মেনিনজিওমা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেনিনজিওমা
মস্তিষ্কের তুলনামূলক সিটি স্ক্যান, যেখানে মেনিনজিওমার উপস্থিতি প্রকাশিত হয়েছে
বিশেষত্বক্যান্সারবিজ্ঞান, স্নায়ুচিকিৎসাবিজ্ঞান, স্নায়ুশল্যচিকিৎসা উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
লক্ষণনেই, খিচুনী, ডিমনেশিয়া, কথা বলায় সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া, শরীরের এক পার্শ্বে দুর্বলতা[১]
রোগের সূত্রপাতপ্রাপ্তবয়স্ক[২]
প্রকারভেদগ্রেড ১, ২, ৩[২]
ঝুঁকির কারণআয়নিত তেজষ্ক্রিয়তা, পারিবারিক ইতিহাস[৩]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিমেডিক্যাল ইমেজিং[১]
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়হেমাঞ্জিওপেরিসাইটোমা, লিম্ফোমা, শোয়ানোমা, সলিটারি ফাইব্রোস টিউমার, মেটাস্ট্যাসিস[৪]
চিকিৎসাপর্যবেক্ষণ, শল্য চিকিৎসা, রেডিয়েশন থেরাপি[১]
ঔষধঅ্যান্টিকনভালসান্ট, কর্টিকোস্টেরয়েড[১]
আরোগ্যসম্ভাবনাসম্পূর্ণ অপসারণের পর ৯৫% ক্ষেত্রে দশ বছরের মধ্যে টিউমার পুনরায় সৃষ্টি হয় না[৫]
সংঘটনের হার১,০০০ জনে ১ জন (যুক্তরাষ্ট্র)[৩]

মেনিনজিওমা, যা মেনিনজিয়াল টিউমার নামেও পরিচিত, সাধারণত ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়া একটি টিউমার যা মূলত মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের চারপাশে থাকা ঝিল্লি মেনিনেজ থেকে সৃষ্ট। [২] এই রোগের লক্ষণগুলো টিউমারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে এবং টিউমার যখন তার আশেপাশে থাকা টিস্যুর ওপর চাপ প্রয়োগ করে তখন তা প্রকাশ পায়।[৩][৬] অনেক ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণও প্রকাশ পায় না। [১] মাঝে মাঝে খিঁচুনি, ডিমেনশিয়া, কথা বলতে সমস্যা, দৃষ্টির সমস্যা, একপার্শ্বীয় দুর্বলতা, বা মুত্রাশয়ের নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে। [১]

ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে আয়নিত তেজষ্ক্রিয়তার সংস্পর্শ, উদাহরণস্বরূপ রেডিয়েশন থেরাপির সময়। এছাড়াও মেনিনজিওমার পারিবারিক ইতিহাস ও টাইপ ২ নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিসও ঝুঁকি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। [১][৩] ২০১৪ সাল পর্যন্ত গবেষণায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের সাথে এটির কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। [৬] বিভিন্ন ধরনের কোষ থেকে মেনিনজিওমার উৎপত্তি ঘটতে পারে যার মধ্যে অ্যারাকনয়েড কোষও রয়েছে।[১][২] রোগ নির্ণয়ে সিটি স্ক্যান, এমআরআইয়ের মতো মেডিকেল ইমেজিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। [১]

কোনো প্রকার লক্ষণ না থাকলে ধারাবাহিক পর্যায়ক্রমিক পর্যবেক্ষণ-ই যথেষ্ট হতে পারে।[১] যদিও লক্ষণ প্রকাশ পেলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগটি নির্মূল করা সম্ভব।[২] সম্পূর্ণ অপসারণের পর এটির আবারও ফিরে আসার সম্ভাবনা শতকরা ২০ ভাগেরও কম।[১] অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টিউমার অপসারণ করা সম্ভব না হলে রেডিওসার্জারির মাধ্যমেও মেনিনজিওমার চিকিৎসা করার সম্ভব[১] কেমোথেরাপি এখন পর্যন্ত এই রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়নি।[১] মেনিনিজওমার একটি ক্ষুদ্র অংশই দ্রুত বৃদ্ধি পায় যেগুলো শেষ ফলাফল রোগীর জন্য সুখকর হয় না।[২]

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক হাজারে একজন মেনিনজিওমায় আক্রান্ত।[৩] সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেই এই রোগটি দেখা যায়।[২] মস্তিষ্কের টিউমারের মধ্যে প্রায় মেনিনজিওমার হার প্রায় ৩০ শতাংশ। [৪] পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এই রোগে আক্রান্তের হার প্রায় দ্বিগুণ।[৩] ১৬১৪ সালে ফিলিক্স প্ল্যাটার সর্বপ্রথম মেনিনজিওমার উপস্থিতি লিপিবদ্ধ করেন।[৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ferri, Fred F. (২০১৭)। Ferri's Clinical Advisor 2018 E-Book: 5 Books in 1 (ইংরেজি ভাষায়)। Elsevier Health Sciences। পৃষ্ঠা 809। আইএসবিএন 9780323529570। ২০১৭-০৯-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "Adult Central Nervous System Tumors Treatment"National Cancer Institute (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ আগস্ট ২০১৬। ২৮ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. Wiemels, J; Wrensch, M (সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Epidemiology and etiology of meningioma.": 307–14। ডিওআই:10.1007/s11060-010-0386-3পিএমআইডি 20821343পিএমসি 2945461অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. Starr, CJ; Cha, S (২৬ মে ২০১৭)। "Meningioma mimics: five key imaging features to differentiate them from meningiomas.": 722–728। ডিওআই:10.1016/j.crad.2017.05.002পিএমআইডি 28554578 
  5. Goodman, Catherine C.; Fuller, Kenda S. (২০১১)। Pathology for the Physical Therapist Assistant – E-Book (ইংরেজি ভাষায়)। Elsevier Health Sciences। পৃষ্ঠা 192। আইএসবিএন 978-1437708936। ২০১৭-০৯-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. World Cancer Report 2014। World Health Organization। ২০১৪। পৃষ্ঠা Chapter 5.16। আইএসবিএন 978-9283204299 
  7. Joung H. Lee (২০০৮-১২-১১)। Meningiomas: Diagnosis, Treatment, and Outcome। Springer Science & Business Media। পৃষ্ঠা 3–13। আইএসবিএন 978-1-84628-784-8 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]