বিষয়বস্তুতে চলুন

রাজমা ডাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শুকনা রাজমা

রাজমা ডাল এক বিশেষ ধরণের ডাল (Phaseolus vulgaris) যা মানবদেহের যকৃতের মত দেখতে হওয়ায় কিডনি বিন নামেও পরিচিত।

রাজমা, কিডনি বিন
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি৫৩২ কিজু (১২৭ kcal)
২২.৮ g
চিনি০.৩ g
খাদ্য আঁশ৭.৪ g
০.৫০ g
৮.৭ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
থায়ামিন (বি)
১৪%
০.১৬ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৫%
০.০৬ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
৪%
০.৫৮ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
৪%
০.২২ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৯%
০.১২ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
৩৩%
১৩০ μg
ভিটামিন সি
১%
১.২ মিগ্রা
ভিটামিন ই
০%
০.০৩ মিগ্রা
ভিটামিন কে
৮%
৮.৪ μg
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
৩%
২৮ মিগ্রা
কপার
১২%
০.২৪ মিগ্রা
লৌহ
২২%
২.৯ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
১৩%
৪৫ মিগ্রা
ফসফরাস
২০%
১৪২ মিগ্রা
পটাশিয়াম
৯%
৪০৩ মিগ্রা
সোডিয়াম
০%
২ মিগ্রা
জিংক
১১%
১.০৭ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি৬৭ g

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

রাজমার শ্রেণীবিভাগ

[সম্পাদনা]

রাজমা বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত, যেমন:

  • লাল রাজমা (যা সাধারণ রাজমা, ভারতে রাজমা, পাকিস্তানে সূরখ (লাল) লোবিয়া নামে পরিচিত)।
  • হালকা দাগযুক্ত রাজমা (এবং লম্বা আকৃতির হালকা দাগযুক্ত রাজমা)।
  • লাল দাগযুক্ত রাজমা (এবং লম্বা আকৃতির লাল দাগযুক্ত রাজমা)।
  • সাদা রাজমা (ইতালি ও যুক্তরাজ্যে কানেলিনি নামে পরিচিত, ভারতে লোবিয়া এবং পাকিস্তানে সাফেদ তথা সাদা লোবিয়া নামে পরিচিত)।

পুষ্টিগুণ

[সম্পাদনা]

রাজমা সেদ্ধ করলে এতে ৬৭% পানি, ২৩% শর্করা, ৯% প্রোটিন থাকে এবং চর্বির পরিমাণ খুব কম। ১০০ গ্রাম সিদ্ধ রাজমায় ৫৩২ কিলোজুল (১২৭ kilocalorie) খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। এটি প্রোটিন, ফোলেট (৩৩% DV), আয়রন (২২% DV), এবং ফসফরাস (২০% DV)-এর সমৃদ্ধ উৎস। এছাড়া মাঝারি পরিমাণে থিয়ামিন, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, এবং জিঙ্ক (১১–১৪% DV) পাওয়া যায়।

খাবার

[সম্পাদনা]
রাজমা ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়েছে, যা উত্তর ভারতের একটি সাধারণ খাবার।
লাল দাগবিশিষ্ট রাজমা।

লাল রাজমা সাধারণত চিলি কন কার্ন-এ ব্যবহৃত হয়। এটি ভারতের রান্নায়ও ব্যবহৃত হয়, যেখানে একে রাজমা এবং পাকিস্তানে সূরখ লোবিয়া বলা হয়। লুইজিয়ানা, যুক্তরাষ্ট্রে সোমবারের ঐতিহ্যবাহী ক্রিওল খাবার লাল ডাল ও ভাত প্রস্তুত করতে লাল রাজমা ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ক্যারিবিয় ঐতিহ্যসম্পন্ন লুইজিয়ানার পরিবারগুলোতে হালকা এবং গাঢ় লাল রাজমা ব্যবহৃত হয়। জ্যামাইকাতে এদের বলা হয় "লাল মটরশুঁটি"। স্পেনের লা রিওজা অঞ্চলে ব্যবহৃত ছোট রাজমাকে কাপারোনেস বলা হয়। নেদারল্যান্ডস এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাজমা প্রায়শই ব্রেনেবন নামের এক ধরণের স্যুপে পরিবেশিত হয়।[] লেভান্ট অঞ্চলে রাজমার ঝোলজাতীয় একটি খাবার ফাসুলিয়া নামে পরিচিত, যা সাধারণত ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। রাজমা থেকে বীজের পেস্ট তৈরি করতে শুকনো রাজমা সিদ্ধ করে নরম করা হয়, এরপর তা গাঢ় পেস্টে পরিণত করা হয়।

বিষাক্ততা

[সম্পাদনা]

লাল রাজমায় তুলনামূলকভাবে উচ্চমাত্রার ফাইটোহিমাগ্লুটিনিন থাকে, যা অধিকাংশ অন্যান্য শিমের তুলনায় বেশি বিষাক্ত। রাজমা খাওয়ার আগে এটি ভিজিয়ে রেখে অন্তত ১০ মিনিট ধরে ফুটানো প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) ৩০ মিনিট ধরে ফুটানোর পরামর্শ দেয়, যাতে তাপমাত্রা যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে বিষাক্ত উপাদান সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়।[]

নিম্ন তাপমাত্রায় (৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৭৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)), যেমন স্লো কুকার ব্যবহার করলে বিষাক্ত উপাদান অপসারণ হয় না এবং এটি খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।[] তবে, ক্যানজাত লাল রাজমা সরাসরি খাওয়া নিরাপদ, কারণ সেগু প্রক্রিয়াজাত করার সময় আগে থেকেই সিদ্ধ করা হয়। পাঁচটি কাঁচা রাজমা বা একটি আধাসিদ্ধ রাজমাও গুরুতর বমি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা এবং অস্বস্তির কারণ হতে পারে।[][][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Recipe: Soup Brenebon"FAO 
  2. "Bad Bug Book (2012)" (পিডিএফ)Foodborne Pathogenic Microorganisms and Natural Toxins Handbook: Phytohaemagglutinin। Food and Drug Administration। ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩Consumers should boil the beans for at least 30 minutes to ensure that the product reaches sufficient temperature 
  3. "Be Careful With Red Kidney Beans in The Slow Cooker"Mother Earth News 
  4. "Cooking safely with slow cookers and crock pots"foodsmart.govt.nz। ২০১৬-০১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-০৬ 
  5. "Raw Kidney Beans"Home Food Preservation (Penn State Extension)