বিষয়বস্তুতে চলুন

যিশুর ঐতিহাসিক সত্যতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নোয়েল কোপেলের খ্রিস্টের পুনরুত্থান
একাদশ শতাব্দীর বাইজেন্টাইন পাণ্ডুলিপি। এটি সুসমাচারের দৃষ্টিভঙ্গি সমন্বিত পুস্তক

ইসলাম, খ্রিস্টানবাহাই - এই তিনটি ধর্মে, যিশুর ঐতিহাসিক সত্যতাকে তাদের ধর্মগ্রন্থসমূহের ভিত্তিতে স্বতঃসিদ্ধভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তথাপি, এটাও সত্য যে, যিশুর সমসাময়িককালের এমন কোনো দলিল আজও পাওয়া যায় নি, যাতে যিশুর অস্তিত্বের কোনো উল্লেখ আছে। যিশুর সবচেয়ে প্রাচীন উল্লেখ হল নতুন বাইবেল, আধুনিক ইতিহাসবিদদের মতে যার রচনাকাল যিশুর অনুমিত মৃত্যুকালের কয়েক দশক পর। ধর্ম তিনটিতে যিশুকে মসিহ মনে করা হয়, যদিও মসিহের ভূমিকা প্রসঙ্গে ধর্মসমূহের ধারণা ভিন্ন। অপরদিকে ধর্মনিরপেক্ষ ইতিহাসবিদ ও অন্যান্য ধর্মের (যেমন ইহুদি ধর্ম ) অনুসারীগণ যিশুকে একজন সাধারণ মানুষ বলে মনে করেন, এমনকি অনেকে মনে করেন যিশু বলে আসলে কেউ কখনো ছিলো না।[][][]

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন বাইবেলে যিশুর জীবনের যে বর্ণনা তা নিরপেক্ষ কোনো ঐতিহাসিক দলিল নয়, বরং নতুন বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার তাগিদে লিখিত কোনো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জীবনের উপর ধর্মীয় বা পৌরাণিক রচনা। সেক্ষেত্রে, কোন বর্ণনাটি ঐতিহাসিক সত্য, আর কোন বর্ণনাটি নয়, তা আলাদা করা ইতিহাসবিদদের জন্য কঠিন একটি কাজ। বর্ণনার অনেক অংশ অতিরঞ্জিত, কোনো উপকথা হতে গৃহীত বা সম্পূর্ণ বানোয়াট হতে পারে। এমনকি, ঐতিহাসিকভাবে সত্য বর্ণনাসমূহও পুনঃবর্ণনায় পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে বলে তারা মনে করেন।[][]

সূত্র

[সম্পাদনা]

সুসমাচার

[সম্পাদনা]

একাদশ শতাব্দীর বাইজেন্টাইন পাণ্ডুলিপিতে সুসমাচারের ইঞ্জিলগুলি হ'ল যিশু এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় আন্দোলনের ঐতিহাসিক তথ্যের প্রাথমিক উৎস ।[][] এই ধর্মীয় সুসমাচারগুলি হল- ম্যাথিউয়ের সুসমাচার, মার্কের সুসমাচার এবং লূকের সুসমাচার । এগুলি আরামাইক ভাষায় কথা বলা যিশু নামে একজন ইহুদীর জীবন, ধর্মপ্রচার, ক্রশবিদ্ধকরণ এবং পুনরুত্থানের বিবরণ দেয়। গ্রন্থগুলির উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন অনুমান রয়েছে ।কারণ নিউ টেস্টামেন্টের সুসমাচারগুলি গ্রীক ভাষায়িত সম্প্রদায়ের জন্য গ্রীক ভাষায় রচিত হয়েছিল।[] পরে সিরিয়াক, লাতিন এবং কপটিক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।[] গসপেল বা গসপেল গুলির নির্ভরযোগ্যতা অধ্যয়ন করার সময় ঐতিহাসিকরা প্রায়শই প্রেরিতদের প্রেরণের ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্যতা অধ্যয়ন করেন। কারণ এগুলি সব একই লেখক দ্বারা রচিত হয়েছিল।[১০]

পলিন পত্রগুলি

[সম্পাদনা]

পণ্ডিতরা মনে করেন যে সাতটি পলিন পত্রকে খাঁটি বলে বিবেচনা করা হয়েছে সেগুলি খ্রিস্টীয় ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রচিত। (অর্থাৎ যিশুর মৃত্যুর জন্য সাধারণভাবে গৃহীত সময়সীমার প্রায় আনুমানিক বিশ থেকে ত্রিশ বছর পর) প্রাথমিকতম খ্রিস্টান গ্রন্থগুলিতে তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যিশু সম্পর্কে।[১১] যদিও পল প্রেরিত যিশুর বিষয়ে তুলনামূলকভাবে সামান্য তথ্য সরবরাহ করেছেন ।[১২]তিনি বলেছেন যে তিনি কখনই ব্যক্তিগতভাবে যিশুকে চিনতেন না। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন যে তিনি যিশুকে একজন সত্যিকারের ব্যক্তি এবং একজন ইহুদী হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। [১৩][১৪][১৫][১৬] তিনি দাবি করেছেন যে যিশুর ভাই জেমসের সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়েছিল।[১৭][note ১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Mark Allan Powell (১৯৯৮)। Jesus as a Figure in History: How Modern Historians View the Man from Galileeবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Westminster John Knox Press। পৃষ্ঠা 168আইএসবিএন 978-0-664-25703-3 
  2. James L. Houlden (২০০৩)। Jesus in History, Thought, and Culture: Entries A–J। ABC-CLIO। আইএসবিএন 978-1-57607-856-3 
  3. Robert E. Van Voorst (২০০০)। Jesus Outside the New Testament: An Introduction to the Ancient Evidence। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 978-0-8028-4368-5 
  4. Bromiley 1982, পৃ. 1034।
  5. Ehrman 2012, পৃ. 12, 347, n. 1।
  6. "Jesus Christ"Encyclopædia Britannica. 2010. Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১০The Synoptic Gospels, then, are the primary sources for knowledge of the historical Jesus 
  7. Vermes, Geza. The authentic gospel of Jesus. London, Penguin Books. 2004.
  8. Mark Allan Powell (editor), The New Testament Today, p. 50 (Westminster John Knox Press, 1999). আইএসবিএন ০-৬৬৪-২৫৮২৪-৭
  9. Stanley E. Porter (editor), Handbook to Exegesis of the New Testament, p. 68 (Leiden, 1997). আইএসবিএন ৯০-০৪-০৯৯২১-২
  10. Green, Joel B. (২০১৩)। Dictionary of Jesus and the Gospels (2nd সংস্করণ)। IVP Academic। পৃষ্ঠা 541। আইএসবিএন 978-0830824564 
  11. Edward Adams in The Cambridge Companion to Jesus by Markus N. A. Bockmuehl 2001 আইএসবিএন ০৫২১৭৯৬৭৮৪ pp. 94–96.
  12. Eddy, Paul Rhodes; Boyd, Gregory A. (২০০৭)। The Jesus Legend: A Case for the Historical Reliability of the Synoptic Jesus Tradition। Baker Academic। পৃষ্ঠা 202। আইএসবিএন 978-0-8010-3114-4 
  13. Tuckett, Christopher M. (২০০১)। Markus N. A. Bockmuehl, সম্পাদক। The Cambridge Companion to Jesusসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজন। পৃষ্ঠা 122–126। আইএসবিএন 978-0521796781 
  14. Jesus Remembered: Christianity in the Making by James D. G. Dunn (2003) আইএসবিএন ০৮০২৮৩৯৩১২ p. 143
  15. Jesus Christ in History and Scripture by Edgar V. McKnight 1999 আইএসবিএন ০৮৬৫৫৪৬৭৭০ p. 38
  16. Jesus according to Paul by Victor Paul Furnish 1994 আইএসবিএন ০৫২১৪৫৮২৪২ pp. 19–20
  17. Galatians 1:19
  18. Murphy, Caherine M. (২০০৭)। The Historical Jesus For Dummies। For Dummies। পৃষ্ঠা 140আইএসবিএন 978-0470167854 


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "note" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="note"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি