রশীদ করীম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রশীদ করীম
জন্ম১৪ই আগস্ট, ১৯২৫ (কলকাতা)
মৃত্যু২৬ নভেম্বর ২০১১(2011-11-26) (বয়স ৮৬) (ঢাকা)
পেশালেখক
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
ধরনউপন্যাস
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারআদমজী পুরস্কার (১৯৬১), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭২), একুশে পদক (১৯৮৪)

রশীদ করীম (১৪ আগস্ট ১৯২৫ — ২৬ নভেম্বর ২০১১)[১] বাংলাদেশের প্রথিতযশা ঔপন্যাসিক। তার প্রথম উপন্যাস উত্তম পুরুষ। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো: প্রসন্ন পাষাণ, আমার যত গ্লানি, প্রেম একটি লাল গোলাপ, মায়ের কাছে যাচ্ছি ইত্যাদি। স্ত্রী-পুরুষের সম্পর্কের মধ্যে যে জটিলতা, যে রহস্য, যে সূক্ষ্মতা— সেদিকই তার মনোযোগ ছিল বেশি। এই বিষয়টিকেই তিনি তার সব উপন্যাসে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় করেছেন। এটা তার বিশেষ এলাকা। এ বিষয়ে তার এক বিশেষ ও প্রখর অন্তর্দৃষ্টি ছিল। তার উপন্যাসে সামাজিক প্রেক্ষাপট ছাড়িয়ে ব্যক্তিই প্রধান হয়ে ওঠে, মানুষই তার প্রিয় অধীত বিষয়। বিশেষ করে নারী চরিত্র চিত্রণে তিনি গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় দেন। ঔপন্যাসিক রশীদ করীম সম্পর্কে গবেষক মাওলা প্রিন্সের অভিমত, 'সাতচল্লিশোত্তর বাংলাদেশের উপন্যাসশিল্পের টেকসই পথ-নির্মিতির প্রাজ্ঞপুরুষ ও সফল সারথি ঔপন্যাসিক রশীদ করীম। শক্তিশালী এই ঔপন্যাসিকের রূপায়িত জীবনবোধ ও শিল্পচৈতন্যে ব্যক্তি যেমন খুঁজে পায় তার আত্মপরিচয়কে, তেমনি আত্ম-অস্তিত্বের স্বরূপোন্মোচনে সে পৌঁছে যায় একটি জাতির প্রোথিত শিকড়মূলে। তার নির্মোহ, নিরাসক্ত ও পাশ্চাত্যসাহিত্য অনুগামী বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গি এদেশীয় উপন্যাসশিল্পে ষাটের দশকে উদ্বোধন কিংবা সংযোজন করেছিলো যে নূতনমাত্রা, বোধকরি সেখান থেকেই সূচিত হয় বাংলাদেশের উপন্যাসশিল্পের পরিপুষ্টির জয়যাত্রা।' (পৃ.২৮, রশীদ করীমের উপন্যাস : বিষয়বৈভব ও শিল্পরূপ) মাওলা প্রিন্স উল্লেখ করেন, 'প্রকরণশৈলী কিংবা আঙ্গিক নিরীক্ষায় রশীদ করীম প্রথমাবধি সচেতন-শিল্পী। পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে এসে বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্তের বাহ্যিক ও আত্মিক সমুন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিক মনোভঙ্গির যে ক্রমবিকাশ, এবং তা থেকে উদ্ভূত যে জটিলতা বা নিঃসঙ্গতা— রশীদ করীমের উপন্যাসে আঙ্গিক গঠনে তা দৃঢ়ভাবে যূথবদ্ধ (compactness)। জীবনরূপ ও জীবনবোধের সঙ্গে শিল্পচৈতন্য ও প্রকরণশৈলীর সুসমন্বয়ে রশীদ করীমের উপন্যাস তাই ক্ল্যাসিক মর্যাদায় অভিষিক্ত। যা বাংলাদেশের উপন্যাসশিল্পকে করে ঋদ্ধ— সমকালীন ঔপন্যাসিকদের থেকে রশীদ করীমকে করে তুলেছে স্বতন্ত্র— সেইসঙ্গে উত্তরসূরিদের করেছে পরিমিতি বোধসম্পন্ন।' (পৃ.১৫৮, রশীদ করীমের উপন্যাস : বিষয়বৈভব ও শিল্পরূপ, মুক্তদুয়ার, ২০১৪)

সাহিত্যকর্ম : উপন্যাস

১। উত্তম পুরুষ (১৯৬১)

২। প্রসন্ন পাষাণ (১৯৬৩)

৩। আমার যত গ্লানি (১৯৭৩)

৪। প্রেম একটি লাল গোলাপ (১৯৭৮)

৫। সাধারণ লোকের কাহিনী (১৯৮১)

৬। একালের রূপকথা (১৯৮১)

৭। শ্যামা (১৯৮৪)

৮। বড়ই নিঃসঙ্গ (১৯৮৫)

৯। মায়ের কাছে যাচ্ছি (১৯৮৯)

১০। চিনি না (১৯৯০)

১১। পদতলে রক্ত (১৯৯০), এবং

১২। লাঞ্চ বক্স (১৯৯৩)

ছোটগল্প :

১। প্রথম প্রেম (১৯৮৪)

প্রবন্ধগ্রন্থ :

১। আর এক দৃষ্টিকোণ (১৯৮৯)

২। অতীত হয় নূতন পুনরায় (১৯৯২), এবং

৩। মনের গহনে তোমার মুরতিখানি (১৯৯২)

আত্মজীবনী :

১। জীবন মরণ (১৯৯৯)

পুরস্কার[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সমকাল, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  2. "পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক তালিকা"banglaacademy.org.bd। বাংলা একাডেমি। ২৭ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে প্রাপ্ত “একুশে পদক” প্রাপ্তদের সম্পূর্ণ তালিকা।

মাওলা প্রিন্স, রশীদ করীমের উপন্যাস : বিষয়বৈভব ও শিল্পরূপ, মুক্তদুয়ার, ময়মনসিংহ, জুন ২০১৪

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]