মুহাম্মদ জামিল জাম্বেক
মুহাম্মদ জামিল জাম্বেক | |
---|---|
![]() ডানে বসে আছেন: শেখ দাউদ রশিদি, শেখ জামিল জামবেক,শেখ সুলাইমান আর-রাসুলি (ইনিয়াক চান্দুয়াং), শেখ ইব্রাহিম মুসা (ইনিয়াক পারাবেক),শেখ ড. আবদুল্লাহ আহমাদ | |
জন্ম | মোহাম্মদ জামিল জামবেক ১৮৬০ বা ১৮৬২ |
মৃত্যু | ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৪৭ |
জাতীয়তা | ইন্দোনেশীয় |
পেশা | উলামা |
সন্তান | সাদউদ্দিন জামবেক দাহলান জামবেক |
পিতা-মাতা | সালেহ দাতুক মালেকা |
পুরস্কার | বিনতাং মহাপুত্র উত্তমা (১৯৯৫) |
মুহাম্মদ জামিল জাম্বেক (১৮৬০ বা ১৮৬২ - ১৯৪৭), অথবা শেখ মুহাম্মদ জাম্বেক নামেই বেশি পরিচিত ইন্দোনেশিয়ার ইসলামী আধুনিকতাবাদী সংস্কারকদের একজন ছিলেন। তিনি ১৯ শতকের শেষের দিকে মিনাংকাবাউ অঞ্চলের বুকিতিংগি থেকে এসেছিলেন। তিনি একজন জ্যোতির্বিদ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। [১] তার রচনাগুলো মিনাংকাবাউ সমাজে ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে বিচ্যুতির সমালোচনা করত। এটি পশ্চিম সুমাত্রায় ইসলামী আধুনিক আন্দোলনের প্রসারে সাহায্য করেছিল।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]জাম্বেক একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মেছিলেন। তার বাবা সালেহ দাতুক মালেকা কুরাই গ্রামের প্রধান ছিলেন। তার মা ছিলেন সুন্দানিজ। তার শৈশব সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না। তবে তিনি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছিলেন। পরে ২২ বছর বয়সে তার বাবা তাকে ইসলাম শিক্ষার জন্য মক্কায় নিয়ে যান। [২]
মক্কায় থাকাকালীন জাম্বেক বিখ্যাত মিনাংকাবাউ ইসলামী পণ্ডিত আহমাদ খতিব আল-মিনাংকাবাউয়ীর অধীনে শিক্ষালাভ করেন। প্রথমে তিনি যাদুবিদ্যা শেখার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু আল-মিনাংকাবাউয়ী এই বিষয়টির নিন্দা করেন। তিনি মক্কায় থাকার সময় ইসলামী বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা অধ্যয়ন করেন এবং বিশেষ করে তরিকার বিজ্ঞানের গভীর অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি জাবাল আবু কুবাইসে নির্জনতায় প্রবেশ করেন এবং খালিদিয়া-নকশবন্দি তরিকা থেকে তরিকার ডিপ্লোমা লাভ করেন। [২] তিনি জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রেও দক্ষতা অর্জন করেন এবং জ্ঞানের জন্য মক্কায় ব্যাপক স্বীকৃতি অর্জন করেন। তিনি মক্কায় থাকাকালীন মিনাংকাবাউ পণ্ডিতদের এই বিষয়ে শিক্ষা দেন। তার শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন ইব্রাহিম মুসা পারাবেক (তাওয়ালিব পারাবেক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা) এবং আব্বাস আব্দুল্লাহ (তাওয়ালিব পাদাং জাপাং লিমা পুলু কোটা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা)। [১]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯০৩ সালে, জাম্বেক তার স্বদেশে ফিরে আসেন। তিনি তার জ্ঞান সরাসরি সম্প্রদায়ের মধ্যে একেশ্বরবাদ ( তাওহীদ ) এবং তেলাওয়াত ( তাজবিদ ) শেখানো শুরু করেন। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তরিকার শিক্ষক ছিলেন এবং তিনি "তরিকার শেখ" হিসেবে সম্মানিত ছিলেন। সেই সময় পর্যন্ত তিনি দুটি সুরা, সুরাউ টেঙ্গাহ সাওয়াহ এবং সুরাউ কেমাং প্রতিষ্ঠা করেন। উভয়ই সুরাউ ইনিক জাম্বেক নামে পরিচিত। সুরাউতিনি সুরাউ তেঙ্গাহ সাওয়াহ ও সুরাউ কেমাং নামে দুটি সুরাউ তৈরি করেন। এগুলো সুরাউ ইনয়িক জাম্বেক নামে পরিচিত। সেখানে তিনি নতুন শিক্ষার পদ্ধতি চালু করেন। তিনি মালয় ভাষায় নবী মুহাম্মদের জন্মের গল্প বলতেন, যাকে তাবলিগ বলা হয়। এটি আরবিতে মারহাবান পড়ার পরিবর্তে করা হতো। এর উদ্দেশ্য ছিল সব শ্রেণির মানুষের কাছে ইসলাম ছড়ানো।[২]
সময়ের সাথে সাথে তরিকার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়। ১৯০৫ সালে পাদাং পাঞ্জাংয়ে তরিকার বৈধতা নিয়ে একটি সভায় তিনি তরিকার বিরোধিতা করেন। তিনি হাজ্জি আব্বাসের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের মুখোমুখি হন। তিনি "নকশবন্দি তরিকার উৎপত্তি ও এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়" নামে দুই খণ্ডের একটি বই লেখেন। তিনি বলেন, নকশবন্দি তরিকা পারস্য ও ভারতীয় সংস্কৃতির সৃষ্টি এবং কুসংস্কারে ভরা। এ তরিকা ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে দূরে রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি "মেমাহামি তাসাউফ দান তারেকাত" (সুফিবাদ ও তরিকা বোঝা) নামে আরেকটি বই লিখেছিলেন। ইসলামী চিন্তাধারায় নতুনত্ব আনতে বইটি লেখা হয়েছিল। তবে তিনি মিনাংকাবাউ প্রথার বিরোধিতা করেননি। ১৯২৯ সালে, তিনি মিনাংকাবাউ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এর লক্ষ্য ছিল স্থানীয় সংস্কৃতিকে লালন, সম্মান ও গ্রহণ করা। [২] জাপানি দখলদারিত্বের সময়, শেখ মুহাম্মদ জাম্বেক বুকিতিংগিকে কেন্দ্র করে উচ্চ ইসলামিক কাউন্সিল (এমআইটি) প্রতিষ্ঠা করেন। [৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Minang Saisuak #80 - Syekh Muhammad Djamil Djambek" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১২-০৭-২৬ তারিখে Surya Suryadi - Singgalang, March 11, 2012. Retrieved 11-01-2015.
- ↑ ক খ গ ঘ Effendi, Djohan (২০১০)। Pembaruan Tanpa Membongkar Tradisi। Penerbit Buku Kompas। পৃষ্ঠা 48–61, 87–91। আইএসবিএন 978-979-709-473-7।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Si
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি