মাদলেন পেলতিয়ে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(ম্যাডেলিন পেলেটিয়ার থেকে পুনর্নির্দেশিত)
মাদলেন পেলতিয়ে
জন্ম
আন পেলতিয়ে

১৮ই মে, ১৮৭৪
প্যারিস, ফ্রান্স
মৃত্যু২৯ ডিসেম্বর ১৯৩৯(1939-12-29) (বয়স ৬৫)
ফ্রান্সের প্যারিসের কাছে পের-ভোক্ল্যুজ উন্মাদাগার
জাতীয়তাফরাসি
মাতৃশিক্ষায়তনপ্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুষদ
পরিচিতির কারণনারী অধিকার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রচিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

মাদলেন পেলতিয়ে (১৮ই মে ১৮৭৪ - ২৯শে ডিসেম্বর ১৯৩৯) ছিলেন একজন ফরাসি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, প্রথম তরঙ্গের নারীবাদী এবং রাজনৈতিক কর্মী। তিনি প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বয়ঃসন্ধিকালে সমাজতান্ত্রিক এবং নৈরাজ্যবাদী দলগুলির মধ্যে ঘন ঘন দল পরিবর্তন করতেন। তিনি একটি বড় শিক্ষাগত ব্যবধান অতিক্রম করে, নিজের কুড়ি বছর বয়সের দশকে একজন চিকিৎসক হয়েছিলেন। তিনি ফ্রান্সের প্রথম মহিলা যিনি মনোরোগবিদ্যায় ডক্টরেট পান। পেলতিয়ে ফ্রিম্যাসনরি, ওয়ার্কার্স ইন্টারন্যাশনালের ফ্রেঞ্চ সেকশনে যোগদান করেন এবং একটি নারীবাদী সমিতিকে নেতৃত্ব দিতে আসেন। তিনি অক্টোবর বিপ্লবে যোগদানের জন্য রওনা হন কিন্তু মোহভঙ্গ হয়ে ফিরে আসেন। ফ্রান্সে, তিনি নারীবাদী এবং কমিউনিস্ট কারণের পক্ষে বক্তব্য রাখতে থাকেন এবং অসংখ্য নিবন্ধ, প্রবন্ধ এবং সাহিত্য লিখেছিলেন, এমনকি ১৯৩৭ সালে সন্ন্যাসরোগের পরে অর্ধ পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায়ও কাজ চালিয়ে গেছেন। পেলতিয়েকে ১৯৩৯ সালে একটি গর্ভপাত সঞ্চালন করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল যদিও সেই অবস্থায় তাঁর সেই কাজটি করার ক্ষমতা ছিলনা। তাঁকে একটি মানসিক চিকিৎসালয়ে রাখা হয়েছিল যেখানে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং সে বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয় স্ট্রোকে তাঁর মৃত্যু হয়।

জীবনী[সম্পাদনা]

মাদলেন পেলতিয়ে মূলত একজন নৃবিজ্ঞানী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তিনি পল ব্রোকার পরে চার্লস লেটোর্নিউ এবং লেওঁস মানুভ্রিয়ে-র সাথে খুলির আকারবুদ্ধিমত্তার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে অধ্যয়ন করেন। যখন তিনি নৃবিজ্ঞান ছেড়েছিলেন তখন তিনি লিঙ্গের পার্থক্যকারী বুদ্ধিমত্তার নির্ধারক হিসাবে মাথার খুলির আকারের ধারণাটির সমালোচনা করেছিলেন।[১]

নৃবিজ্ঞান ছেড়ে দেওয়ার পরে পেলতিয়ে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। ১৯০৩ সালে, তিনি নারীবাদী সংবাদপত্র লা ফ্রন্ডের সমর্থনে একটি প্রচারাভিযান পরিচালনা করেন। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল যাতে সব ধরনের চিকিৎসা বিশেষীকরণের জন্য মহিলাদের যোগ্যতার সমর্থন করা হয়, সবচেয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে মানসিক ইন্টার্নশিপের পরীক্ষায়।[২]

মাদলেন পেলতিয়ে নিজেকে নারীত্ব থেকে দূরে রাখার জন্য পুরুষের মতো পোশাক পরতেন, পোশাকের ধারণাকে তিনি নারীদের নিপীড়নের চিহ্ন হিসাবে দেখেছিলেন

তিনি একজন মহিলা ফ্রিম্যাসন হিসাবেও উল্লেখযোগ্য ছিলেন। পেলতিয়ে লা নুভেলে জেরুজালেম লজের সদস্য ছিলেন, তিনি ১৯০৪ সালে এই সদস্যপদ গ্রহণ করেন। লজটিতে পুরুষ এবং মহিলা উভয় সদস্যই ছিলেন এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হলেও, তিনি প্রায়শই মহিলাদের মুক্তির প্রচারে তাঁর লজের সাথে বিরোধিতা করতেন।[৩]

১৯৩৭ সালে স্ট্রোক হওয়ার কারণে মাদলেন পেলতিয়ে আংশিকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছিলেন। যাইহোক, তিনি প্রকাশ্যে গর্ভপাতের অনুশীলন চালিয়ে যান এবং ১৯৩৯ সালে গ্রেপ্তার হন। তাঁর গ্রেফতারের পর তাঁকে একটি উন্মাদাগারে বন্দী করা হয়। এরপর তাঁর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তিনি সেই বছরের মধ্যে মারা যান।[৪]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Charles Sowerwine, Woman's brain, man's brain: feminism and anthropology in late nineteenth-century France, in Women's History Review vol. 12, pp=289–308
  2. Gordon, Felicia (১ জুন ২০০৬)। "French psychiatry and the new woman: the case of Dr Constance Pascal, 1877–1937" (পিডিএফ): 159–182। ডিওআই:10.1177/0957154X06056601পিএমআইডি 17146988 
  3. Claude Maignien,Charles Sowerwine, Madeleine Pelletier, une féministe dans l'arène politique
  4. "Pelletier, Madeleine (1874–1939)"Women in World History: A Biographical Encyclopedia। ২০০২। 

উৎসপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • অ্যালেন, সিএস (২০০৩)। "সিস্টার্স অফ আদার সর্ট: ফ্রিম্যাসন উইমেন ইন মডার্ন ফ্রান্স, ১৭২৫ - ১৯৪০"। দ্য জার্নাল অফ মডার্ন হিস্ট্রি, ৭৫: ৭৮৩-৮৩৫।
  • গর্ডন, এফ. (১৯৯০)। দ্য ইন্টিগ্রাল ফেমিনিস্ট, মাদলেন পেলতিয়ে, ১৮৭৪ - ১৯৩৯, নারীবাদ, সমাজতন্ত্র এবং চিকিৎসা। পলিটি প্রেস
  • সোওয়ারওয়াইন, সি. (১৯৯১)। "অ্যাকটিভিজম এবং সেক্সুয়াল আইডেন্টিটি - মাদলেন পেলতিয়ের জীবন এবং শব্দ, ম্যাডেলিন (১৮৭৪ - ১৯৩৯)"। আন্দোলন সামাজিক, ১৫৭: ৯-৩২।
  • সোওয়ারওয়াইন, সি. (২০০৩)। "নারীর মস্তিষ্ক, পুরুষের মস্তিষ্ক: উনবিংশ শতাব্দীর শেষের ফ্রান্সে নারীবাদ এবং নৃতত্ত্ব"। মহিলাদের ইতিহাস পর্যালোচনা, ১২:২৮৯-৩০৭।
  • ফেলিসিয়া গর্ডন, "কনভারজেন্স অ্যান্ড দ্বন্দ্ব: মাদলেন পেলতিয়ে (১৮৭৪ - ১৯৩৯) এর প্রাথমিক লেখায় নৃবিজ্ঞান, মনোরোগবিদ্যা এবং নারীবাদ, " মনোরোগবিদ্যার ইতিহাস, ১৯,২ (২০০৮), ১৪১-১৬২।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]