রাজেন্দ্র শেন্ডে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজেন্দ্র এম. শেন্ডে
জন্ম(১৯৪৯-০৭-১৩)১৩ জুলাই ১৯৪৯
রাহিমতপুর, মহারাষ্ট্র রাজ্য, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনভারতীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান মুম্বাই (পূর্বতন বম্বে)
পেশাচেয়ারম্যান, টিইআরআরই নীতি কেন্দ্র, একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, নিরপেক্ষ, অলাভজনক স্বাধীন সংস্থা (পূর্বতন : ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম)
ওয়েবসাইটwww.rajendrashende.com

রাজেন্দ্র মাধবরাও শেন্ডে Rajendra Madhavrao Shende (জন্ম ১৩ জুলাই ১৯৪৯), ভারতীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান (আইআইটি) এর প্রাক্তন ছাত্র এবং ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি) এর প্রাক্তন ডাইরেক্টর। বর্তমানে তিনি টিইআরআরই নীতি কেন্দ্রের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। [১] এটি মজবুত উন্নয়নের জন্য প্রমাণ ভিত্তিক নীতি উন্নয়ন এবং প্রকল্প ভিত্তিক প্রচারে নিযুক্ত একটি অলাভজনক সংস্থা। আগস্ট ২০১১ এর আগে তিনি ওজোন অ্যাকশন ব্রাঞ্চ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে[২] এর প্রধান ছিলেন। [৩] এটি প্যারিসে [৪] অবস্থিত ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম এর প্রযুক্তি বিভাগের অর্ন্তগত শিল্প ও অর্থনীতির (ইউএনইপি ডিটিআইই) [৫] একটি বিভাগ।

তিনি ২০০০[৬] সালে আইপিসিসি স্পেশাল রিপোর্ট অন টেকনোলজি ট্রান্সফার এর রিভিউ সম্পাদক হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং ২০০৫ সালে আইপিসিসি / টিইএপি ওজোন স্তর এবং গ্লোবাল ক্লাইমেট সিস্টেমের সুরক্ষার বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য লেখকবৃন্দের সমন্বয়ের পরিচালক লেখক ছিলেন।[৭] আইপিসিসি-র কাজে অনেক বিজ্ঞানীর অবদানকে ২০০৭ নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে সম্মিলিতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার জন্য তাঁর ইউএনইপি প্রোগ্রাম জাতিসংঘে প্রথম হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (ইপিএ) এর পুরস্কার লাভ করে।[৮] তিনি জলবায়ু সুরক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইপিএ পুরস্কারও জিতেছিলেন।[৯]

দরিদ্র, গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর জন্য সোলার ভ্যাকসিন কুলার উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার জন্য ২০০৬ সালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ডাঃ. আবদুল কালাম দ্বারা সম্মানিত হন। [১০]

ওজোন স্তর সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে আন্তঃসংযোগ সম্পর্কিত ইউএনইপি মূল প্রতিবেদনের স্টিয়ারিং কমিটির তিনি সদস্য ছিলেন।[১১] এটিকে মজবুত উন্নয়নের জন্য একটি রোল মডেল এবং একটি সামাজিক পরীক্ষাগার হিসাবে গড়ে তুলতে তিনি তাঁর গ্রাম রহিমতপুর কে গ্রহণ করেছেন। [১২]

পটভূমি এবং প্রাথমিক জীবন[১৩][সম্পাদনা]

রাজেন্দ্র শেন্ডে ভারতের সাতারা জেলার একটি ক্ষুদ্র পল্লী ও কৃষিক্ষেত্র রহিমতপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি কলেজ শিক্ষার জন্য মুম্বাই আসেন এবং উচ্চ প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মর্যাদাপূর্ণ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি তে ভর্তি হতে সফল হন এবং সেখান থেকেই তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি অর্জন করেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। [১৪] জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি ভারতীয় বেসরকারী এবং সরকারী সংস্থাসমূহ টাটা কেমিক্যালস এবং এসআরএফ এর উৎপাদন, প্রকল্প এবং কৌশলগত বৈচিত্রকরণ ক্ষেত্রগুলিতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইউএন থেকে অবসর নেওয়ার পরে শেন্ডে ভারতে এবং ফ্রান্সে তাঁর সময় কাটান এবং এখন তিনি তাঁর শহর পুনের রহিমতপুর এবং প্যারিসে থাকেন। [১৫]

কর্মজীবন[১৬][সম্পাদনা]

আইআইটি থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরে শেন্ডে ভারতের মিঠাপুরের টাটা কেমিক্যালসের প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে সমুদ্রের জল থেকে রাসায়নিক কম্প্লেক্স উৎপাদনে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি ভারত সরকার অধিগৃহীত হিন্দুস্তান অরগানিক কেমিক্যালসে যোগদান করেছিলেন। এখানে জৈব রাসায়নিক উৎপাদনের জন্য তিনি নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতে প্রথমবার পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন (পিটিএফই) উৎপাদনের সুবিধা স্থাপনের জন্য গঠিত প্রকল্প দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি মন্ট্রিল প্রোটোকলের অনুমোদনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৌশল অবলম্বন করার জন্য ভারতের জাতীয় কৌশল সংশোধনী অবলম্বন করতে ভারত সরকারের জাতীয় টাস্কফোর্সে তিনি মনোনীত হন। পরবর্তীতে ওজোন স্তর অপসারণকারী পদার্থগুলিতে মন্ট্রিল প্রোটোকল প্রয়োগের জন্য বহুপাক্ষিক তহবিল গঠনের বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে তিনি ভারতের আন্তর্জাতিক আলোচনা দলের অংশ হিসাবে কাজ করেছিলেন। সেই ক্ষমতাবলে তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে মন্ট্রিল প্রোটোকল নিয়ে আলোচনার এবং আন্তর্জাতিক জাতিসংঘের বেশিরভাগ সভায় অংশ নিয়েছেন। ১৯৯২ সালে তিনি ১৪৬ টি উন্নয়নশীল দেশকে মন্ট্রিয়াল প্রোটোকল মেনে চলার জন্য সক্ষম করতে ইউনাইটেড ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের ওজনঅ্যাকশন প্রোগ্রামের নেতৃত্ব দানের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালে সমস্ত উন্নয়নশীল দেশ সফলভাবে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (সিএফসি) এবং অন্যান্য ওজোন হ্রাসকারী পদার্থগুলি পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা করা হয়। ফলে জাতিসংঘের প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল কোফি আন্নানের মতে ‘এখনও পর্যন্ত অন্যতম সফল আন্তর্জাতিক চুক্তি হিসাবে’ পরিণত হয়ছে মন্ট্রিয়াল প্রোটোকল। [১৭]

জাতিসংঘে পরিবেশ প্রকল্পে কর্মজীবন[৩][সম্পাদনা]

ইউএনইপিতে প্রকল্প নেতা হিসাবে তিনি উন্নয়নশীল দেশসমূহ এবং অর্থনীতিতে অবস্থিত দেশসমূহের পাশাপাশি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে বিশ্ব সহযোগিতা ও নেটওয়ার্কিংয়ের ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন। তিনি গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকর্ডস বাস্তবায়নে ক্ষুদ্র দেশগুলিতে মূল ধারার কাছে নতুন কর্মসূচির মধ্যে নতুন পদ্ধতির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং প্রযুক্তি সহযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিবিধ যন্ত্রপাতি তৈরি করেছেন।

১৯৯৯ সালে তিনি ইউএনইপি বিভাগের প্রযুক্তি, শিল্প ও অর্থনীতি বিভাগে প্রথমবারের মতো শক্তি এবং জলবায়ু কর্মসূচির সূচনা করেন এবং জ্বালানি ও ওজোনঅ্যাকশন ইউনিটের চিফ অফ চিফ হিসাবে উন্নীত হন। তিনি কিয়োটো প্রোটোকলের অধীনে ২০ টিরও বেশি দেশে ক্লিন ডেভলপমেন্ট মেকানিজম সম্পর্কিত কর্মশালা পরিচালনা করেছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি ব্যাঙ্কক, বাহারিন, নাইরোবি, প্যারিস, পানামা শহরে ইউএনইপি-র ৫ টি কার্যালয় থেকে ১৪৬ জন জাতীয় ওজোন অফিসারদের ১১৬ টি আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের নেতৃত্বের জন্য বর্ধিত ওজোনঅ্যাকশন শাখার প্রধান হওয়ার জন্য নিয়োগ লাভ করেছিলেন। এটি ছিল মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়ন থেকে ওজোন স্তর এবং জলবায়ু ব্যবস্থাকে জলবায়ু প্রশমন সুবিধার পাশাপাশি ওজোন স্তরের সুরক্ষা পাওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি।

তাঁর প্রধান অর্জিত সাফল্য হল[১৮] ইউএনইপিতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার অভিনব পদ্ধতি, জাতীয় ওজোন অফিসারদের আঞ্চলিক নেটওয়ার্কিং, মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়নের জন্য দেশের কৌশল বিকাশের অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া, বিকেন্দ্রীভূত তথ্য ক্লিয়ারিংহাউস, পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল অবৈধ বাণিজ্য রোধে শুল্ক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, রেফ্রিজারেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান এবং টার্মিনাল ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান বিকাশ করা। [১৯]

শিল্প, আন্তর্জাতিক সংস্থা, একাডেমিয়া এবং এনজিওর সাথে অংশীদারত্বের বিকাশ তাঁর কাছে দৃঢ় ও স্বতস্ফূর্ত বিষয়বস্তু। তার উপরে ওজোন স্তর সুরক্ষা এবং জলবায়ুর নিরাপত্তার সুরক্ষার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে সহায়তা করতে বিপুল সংখ্যক উন্নত দেশগুলির সাথে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিকাশে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। উদ্ভাবনী অংশীদারত্বের মধ্যে রয়েছে গ্রিন কাস্টমস ইনিশিয়েটিভ, সোলার চিল অংশীদারি। [৯]

মন্তব্য ও তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। Archived from the original on ৩১ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২১ 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১২ জুন ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  8. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  9. http://www.epa.gov/cpd/awards/2009winners.html
  10. http://www.hindu.com/2006/11/01/stories/2006110100602200.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে and http://www.hindustantimes.com/News-Feed/NM18/President-Kalam-backs-new-solar-powered-fridge/Article1-166631.aspx আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  12. http://expressindia.indianexpress.com/latest-news/iitians-push-for-satara-town-makeover/258108/
  13. http://expressindia.indianexpress.com/latest-news/usepa-award-for-city-scientist/450235/
  14. http://www.towerofbabylon.ethz.ch/images/upload/pdf/jury_11.pdf
  15. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০ 
  16. http://rajendrashende.com/?page_id=560
  17. Montreal Protocol
  18. http://rajendrashende.com/?page_id=61
  19. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২০