মিথিলা (ভারতে প্রস্তাবিত রাজ্য)
মিথিলা | |
---|---|
রাজ্য | |
![]() | |
![]() | |
রাষ্ট্র | ভারত |
অঞ্চল | পূর্ব ভারত |
ভাষা | মৈথিলী |
মিথিলা ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মৈথিলি ভাষাভাষী অঞ্চলগুলো নিয়ে প্রস্তাবিত একটি রাজ্য। মৈথিলি ভাষার নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী লিপি রয়েছে, যা মিথিলাক্ষর নামে পরিচিত। এটি ঐতিহাসিক মিথিলা অঞ্চলের অংশ।[১]প্রস্তাবিত রাজ্যে সমগ্র অঙ্গিকা ও বাজিকা ভাষী জেলাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হবে যেগুলোকে মূলত মৈথিলীর উপভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[২] ভারতের মিথিলার রাজধানী কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। ঐতিহাসিকভাবে মিথিলার রাজধানী শহরগুলো হচ্ছে জনকপুর (নেপাল), বৈশালী, সিমরাউনগড় (নেপাল), রাজনগর (মধুবনি) ও দরভাঙ্গার মধ্যে স্থানান্তরিত হতে থেকেছে; এবং এখন বেগুসরাই রাজধানী শহরের ভূমিকায় রয়েছে।
নেপালের মৈথিলি ভাষী এলাকাতেও পৃথক রাজ্যের জন্য একটি আন্দোলন হয়েছিল যা ২০১৫ সালে নেপালের সংবিধানে প্রদেশ ২-এর গঠন নিশ্চিত করার পরে শেষ হয়।[৩]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
ডঃ লক্ষ্মণ ঝা ও অন্যান্য অনেকেই স্বাধীনতার পরপরই পৃথক মিথিলা রাজ্যের দাবি করেছিলেন এবং বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্রও রাজ্য তৈরির পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।[১]
পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন গঠিত হয়েছে যেমন, মৈথিল মহাসভা ও মিথিলাঞ্চল বিকাশ কংগ্রেস যারা রাজ দরভাঙ্গা থেকে সমর্থন পেয়েছিল।[৪]অখিল ভারতীয় মিথিলা রাজ্য সংঘর্ষ সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ২০০৯ সালে দিল্লিতে একটি বৃহৎ আন্দোলনের মাধ্যমে মিথিলা রাজ্যের দাবিতে বিভিন্ন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।[৫]
রাজনৈতিক সমর্থন[সম্পাদনা]
মিথিলা রাজ্য নির্মাণ সেনা[সম্পাদনা]
- প্রবীণ বিজেপি নেতা, রঙ্গনাথ ঠাকুর, মিথিলা রাজ্য নির্মাণ সেনার সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মিথিলা রাজ্যের সমর্থনে জনসভার আয়োজন করেছেন।
মিথিলা রাজ্য নির্মাণ সেনা ২০১৭ ও ২০২১ সালে তার নেতৃত্বে জনমত বৃদ্ধি ও আন্দোলনের প্রতি সজাগতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি সংকল্প যাত্রাও করেছিল।[৬]
ভারতীয় জনতা পার্টি[সম্পাদনা]
- দারভাঙ্গার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ কীর্তি আজাদ (বর্তমান কংগ্রেস নেতা) মিথিলার সমর্থনে একাধিক ধর্না ও বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন।[৭] সজাগতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি মিথিলায় একটি স্বাক্ষর অভিযানও শুরু করেছিলেন।[৮]
- প্রবীণ বিজেপি নেতা, তারাকান্ত ঝা, বিহার বিধান পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি, মিথিলা রাজ্যের সমর্থন করে জনসভার আয়োজন করেছেন।[৯]
জনতা দল (ইউনাইটেড)[সম্পাদনা]
- ২০১১ সালের নভেম্বরে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও পৃথক মিথিলা রাজ্যের প্রতি তার সমর্থন জানিয়েছেন।[১০][১১]
- জেডিইউ রাজ্য সভাপতি শ্রাবণ চৌধুরী মিথিলার রাজ্যের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন।[১২]
রাষ্ট্রীয় জনতা দল[সম্পাদনা]
- বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী বরাবরই আলাদা মিথিলা রাজ্য গঠনের পক্ষে রয়েছেন।[১৩]
পৃথকীকরণের ন্যায্যতা[সম্পাদনা]
১৯১২ সালে বিহার রাজ্য সৃষ্টির পর থেকেই পৃথক [১৪] রাজ্যের দাবি রয়েছে।
- গঙ্গার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিদ্যমান।
- মিথিলা অঞ্চলের সমস্যা বিহারের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আলাদা।
- এই অঞ্চলের ভাষা মৈথিলীর ন্যায্য মূল্যায়ন তথা স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। ভারতের সংবিধানের ৮ম তফসিলে মৈথিলী সহ ২২টি ভাষার স্বীকৃতি রয়েছে (তবে দেবনাগরী লিপিতে)। বিহারে মৈথিলী এখনও কোনও সরকারী মর্যাদা পায়নি।[১৫]
বাধা ও আপত্তি[সম্পাদনা]
মিথিলা একটি দরিদ্র ও বন্যাপ্রবণ অঞ্চল যা জীবিকা নির্বাহকারী কৃষির উপর নির্ভরশীল, যা পৃথক রাজ্য হিসাবে এর অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাব্যতা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক করে।[১৬]
পৃথক মিথিলার দাবি মূলত দারভাঙ্গা-মধুবনী অঞ্চল থেকে দেখতে পাওয়া যায়, তিরহুত ও সীমাঞ্চলেও সামান্য সমর্থন রয়েছে, তবে অঙ্গিকা ভাষী ভাগলপুর–মুঙ্গের থেকে কার্যত কোন সমর্থন দেখা যায় না। [১৭]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
- মিথিলা, নেপাল
- মৈথিলী ভাষা
- মৈথিলী সাহিত্য
- মৈথিল
- মৈথিলী সঙ্গীত
- মিথিলা চিত্রকলা
- মিথিলা মাখনা
- মিথিলা (অঞ্চল)
- সহরসা
- দারভাঙ্গা
- মৈথিলী (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small States Syndrome in India। পৃষ্ঠা 146। আইএসবিএন 9788170226918। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ L. P. Vidyarthi (১৯৮১)। "Development of Researches in Anthropology in India: A Case Study of Bihar"। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ Gellner, D.; Pfaff-Czarnecka, J. (৬ ডিসেম্বর ২০১২)। Nationalism and Ethnicity in a Hindu Kingdom: The Politics and Culture of contemporary Nepal। পৃষ্ঠা 251। আইএসবিএন 9781136649561। ২২ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small States Syndrome in India। পৃষ্ঠা 148–152। আইএসবিএন 9788170226918। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Demonstration planned in Delhi for separate Mithila state | india | Hindustan Times"। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-১৯।
- ↑ "Archived copy"। Archived from the original on ২৩ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-১৪।
- ↑ "Demand for Mithila state gains momentum, politicians join demonstration at Jantar Mantar"। Post.jagran.com। ২ আগস্ট ২০১১। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২।
- ↑ "Maithili speaking people want own state | patna | Hindustan Times"। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-২১।
- ↑ "Archived copy"। ১৭ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১০।
- ↑ "article"। Post.jagran.com। ১৫ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২।
- ↑ "राज्य पुनर्गठन : व्यापक हो नजरिया « संपादकीय ब्लॉग"। Jagraneditorial.jagranjunction.com। ২৫ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২।
- ↑ "जेडी(यू) ने पृथक मिथिला राज्य की मांग का समर्थन किया- Navbharat Times"। Navbharat Times। ২২ জানুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২।
- ↑ "Archived copy"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১০।
- ↑ "Demand for Mithilanchal: Why carving out a new state from Bihar may backfire"। India Today।
- ↑ "Who are those demanding a separate Mithila state from Bihar?"। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ Darpan Singh (২৩ আগস্ট ২০২২)। "Demand for Mithilanchal: Why carving out a new state from Bihar may backfire"। India Today।
- ↑ Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small State Syndrome in India। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 9788170226918। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২২।
টেমপ্লেট:উত্তর ভারতের ঐতিহাসিক অঞ্চলসমূহ