিয়ান ব্রেন অ্যান্ড বিহ্যাভিয়ার সোসাইটির স্বাগতিক সভাপতি।
  • অ্যাসোসিয়েশন অভ সায়েন্টিফিক স্টাডি অভ কনসিয়াসনেস এর সভাপতি।

অ্যালান কাওয়ে, চার্লস গ্রস, নিকোলাস হামফ্রে, সুসান ইভারসেন এবং মেলভিন এ গুডালাসহ কমপক্ষে ১০ জন পিএইচডির তদারকি করেছেন ওয়াইসক্রানৎজ।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

১৯৮০ সালে ওয়াইসক্রানৎজ রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৫][৬] ১৯৮৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি সোসাইটির পরিষদে ছিলেন।[৩] তিনি "ইউএস ন্যাশনাল একাডেমি অভ সায়েন্সেস" এবং "একাডেমিয়া ইউরোপিয়া"র সদস্য ছিলেন। ওয়াইসক্রানৎজ ফিসেন ফাউন্ডেশনের পরিষদেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ওয়াইসক্রানৎজ ছিলেন রয়েল সোসাইটি অভ মেডিসিন এবং আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অভ সায়েন্স' পদকপ্রাপ্ত। [৩] তিনি বাভারিও একাডেমি অভ সায়েন্সেস/সাইমেন্‌স ফাউন্ডেশনের হাইজেনবার্গ বক্তৃতা এবং রয়েল সোসাইটির ফেরিয়ার বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি নেদারল্যান্ডসের টিলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছিলেন।

নির্বাচিত প্রকাশনা[সম্পাদনা]

  • অ্যানালাইসিস বিহ্যাভিওরাল চেঞ্জ, ১৯৬৭
  • দ্য নিউরোসাইকোলজি অভ কগনেটিভ ফাংশান, ১৯৮২
  • অ্যানিমেল ইন্টেলিজেন্স, ১৯৮৫
  • ব্লাইন্ডসাইট: কেস স্টাডি অ্যান্ড ইমপ্লিকেশনস, ১৯৮৬ আইএসবিএন ০১৯৮৫২১২৯৪
  • থট উইথআউট ল্যাঙ্গুয়েজ, ১৯৮৮
  • কন্সিয়াসনেস লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড, ১৯৯৭

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Principles of Neural Science। McGraw-Hill। ২০১২। পৃষ্ঠা 1084। আইএসবিএন 0-07-139011-1 
  2. Weiskrantz, Lawrence (1986). Blindsight: A Case Study and Implications. Oxford University Press.
  3. "Professor Lawrence Weiskrantz"। Magdalen College - University of Oxford। জানুয়ারি ১৩, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৮ 
  4. Weiskrantz, Lawrence (১৯৯৯)। Consciousness lost and found: A neuropsychological exploration (Repr. সংস্করণ)। Oxford University Press.। আইএসবিএন 978-0198524588 
  5. "Lawrence Weiskrantz"royalsociety.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-১৯ 
  6. Goodale, Melvyn Alan (২০২০)। "Lawrence Weiskrantz. 28 March 1926—27 January 2018"