মেশ অ্যানালাইসিস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিত্র ১: প্ল্যানার বর্তনীর প্রয়োজনীয় মেশ যাদের লেবেল হলো ১,২ এবং ৩। R1, R2, R3, 1/sc, এবং Ls উপস্থাপন করছে রোধ, ধারক এবং আবেশক এর ইম্পিডেন্স-এর মান এস ডোমেইনে। Vs এবং Is হলো বিভব উৎসের এবং বিদ্যুৎ উৎসের মান যথাক্রমে

মেশ অ্যানালাইসিস যাকে মাঝে মাঝে মেশ বিদ্যুৎ পদ্ধতি বা লুপ অ্যানালাইসিসও বলা হয়ে থাকে, হলো একটা কৌশল প্ল্যানার বর্তনীর বিভব এবং বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য বৈদ্যুতিক বর্তনীর যেকোন স্থানে।প্ল্যানার বর্তনী হলো সে সব বর্তনী যাদের গাণিতিল সমতল ক্ষেত্রে আঁকা যায় যেখানে কোন পরস্পর ছেদী তার থাকে না।বর্তনীর সমাধানে মেশ অ্যানালাইসিসে ব্যবহার করা হয় কারশোফের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সূত্র বা কারশোফের বিভব সংক্রান্ত সূত্র । মেশ অ্যানালাইসিসি ব্যবহারের সুবিধা হলো এটা একটা প্রক্রিয়া মেনে চেষ্টা চালায় প্ল্যানার বর্তনীর সমাধানে এবং এটা সমীকরণের সংখ্যা কমায় বর্তনীকে সমাধানের জন্য।[১]

মেশ বিদ্যুৎ এবং প্রয়োজনীয় মেশগুলো[সম্পাদনা]

চিত্র ২: বর্তনীর সাথে মেশ বিদ্যুৎ যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে i1, i2, এবং i3 দিয়ে।এই তীর চিহ্নগুলো দেখাচ্ছে মেশ বিদ্যু মেশ বিদ্যুৎ-এর দিককে

একটি প্র্যোজনীয় মেশ হলো বর্তনীর একটি লুপ যাতে অন্য কোন লুপ থাকে না।যখন বর্তনীর চিত্রে তাকানো হয়, প্রয়োজনীয় মেশ দেখতে মনে হয় একটা “জানালার কাচ”। চিত্র ১-এ চিহ্নিত করেছে প্রয়োজনীয় মেশকে এক,দুই এবং তিন দিয়ে।যখন প্রয়োজনীয় মেশগুলো পাওয়া যায়, মেশ বিদ্যুৎকে চিহ্নিত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।[২]

একটি মেশ বিদ্যুৎ হলো একটি বিদ্যুৎ যা প্রয়োজনীয় মেশের আশে পাশে লুপ গড়ে তোলে।মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহের কোন বস্তুগত অর্থ নেই, কিন্তু এটা ব্যবহৃত হয় মেশ বিশ্লেষণের সমীকরণ তৈরিতে [১] যখন মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহকে চিহ্নিত করা হয় তখন এটা গুরুত্বপূর্ণ যেন সব মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহের লুপ একই দিকে থাকে। এটা সাহায্য করবে ভুল থেকে সুরক্ষা পেতে যখন সমীকরণগুলো লেখা হবে । এই প্রথা মতে সব মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ লুপ তৈরি করবে একই ঘড়ির কাঁটার ঘোরার দিকের মতো দিকে।[২] চিত্র ২ দেখাচ্ছে একই বর্তনীই দেখাচ্ছে যেখানে মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ চিহ্নিত করা আছে।

কারসোফের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সূত্র এবং বিভব সংক্রান্ত সূত্রের পরিবর্তে মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ ব্যবহারের কারণ হলো মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ যে কোন অপ্র্যোজনীয় বিদ্যুৎকে চিহ্নিত করতে পারে যার মূলত উদ্ভব ঘটে কারসোফের বর্তনী সংক্রান্ত সূত্রের মাধ্যমে । মেশ বিশ্লেষণ নিশ্চিত করে সর্বনিম্ন সংখ্যক সমীকরণের মোট বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হওয়ার চেয়ে যা সমস্যাকে সহজ করে।

সমীকরণের গঠন প্রক্রিয়া[সম্পাদনা]

চিত্র ৩: সাধারণ বর্তনী যেখানে মেশ অ্যানালাইসিস ব্যবহার করা হয়েছে

মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহকে চিহ্নিত করার পরে বর্তনীর সব বৈদ্যুতিক প্রবাহকে সমাধান করার জন্য একজনের দরকার প্রতি মেশের বিপরীতে একটা করে সমীকরণ লেখা ।এই সমস্ত সমীকরণ হলো মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহের সম্পূর্ণ লুপে বিভব পতনের যোগফল[২] বিদ্যুৎ উৎস এবং বিভব উৎস ছাড়া বিভব পতন হলো ইলেকট্রনিক উপাদানের বৈদ্যুতিক ইম্পিডেন্স যাকে ঐ লুপের মেশ বিদ্যুৎ দিয়ে গুণ করা হয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ যদি একটি উপাদান বিদ্যমান থাকে ২টি প্রয়োজনীয় মেশের মাঝে, তখন উপাদানের বিভব পতন হবে উপাদানের বৈদ্যুতিক ইম্পিডেন্সকে বর্তমান মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ দিয়ে গুণ করে তা থেকে প্রতিবেশী মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহকে বিয়োগ করে যা থাকবে। (প্রথমে বিয়োগ করতে হবে)[৩]

যদি একটি বিভব উৎস বিদ্যমান থাকে মেশ লুপের মাঝে , উৎসের মাঝে থাকা বিভবকে হয় যোগ অথবা বিয়োগ করা হবে যা নির্ভর করছে যদি এটা বিভব পতন অথবা বিভব উত্থান হয়ে থাকে মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহের দিকে। একটি বিদ্যুৎ উৎসের জন্য যা ২টি মেশের মাঝে নেই, তখন মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ গ্রহণ করবে বিদ্যুৎ উৎসের ধনাত্নক বা ঋণাত্নক মান যা নির্ভর করছে যে যদি মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ বিদ্যুৎ উৎসের একই দিকে থাকে কিনা তার উপর।[২] নিচে দেওয়া সমীকরণগুলো উপরের মতো একই বর্তনীর যা সব বিদ্যুৎ প্রবাহের সমাধান করবে।

একবার যদি সমীকরণ পাওয়া যায়, লিনিয়ার সমীকরণের পদ্ধতি সমাধান করা যেতে পারে লিনিয়ার সমীকরণের সমাধানের যেকোন কৌশল অবলম্বন করে।

বিশেষ অবস্থা[সম্পাদনা]

এখানে ২টি বিশেষ অবস্থার ব্যাপারে বলা হয়েছে যা হলো: সুপার মেশ এবং নির্ভরশীল উৎস।

সুপার মেশ[সম্পাদনা]

চিত্র ৪:সুপারমেশ বিশিষ্ট একটি বর্তনী। সুপার মেশ সংগঠিত হয় যদি বিদ্যুৎ উৎস ২টি প্রয়োজনীয় মেশের মাঝে থাকে।

একটি সুপার মেশ সংগঠিত হয় যখন একটি বিদ্যুৎ উৎস ২টি প্রয়োজনীয় মেশের মাঝে থাকে।সুপার মেশের ব্যবস্থা করতে, প্রথম ব্যাপার হলো মনে করা যে বর্তনীতে কোন বিদ্যুৎ উৎসই নেই।এটা গঠন করে একটি সমীকরণ যেখানে থাকে ২টি মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহ।যখন এই সমীকরণটা তৈরি হয় তখন একটি সমীকরণ দরকার হয় যা ২টি মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহকে সম্পর্কীত করে বিদ্যুৎ উৎসের সাথে।এটা হলো একটি সমীকরণ যেখানে বিদ্যুৎ উৎস সমান হবে একটা মেশ বিদ্যুৎ প্রবাহকে আরেকটা দিয়ে বিয়োগ করলে যা থাকবে। নিচে একটা সাধারণ উদাহরণ দেওয়া হলো সুপার মেশের।[১]

নির্ভরশীল উৎস[সম্পাদনা]

চিত্র ৫: নির্ভরশীল উৎস বিশিষ্ট একটি বর্তনী। ix হলো বিদ্যুৎ প্রবাহ যার ওপর নির্ভরশীল বিভব উৎস নির্ভর করে

একটি নির্ভরশীল উৎস হলো বিদ্যুৎ উৎস বা বিভব উৎস যা বিভব বা বিদ্যুৎ প্রবাহের ওপর নির্ভর করে বর্তনীর অন্য ইলেকট্রিক উপাদানের ওপর।যখন একটি নির্ভরশীল উৎস একটি প্রয়োজনীয় মেশের ওপর, তখন আসলে নির্ভরশীল উৎসকে একটি সাধারণ উৎস হিসেবে দেখা উচিত হবে।মেশ সমীকরণ গঠনের পরে, একটি নির্ভরশীল উৎসের সমীকরণ দরকার হয় যাকে কন্সট্রেইন্ট সমীকরণ বলা হয়ে থাকে।এটা হলো একটা সমীকরণ যা সম্পর্কীত করে নির্ভরশীল উৎসের চলককে বিভব বা বৈদ্যুতিক প্রবাহের সাথে যা ঐ বর্তণীতে উৎসের ওপর নির্ভর করে। নিচে নির্ভরশীল উৎস সম্পর্কীত একটা সোজা উদাহরণ দেয়া হলো ।[১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nilsson, James W., & Riedel, Susan A. (2002). Introductory Circuits for Electrical and Computer Engineering. New Jersey: Prentice Hall.
  2. Lueg, Russell E., & Reinhard, Erwin A. (1972). Basic Electronics for Engineers and Scientists (2nd ed.). New York: International Textbook Company.
  3. Puckett, Russell E., & Romanowitz, Harry A. (1976). Introduction to Electronics (2nd ed.). San Francisco: John Wiley and Sons, Inc.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]