মির্জা আবু মনসুর
মির্জা আবু মনসুর | |
---|---|
![]() | |
পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ | |
চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৪ – ১৯৮৫ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৪৬ নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম |
মৃত্যু | ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ঢাকা |
সমাধিস্থল | নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
সন্তান | ২ ছেলে ও ১ মেয়ে |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
মির্জা আবু মনসুর (১৯৪৬ — ২১ ডিসেম্বর ২০২৩) বাংলাদেশি শিল্পপতি, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপিএ নির্বাচিত হন।[১]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]মির্জা আবু মনসুর ১৯৪৬ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নানুপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মির্জা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শিল্পপতি ও ১৯৬৫ সালের এমপিএ মির্জা আবু আহমদ ও মাতা তৈয়বা বেগম দম্পতীর তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি।
চট্টগ্রাম মিউনিপ্যাল হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে ইন্টারমিডিয়েট ও ১৯৬৫ সালে একই কলেজ থেকে বিএসসি (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]মির্জা আবু মনসুর মির্জা আবু স্টিল ও মির্জা আবু অ্যান্ড কোম্পানীর স্বত্বাধিকারী ছিলেন।
দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৪-৮৫ মেয়াদে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে।
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]মির্জা আবু মনসুর চট্টগ্রাম মিউনিপ্যাল হাইস্কুলে পড়ার সময় ফেরদৌস আহমেদ কোরেশির হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে ১৯৫৯ সালে স্কুল ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৬৪-৬৫ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নকে হারিয়ে ভিপি নির্বাচিত হন।
তিনি চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন।
১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
১৯৬৭ সালে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হন এবং ১৯৬৯ সালে ফটিকছড়ি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন তিনি।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ২৬ বছর বয়সে এমপিএ নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনে তিনি অ্যাডভোকেট এমএ ফয়েজকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন।
মুক্তিযোদ্ধে অবদান
[সম্পাদনা]মির্জা আবু মনসুর ছিলেন যুদ্ধকালীন এক নম্বর সেক্টরের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক কমান্ডের জোনাল কমান্ডার। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর নির্দেশে দেশের যে ১৪ জন এমপিএ ও এমএনএকে তখন পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য বিহারের চাকুলিয়া সেনা প্রশিক্ষণ কলেজে পাঠানো হয়, মির্জা মনসুর ছিলেন তাদের একজন। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে মেজর হিসেবে নবগঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়মিত কমিশন দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে ধরিয়ে দিতে পাকবাহিনী এক লাখ রুপী পুরস্কার ঘোষণা করে। স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হানাদারমুক্ত করা, স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার, স্বাধীনতার ঘোষণাটি ইংরেজিতে অনুবাদ, আগরতলা থেকে অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন ইতিহাস সৃষ্টিকারী অনেক ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। তার নির্দেশনা ও নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]মির্জা আবু মনসুর ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নানুপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে বিজয়ী সদস্যদের তালিকা"। সংগ্রামের নোটবুক। ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "শিল্পপতি মির্জা আবু মনসুরের ইন্তেকাল"। দৈনিক ইনকিলাব। ২২ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২৫।