মিথিলা (ভারতে প্রস্তাবিত রাজ্য)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মিথিলা
রাজ্য
মিথিলার অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
মিথিলার অবস্থান
মিথিলার অবস্থান
রাষ্ট্রভারত
অঞ্চলপূর্ব ভারত
ভাষামৈথিলী

মিথিলা ভারতের বিহারঝাড়খণ্ডের মৈথিলি ভাষাভাষী অঞ্চলগুলো নিয়ে প্রস্তাবিত একটি রাজ্য। মৈথিলি ভাষার নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী লিপি রয়েছে, যা মিথিলাক্ষর নামে পরিচিত। এটি ঐতিহাসিক মিথিলা অঞ্চলের অংশ।[১]প্রস্তাবিত রাজ্যে সমগ্র অঙ্গিকা ও বাজিকা ভাষী জেলাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হবে যেগুলোকে মূলত মৈথিলীর উপভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[২] ভারতের মিথিলার রাজধানী কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। ঐতিহাসিকভাবে মিথিলার রাজধানী শহরগুলো হচ্ছে জনকপুর (নেপাল), বৈশালী, সিমরাউনগড় (নেপাল), রাজনগর (মধুবনি) ও দরভাঙ্গার মধ্যে স্থানান্তরিত হতে থেকেছে; এবং এখন বেগুসরাই রাজধানী শহরের ভূমিকায় রয়েছে।

নেপালের মৈথিলি ভাষী এলাকাতেও পৃথক রাজ্যের জন্য একটি আন্দোলন হয়েছিল যা ২০১৫ সালে নেপালের সংবিধানে প্রদেশ ২-এর গঠন নিশ্চিত করার পরে শেষ হয়।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ডঃ লক্ষ্মণ ঝা ও অন্যান্য অনেকেই স্বাধীনতার পরপরই পৃথক মিথিলা রাজ্যের দাবি করেছিলেন এবং বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্রও রাজ্য তৈরির পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।[১]

পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন গঠিত হয়েছে যেমন, মৈথিল মহাসভা ও মিথিলাঞ্চল বিকাশ কংগ্রেস যারা রাজ দরভাঙ্গা থেকে সমর্থন পেয়েছিল।[৪]অখিল ভারতীয় মিথিলা রাজ্য সংঘর্ষ সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ২০০৯ সালে দিল্লিতে একটি বৃহৎ আন্দোলনের মাধ্যমে মিথিলা রাজ্যের দাবিতে বিভিন্ন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।[৫]

রাজনৈতিক সমর্থন[সম্পাদনা]

মিথিলা রাজ্য নির্মাণ সেনা[সম্পাদনা]

মিথিলা রাজ্য নির্মাণ সেনা ২০১৭ ও ২০২১ সালে তার নেতৃত্বে জনমত বৃদ্ধি ও আন্দোলনের প্রতি সজাগতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি সংকল্প যাত্রাও করেছিল।[৬]

ভারতীয় জনতা পার্টি[সম্পাদনা]

  • দারভাঙ্গার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ কীর্তি আজাদ (বর্তমান কংগ্রেস নেতা) মিথিলার সমর্থনে একাধিক ধর্না ও বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন।[৭] সজাগতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি মিথিলায় একটি স্বাক্ষর অভিযানও শুরু করেছিলেন।[৮]
  • প্রবীণ বিজেপি নেতা, তারাকান্ত ঝা, বিহার বিধান পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি, মিথিলা রাজ্যের সমর্থন করে জনসভার আয়োজন করেছেন।[৯]

জনতা দল (ইউনাইটেড)[সম্পাদনা]

  • ২০১১ সালের নভেম্বরে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও পৃথক মিথিলা রাজ্যের প্রতি তার সমর্থন জানিয়েছেন।[১০][১১]
  • জেডিইউ রাজ্য সভাপতি শ্রাবণ চৌধুরী মিথিলার রাজ্যের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন।[১২]

রাষ্ট্রীয় জনতা দল[সম্পাদনা]

পৃথকীকরণের ন্যায্যতা[সম্পাদনা]

১৯১২ সালে বিহার রাজ্য সৃষ্টির পর থেকেই পৃথক [১৪] রাজ্যের দাবি রয়েছে।

  • গঙ্গার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিদ্যমান।
  • মিথিলা অঞ্চলের সমস্যা বিহারের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আলাদা।
  • এই অঞ্চলের ভাষা মৈথিলীর ন্যায্য মূল্যায়ন তথা স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। ভারতের সংবিধানের ৮ম তফসিলে মৈথিলী সহ ২২টি ভাষার স্বীকৃতি রয়েছে (তবে দেবনাগরী লিপিতে)। বিহারে মৈথিলী এখনও কোনও সরকারী মর্যাদা পায়নি।[১৫]

বাধা ও আপত্তি[সম্পাদনা]

মিথিলা একটি দরিদ্র ও বন্যাপ্রবণ অঞ্চল যা জীবিকা নির্বাহকারী কৃষির উপর নির্ভরশীল, যা পৃথক রাজ্য হিসাবে এর অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাব্যতা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক করে।[১৬]

পৃথক মিথিলার দাবি মূলত দারভাঙ্গা-মধুবনী অঞ্চল থেকে দেখতে পাওয়া যায়, তিরহুতসীমাঞ্চলেও সামান্য সমর্থন রয়েছে, তবে অঙ্গিকা ভাষী ভাগলপুর–মুঙ্গের থেকে কার্যত কোন সমর্থন দেখা যায় না। [১৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small States Syndrome in India। পৃষ্ঠা 146। আইএসবিএন 9788170226918। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  2. L. P. Vidyarthi (১৯৮১)। "Development of Researches in Anthropology in India: A Case Study of Bihar"। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  3. Gellner, D.; Pfaff-Czarnecka, J. (৬ ডিসেম্বর ২০১২)। Nationalism and Ethnicity in a Hindu Kingdom: The Politics and Culture of contemporary Nepal। পৃষ্ঠা 251। আইএসবিএন 9781136649561। ২২ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭ 
  4. Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small States Syndrome in India। পৃষ্ঠা 148–152। আইএসবিএন 9788170226918। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  5. "Demonstration planned in Delhi for separate Mithila state | india | Hindustan Times"। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-১৯ 
  6. "Archived copy"। Archived from the original on ২৩ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-১৪ 
  7. "Demand for Mithila state gains momentum, politicians join demonstration at Jantar Mantar"। Post.jagran.com। ২ আগস্ট ২০১১। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২ 
  8. "Maithili speaking people want own state | patna | Hindustan Times"। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-২১ 
  9. "Archived copy"। ১৭ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১০ 
  10. "article"। Post.jagran.com। ১৫ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২ 
  11. "राज्य पुनर्गठन : व्यापक हो नजरिया « संपादकीय ब्लॉग"। Jagraneditorial.jagranjunction.com। ২৫ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২ 
  12. "जेडी(यू) ने पृथक मिथिला राज्य की मांग का समर्थन किया- Navbharat Times"Navbharat Times। ২২ জানুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১২ 
  13. "Archived copy"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১০ 
  14. "Demand for Mithilanchal: Why carving out a new state from Bihar may backfire"। India Today। 
  15. "Who are those demanding a separate Mithila state from Bihar?"। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  16. Darpan Singh (২৩ আগস্ট ২০২২)। "Demand for Mithilanchal: Why carving out a new state from Bihar may backfire"India Today 
  17. Kumāra, Braja Bihārī (১৯৯৮)। Small State Syndrome in India। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 9788170226918। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ 

টেমপ্লেট:উত্তর ভারতের ঐতিহাসিক অঞ্চলসমূহ