যোগাযোগের ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

একে অপরের সাথে যোগাযোগ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিদ্যমান। শুধু মানুষ নয়, যাদের প্রাণ আছে, তাদেরই জীবন ধারণের এক প্রধান অঙ্গ যোগাযোগ

প্রাথমিক সময়[সম্পাদনা]

প্রাগৈতিহাসিকাল থেকে, যোগাযোগ প্রযুক্তিগুলিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন (মিডিয়া এবং উপযুক্ত শিলালিপি সরঞ্জাম) রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের সাথে সাথে এবং ক্ষমতা ব্যবস্থায় সম্প্রসারণের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে। যোগাযোগের পরিসীমা হতে পারে খুব সূক্ষ্ম বিনিময় প্রক্রিয়া থেকে, পূর্ণ কথোপকথন এবং গণ যোগাযোগ হতে পারে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০,০০০ অব্দে আগে ভাষার উৎপত্তির বিপ্লবের সাথে সাথে মানব যোগাযোগ শুরু হয়। প্রায় ৩০,০০০ বছর আগে ভাষার প্রতীক বিকশিত হয়েছিল। ভাষার অসম্পূর্ণতার সত্ত্বেও ধারণাগুলির সহজ প্রচারের অনুমতি দেয় এবং যোগাযোগের নতুন নতুন মাধ্যম সৃষ্টি করে, যার ফলে মানুষ যোগাযোগ করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি তথ্যের উন্নতি করতে পারে। এই সমস্ত উদ্ভাবনের প্রতীকের মূল ধারণা উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল।

যোগাযোগের উদ্দেশ্যে তৈরি প্রাচীনতম প্রতীকগুলি ছিল গুহা চিত্রকলা, পাথুরে শিল্পকর্মের একটি রূপ, যা উচ্চ পুরাপ্রস্তরযুগ সাথে সম্পর্কিত। সর্বাধিক পরিচিত গুহা চিত্রটি চাউভেট গুহায় অবস্থিত যা ৩২ হাজার বছর আগের। এই চিত্রগুলিতে প্রচুর পরিমাণে তথ্য রয়েছে: প্রায় পনের হাজার বছর আগে মানুষ প্রথম ক্যালেন্ডার তৈরি করেছে। ভাষাতত্ত্ব চিত্রাঙ্কন ও লেখার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে: প্রাচীন মিশর এবং প্রাচীন গ্রীসে চিত্রাঙ্কন ও লেখার ধারণা এবং শব্দগুলো প্রায় একই ছিল (মিশরীয়: s-sh ', গ্রীক:' গ্রেফিন ')।

পেট্রোগলিফস[সম্পাদনা]

সুইডেনের হালজেস্তার পেট্রোগলিফস। নর্ডিক ব্রোঞ্জ যুগ

পেট্রোগলিফসের, শিলা পৃষ্ঠে খোদিত ভাস্কর্য, উৎপাদনের মাধ্যমে যোগাযোগ ইতিহাসে যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটে। প্রথম গুহচিত্র থেকে প্রথম পেট্রোগলিফের দিকে যেতে মানুষের প্রায় ২০ হাজার বছর লেগে যায়, যা প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার বছর আগে নবপ্রস্তরযুগীয় এবং উচ্চতর পুরা প্রস্তর যুগে আবিষ্কৃত হয়।

খুব সম্ভবত সে সময়কার মানুষগুলো যোগাযোগের জন্য অন্য কোন মাধ্যম ব্যবহার করেছিল, যা প্রায়শই মনে রাখার উদ্দেশ্যে - বিশেষভাবে সাজানো পাথর, কাঠ বা মাটিতে নকশাকৃত প্রতীক, কুইপু-র মত দড়ি, উল্কি, কিন্তু টেকসই খোদিত পাথরগুলির চেয়ে একটু কম আধুনিক সময়ে এবং আমরা কেবল আফ্রিকার ও ওশেনিয়া মতো বিদ্যমান 'শিকারী-গোষ্ঠী' সংস্কৃতির পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করতে পারি।


পিক্টোগ্রামস[সম্পাদনা]

আইডোগ্রামস[সম্পাদনা]

লিখন[সম্পাদনা]

লেখার প্রযুক্তি সময়রেখা[সম্পাদনা]

  • ৩০,০০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ - বরফ যুগে ইউরোপের মানুষ চাঁদ ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে সময়ের উপর নজর রাখার জন্য হাতির দাঁত, হাড় এবং পাথরে চিহ্নিত করত।
  • ১৪,০০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ - ইউক্রেনের মেঝিরচ, ম্যাপের সাথে প্রথম পরিচিত আর্টিফ্যাক্ট হাড় ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।
  • ৩৫০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ আগে- আদিবাসী উপজাতীয়রা চিত্রকলার মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পাদন করা হত।
  • ৩৫০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ - সুমেরীয়দের কিউনিফর্ম লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন এবং মিশরীয়রা হায়ারোগ্লিফিক বা মিশরীয় চিত্রলিপি আবিষ্কার করেন।
  • ১৬ শতক খ্রিস্টপূর্ব অব্দ - ফিনিশীয়রা একটি বর্ণমালা আবিষ্কার করেন।
  • ১০৫ খ্রিষ্টাব্দ- সাই লুন কাগজ উদ্ভাবন করেন।
  • সপ্তম শতাব্দী - হিন্দু-মালয় সাম্রাজ্যে তামার প্লেটের রুলে বৈধ নথি লিখা হত এবং অধিক ক্ষয়শীল মাধ্যমে অন্যান্য নথি লিখখে রাখত।
  • ৭৫১ খ্রিষ্টাব্দ- তালাসের যুদ্ধের পর মুসলিম বিশ্বে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়।
  • ১২৫০ খ্রিষ্টাব্দ - লেখার জন্য কুয়িল ব্যবহার করা হয়।

মুদ্রণ প্রযুক্তি সময়রেখা[সম্পাদনা]

  • ১৩০৫ - চীনারা কাঠের ব্লকের তৈরীর চলমান টাইপ মুদ্রণ উদ্ভাবন করে।
  • ১৪৫০ - জোহানেস গুটেনবার্গ ধাতুর তৈরী একটি চলমান মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন।
  • ১৮৪৪ - চার্লস ফেনার্টি রাগ কাগজ যার সরবরাহ খুবই সীমিত ছিল তার পরিবর্তে কাঠের মন্ড থেকে কাগজ তৈরি করেন।
  • ১৮৪৯ - অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউ ইয়র্ক সংবাদপত্রের জন্য সর্বশেষ ইউরোপীয় সংবাদ প্রচার করার জন্য নোভা স্কটিয়া পনি এক্সপ্রেসকে সংগঠিত করে।
  • ১৯৫৮- চেস্টার কার্লসন অফিসে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ফটোকপি উপস্থাপন করেন।

টেলিযোগাযাগের ইতিহাস[সম্পাদনা]

টেলিযোগাযোগের ইতিহাস - প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে দূরবর্তী কোনো স্থানে সংকেত তথা বার্তা পাঠানো - হাজার হাজার বছর আগে আফ্রিকা, আমেরিকা এবং এশিয়া অঞ্চলে বসবাসরত মানুষ দুরে অবস্থানকারী কোন মানুষের সাথে ধোঁয়ার সংকেত দিয়ে বা ঢোল বাজিয়ে যোগাযোগ শুরু করেছিল। ১৭৯০-এর দশকে প্রথম স্থায়ী সেমাফোর পদ্ধতি ইউরোপে ব্যবহৃত হত, এবং ১৮৩০-এর দশকে বৈদ্যুতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত এগুলো ব্যবহৃত হত।

প্রাক-বৈদ্যুতিক[সম্পাদনা]

  • ২৬-৩৭ খ্রি. - রোমান সম্রাট টিবেরিয়াস ধাতব আয়নায় সূর্যের আলো প্রতিফলিত করার মাধ্যমে সংকেত পাঠিয়ে ক্যাপ্রি দ্বীপ থেকে সাম্রাজ্য শাসন করেন।
  • ১৫২০ - ফার্ডিনান্ড ম্যাগেলান সমুদ্রযাত্রার সময় জাহাজ থেকে কামান ছুড়ে এবং পতাকা উত্তোলন করে একে অপরের কাছে বার্তা পাঠাতেন।

টেলিগ্রাফ[সম্পাদনা]

  • ১৭৯২ - ক্লদ শাপে নামে একজন ফরাসি প্রকৌশলী প্রথম দৃশ্যমান টেলিগ্রাফ যন্ত্র তৈরি করেন যা লিল ও প্যারিস এর মাঝে সংযোগ স্থাপন করে। এ ক্ষেত্রে সেমাফোর পদ্ধতি ব্যবহৃত হত।
  • ১৮৩১ - জোসেফ হেনরি একটি বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ প্রস্তাব এবং নির্মাণ করেন।
  • ১৮৩৬ - স্যামুয়েল মোর্স মোর্স কোড উপস্থাপন করেন।
  • ১৮৪৩ - স্যামুয়েল মোর্স প্রথম দীর্ঘ দূরত্ব বিশিষ্ট বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ লাইন তৈরি করেন।

ধ্বনিনির্দেশক চিহ্ন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]