বিষয়বস্তুতে চলুন

মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ
محمد حمیداللہ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮
মৃত্যু১৭ ডিসেম্বর ২০০২(2002-12-17) (বয়স ৯৪)
ধর্মইসলাম
জাতীয়তাহায়দরাবাদি
নাগরিকত্বহায়দরাবাদ
যুগআধুনিক যুগ
আখ্যাসুন্নি
শিক্ষালয়শাফেয়ি
প্রধান আগ্রহইসলামি আইন, আন্তর্জাতিক আইন, কুরআনের তাফসিরহাদিস
উল্লেখযোগ্য ধারণাইসলামিআন্তর্জাতিক আইন-এর বিকাশ
যেখানের শিক্ষার্থীজামিয়া নিজামিয়া, ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বন বিশ্ববিদ্যালয়, সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়
মুসলিম নেতা
শিক্ষকমনাজির আহসান গিলানী, আবুল ওয়াফা আল আফগানি[]
যাদের প্রভাবিত করেন

মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ (উর্দু: محمد حمیداللہ‎‎; ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮ – ১৭ ডিসেম্বর ২০০২) ছিলেন হায়দরাবাদ রাজ্যের একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত। তিনি ইসলামি জ্ঞান, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেন এবং শত শত প্রবন্ধ লেখেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

[সম্পাদনা]

হামিদুল্লাহের জন্ম হয় হায়দরাবাদ শহরে, যা তৎকালীন হায়দরাবাদ রাজ্যের রাজধানী ছিল (বর্তমানে হায়দরাবাদ, তেলেঙ্গানা, ভারত)। তিনি ছিলেন তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর প্রপিতামহ এবং পিতামহ দুজনই ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন এবং উভয়ে কুরআনের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।[]

হামিদুল্লাহের পিতা মুফতি আবু মোহাম্মদ খলিলুল্লাহ ইসলামি ফিকহের একজন পণ্ডিত ছিলেন। তিনি হায়দরাবাদের নিজাম সরকারের রাজস্ব বিভাগের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এবং হায়দরাবাদে সুদমুক্ত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর পথপ্রদর্শক ছিলেন।[]

হামিদুল্লাহ মাদরাসা নিজামিয়া থেকে কৃতিত্বের সাথে মাওলভি কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে বিএ, এলএলবি এবং এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পরে জার্মানি গমন করেন এবং ১৯৩২ সালে বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.ফিল. ডিগ্রি অর্জন করেন। কিছুদিন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ও উর্দু ভাষায় প্রভাষক হিসেবে কাজ করার পর তিনি ফ্রান্সে যান এবং সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়তে দ্বিতীয় ডক্টরেটের জন্য ভর্তি হন। মাত্র ১১ মাসের মধ্যেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট্‌ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আইন পড়িয়েছেন।[]

পেশাজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৪৮ সালে, হায়দরাবাদের নিজাম মুহাম্মদ হামিদুল্লাহকে জাতিসংঘে হায়দরাবাদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন। ভারতের হায়দরাবাদ সংযুক্তির পর তিনি পাকিস্তান ও ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। ফ্রান্স সরকার তাকে "হায়দরাবাদের শরণার্থী" হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং তিনি নির্বাসিত অবস্থায় প্যারিসে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৭৮ সালে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত তিনি ফ্রান্সের জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা ফেলো হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তিনি নিয়মিতভাবে তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতেন।[]

হামিদুল্লাহ হাদিস গবেষণায় অবদানের জন্য, বহু ভাষায় কুরআন অনুবাদ এবং ফরাসি ভাষায় মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী রচনার জন্য খ্যাত।[][]

১৯৮৫ সালে পাকিস্তান সরকার হামিদুল্লাহকে হিলাল-ই-ইমতিয়াজ সম্মানে ভূষিত করে। তিনি এই পুরস্কারের অর্থ ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ-এর ইসলামি গবেষণা একাডেমিতে দান করেন।[]

পরবর্তী জীবন ও মৃত্যু

[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালে হামিদুল্লাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসনভিলে স্থানান্তরিত হন। তিনি ২০০২ সালের ১৭ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. হামিদুল্লাহ, মুহাম্মদ। "ইসলামি আইন বাইন আল-মামালিক"। খুতবাত-এ-বহাওয়ালপুর। হাফজি বুক ডিপো, দেওবন্দ। পৃষ্ঠা ১৩৮। 
  2. Islahi, Abdul Azim (২০১৪)। Muhammad Hamidullah and His Pioneering Works on Islamic Economics (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 1। 
  3. Hijazi, Abu Tariq (২৮ জুলাই ২০১১)। "07-28-2011"Arab News 
  4. Islahi, Abdul Azim (২০১৪)। Muhammad Hamidullah and His Pioneering Works on Islamic Economics (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 2। 
  5. Islahi, Abdul Azim (২০১৪)। Muhammad Hamidullah and His Pioneering Works on Islamic Economics (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 2,3। 
  6. Hijazi, Abu Tariq (২৮ জুলাই ২০১১)। "07-28-2011"Arab News 
  7. Kademoglu, Mahmud Rifat (১ জুন ২০০৩)। "Remembering Muhammad Hamidullah"The Free Library। Sherwood Park, Alberta, Canada: Center for Islam and Science। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  8. Islahi, Abdul Azim (২০১৪)। Muhammad Hamidullah and His Pioneering Works on Islamic Economics (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 9। 
  9. Hijazi, Abu Tariq (২৮ জুলাই ২০১১)। "07-28-2011"Arab News