মিহরিমাহ সুলতান (দ্বিতীয় মাহমুদের কন্যা)
মিহরিমাহ সুলতান | |||||
---|---|---|---|---|---|
জন্ম | তোপকাপি প্রাসাদ, কনস্টান্টিনোপল, উসমানীয় সাম্রাজ্য (বর্তমান ইস্তাম্বুল, তুরস্ক) | ১০ জুন ১৮১২||||
মৃত্যু | ৩ জুলাই ১৮৩৮ ইস্তাম্বুল, উসমানীয় সাম্রাজ্য | (বয়স ২৬)||||
সমাধি | নকশিদিল সুলতানের সমাধি, ফাতিহ, ইস্তাম্বুল | ||||
দাম্পত্য সঙ্গী | মেহমেদ সৈয়দ সাইদ পাশা (বি. ১৮৩৬) | ||||
বংশধর | সুলতানজাদে মেহমেদ আব্দুল্লাহ বে | ||||
| |||||
রাজবংশ | উসমানীয় | ||||
পিতা | দ্বিতীয় মাহমুদ | ||||
মাতা | হোশয়ার কাদিন | ||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
মিহরিমাহ সুলতান (উসমানীয় তুর্কি: مهرماہ سلطان; ১০ জুন ১৮১২ – ৩ জুলাই ১৮৩৮) ছিলেন একজন উসমানীয় শাহজাদী। তিনি সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ এবং তার স্ত্রী হোশয়ার কাদিনের কন্যা। তিনি সুলতান প্রথম আব্দুলমেসিদ এবং আব্দুল আজিজের সৎ বোন ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]মিহরিমাহ সুলতান ১৮১২ সালের ১০ জুন তোপকাপি প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ এবং তার মা ছিলেন হোশয়ার কাদিন।[১][২][৩] জয়নেপ সুলতান নামে তার একটি ছোট বোন ছিল। তার বোন তার চেয়ে তিন বছরের ছোট ছিল এবং তিনি শৈশবে মারা যান।[৪]
মিহরিমাহ এর জন্মের আগে, শাহজাদা বায়েজিদ এবং শাহ সুলতান নামে তার দুইজন ভাই ছিল। তারাও শৈশবে মারা যান।[১]
বিবাহ
[সম্পাদনা]যখন তার বিবাহের সময় হয়েছিল তখন তার মা তাকে বেশ কয়েকজন যুবকের ছবি দেখান এবং তিনি মেহমেদ সৈয়দ সাইদ পাশাকে পছন্দ করেছিলেন।[৫] অতঃপর তার বাবা দ্বিতীয় মাহমুদের আদেশে ১৮৩৫ সালে মেহমেদ সৈয়দ সাইদ পাশার সাথে তার বিবাহ হয়।[১]
জুলিয়া পার্ডো তার বইয়ে মিহরিমাহ এর বিয়ে উপলক্ষে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সম্পর্কে লিখেছেন। যেখানে লেখা ছিল, মিহরিমাহ এর বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে প্রাসাদে কোনো গহনা ছিল না। কারণ তার সৎ বোন সালিহা সুলতানের বিয়ের সময় মিহরিমাহ এর গহনা ও প্রাসাদের অন্যান্য গহনাগুলো তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে গহনাগুলো আর ফেরত দেওয়া হয়নি। তাছাড়া তিনি ঐ গহনাগুলো তেমন পরিধান করতেন না। কারণ তিনি পার্থিব জীবন যাপন করতে খুব গর্বিত ছিলেন। তার বাবা দ্বিতীয় মাহমুদ সেগুলো বিক্রির প্রস্তাব দিলেও তিনি জবাব দেন যে, কেউ শাহজাদীর গহনা কেনার সাহস করবে না। এরপর দ্বিতীয় মাহমুদ নিজেই সেগুলো কেনার প্রস্তাব দিলে সালিহা তার বাবার কথা শুনতে বাধ্য হয়।[৬]
১৮৩৬ সালের ২৮ এপ্রিল তুরস্কের বেসিকতাস ওয়াটারফ্রন্ট প্রাসাদে মিহরিমাহ এর চব্বিশ বছর বয়সে মেহমেদ সৈয়দ সাইদ পাশার সাথে বিয়ে হয়।[৭][৮][৯]
বিবাহের অল্প সময়ের মধ্যেই তার স্বামী মেহমেদ পাশা তার পিতার প্রতি অসন্তুষ্টি হন। এছাড়াও মেহমেদ পাশা তার স্ত্রী এবং শাশুড়িকে কষ্ট দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় মাহমুদ তাকে নির্বাসিত করেন। এই সময়ে মিহরিমাহ এর মা তার মেয়ের স্বামীকে ক্ষমা করার জন্য সরাসরি দ্বিতীয় মাহমুদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। পরে মাহমুদ তার অনুরোধ রাখলেন এবং মেহমেদ পাশাকে ইস্তাম্বুলে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[১০]
সুলতানজাদে মেহমেদ আব্দুল্লাহ বে নামে তার একজন পুত্র ছিলেন। যিনি ১৮৩৮ সালের ৩ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ঐ দিন মারা যান।[১১]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]মিহরিমাহ সুলতান ১৮৩৮ সালের ৩ জুলাই সন্তান প্রসবের কারণে মারা যান। এছাড়াও উনিশ শতকে ইস্তাম্বুলে ছড়িয়ে পড়া যক্ষ্মায় তিনি আক্রান্ত হন।[৭] তাকে ইস্তাম্বুলের ফাতিহে তার দাদির সমাধিতে দাফন করা হয়েছিল।[৭][১২]
কথিত আছে যে, মিহরিমাহ তার বাবাকে এতটাই ভালোবাসতেন যে, তার বাবার যখন মৃত্যু হবে তখন মিহরিমাহ দুনিয়াতে যেন না থাকে। তার ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল, কারণ তিনি মাহমুদের আগে মারা গিয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে মাহমুদ গভীরভাবে শোকাহত হন। পরের বছর ১৮৩৯ সালে তিনিও মারা যান।[১৩][১৪]
মিহরিমাহকে তার মা হোশয়ার কাদিন অত্যন্ত ভালবাসতেন। তার মৃত্যুর পরে তার মা ঘোষণা করেছিলেন যে "আমার শেষ আনন্দ আমার মেয়ের সাথে মারা গেল"।[১৫]
বংশধর
[সম্পাদনা]মিহরিমাহ সুলতানের একজন পুত্র সন্তান ছিল:
- সুলতানজাদে মেহমেদ আবদুল্লাহ বে (৩ জুলাই ১৮৩৮ - ৩ জুলাই ১৮৩৮)।[১১] মৃত সন্তান প্রসব বা কয়েক ঘন্টা পরে মারা যান। তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন তার মা মারা যান।
পূর্বপুরুষ
[সম্পাদনা]মিহরিমাহ সুলতান (দ্বিতীয় মাহমুদের কন্যা)-এর পূর্বপুরুষ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]গ্রন্থসূত্র
[সম্পাদনা]- Hanim, Melek (১৮৭২)। Thirty years in the harem: or, The autobiography of Melek-Hanum, wife of H.H. Kibrizli-Mehemet-Pasha [হেরেমে ত্রিশ বছর: বা, এইচ এইচ কিবরিজলি-মেহেমেত-পাশার স্ত্রী মেলেক-হানুমের আত্মজীবনী]।
- Uluçay, Mustafa Çağatay (২০১১)। Padişahların kadınları ve kızları [সুলতানদের নারী ও কন্যা]। Ankara, Ötüken।
- Sakaoğlu, Necdet (২০০৮)। Bu mülkün kadın sultanları: Vâlide sultanlar, hâtunlar, hasekiler, kadınefendiler, sultanefendiler [এই সাম্রাজ্যের মহিলা সুলতানরা হলেন: হাসেকি সুলতান, হাতুন, হাসেকি]। Oğlak Yayıncılık। আইএসবিএন 978-9-753-29623-6।
- Sunay, Serap (২০১৭)। Sûr-ı Hümayun" Defterine Göre 19. Yüzyıl Saray Düğünlerine Dair Bir Değerlendirme ["সূর-ই হুমায়ুন" নোটবুক অনুসারে ১৯ শতকের প্রাসাদের বিবাহের একটি মূল্যায়ন]।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ Uluçay 2011, পৃ. 191।
- ↑ Sakaoğlu 2008, পৃ. 554।
- ↑ Aslan, Mehmet (১৯৯৯)। Türk edebiyatında manzum surnâmeler: Osmanlı saray düğünleri ve şenlikleri। Atatürk Kültür Merkezi Başkanlığı। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 978-9-751-61187-1।
- ↑ Uluçay 2011, পৃ. 181।
- ↑ Hanim 1872, পৃ. 155।
- ↑ Julia Pardoe, The Sultan and Domestic Manners of the Turks (1837)
- ↑ ক খ গ Uluçay 2011, পৃ. 192।
- ↑ Sakaoğlu 2008, পৃ. 554-5।
- ↑ Sunay 2017, পৃ. 334।
- ↑ Fanny Davis (১৯৮৬)। The Ottoman Lady: A Social History from 1718 to 1918। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 177। আইএসবিএন 978-0-313-24811-5।
- ↑ ক খ Adra, Jamil (২০০৫)। Genealogy of the Imperial Ottoman Family 2005। পৃষ্ঠা 4।
- ↑ Sakaoğlu 2008, পৃ. 554, 557।
- ↑ Uluçay 2011, পৃ. 193।
- ↑ Sakaoğlu 2008, পৃ. 557।
- ↑ Hanim 1872 , p. 155