মিউনিখ (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মিউনিখ
পরিচালকস্টিভেন স্পিলবার্গ
প্রযোজক
চিত্রনাট্যকার
উৎসজর্জ জোনাস কর্তৃক 
ভেনজিয়েন্স
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারজন উইলিয়ামস
চিত্রগ্রাহকজানুস কামিনস্কি
সম্পাদকমাইকেল কান
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশক
মুক্তি
  • ২৩ ডিসেম্বর ২০০৫ (2005-12-23) (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
স্থিতিকাল১৬৩ মিনিট
দেশ
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
  • কানাডা
ভাষা
নির্মাণব্যয়$৭০ মিলিয়ন[১]
আয়$১৩০.৪ মিলিয়ন[১]

মিউনিখ হলো ২০০৫সালের একটি ইতিহাস ভিত্তিক চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। এটি লিখেছেন টনি কুশনার এবং এরিক রথ। এটি ভেনগিন্স বই এর উপর ভিত্তি করে তৈরি।

মিউনিখ ৫টি একাডেমি এওয়ার্ডস এর মনোনয়ন পায়ঃ সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক, সেরা চিত্রনাট্য, সেরা এডিটিং, সেরা স্কোর। চলচ্চিত্রটি সারা বিশ্বে $১৩০ মিলিয়ন আয় করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এটি মাত্র $৪৭ মিলিয়ন আয় করে, যার কারণে এটি আঞ্চলিকভাবে স্পিলবার্গের সর্বনিম্ন আয় করা সিনেমা।[২] ২০১৭সালে, দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস এটিকে ২১শতকের এখন পর্যন্ত সেরা চলচ্চিত্র বলে তথ্য প্রকাশ করে।[৩]

কাহিনীসংক্ষেপ[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্রের দৃশ্যে উপস্থিত ১৯৭২ সালের দল। বাম থেকে: আবনার কোফম্যান, রবার্ট, কার্ল, হান্স এবং স্টিভ।

১৯৭২সালের মিউনিখ অলিম্পিকে পেলেস্তানের জঙ্গি দল ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর ইসরাইল অলিম্পিক দলের এগারো জন সদস্যকে হত্যা করে। আবনার কোফম্যান, একজন জার্মান গোয়েন্দা যাকে এই ঘটনায় নিযুক্ত পেলেস্তানীদের খুজেঁ বের করার জন্য নিযুক্ত করা হয়। তার দলে সারা বিশ্ব থেকে চারজন ইহুদী সদস্যকে নিযুক্ত করা হয়ঃ দক্ষিণ আফ্রিকার গাড়ি চালক স্টিভ, বেলজিয়ামের খেলনা নির্মাতা এবং বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ রবার্ট, ইসরায়েলের সাবেক সেনা সদস্য কার্ল এবং ডেনিশ হান্স। তাদেরকে নানা তথ্য প্রদান করে ফ্রেঞ্চ লুইস।

রোমে, দলটি ওয়ায়েল জাইটারকে গুলি করে এবং হত্যা করে, যিনি একজন কবি। প্যারিসে, তারা মাহমুদ হামশারির ঘরে একটি বোম স্থাপন করে। সাইপ্রাসে, তারা হোসেন আব্দে আল চির হোটেল কক্ষকে বিস্ফোরিত করে।

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

রোটেন টমেটোস এ, ২০৬জনের পর্যালোচনায় ৭৮% গ্রহণযোগ্যতা রেটিং পায়, যা গড়ে ৭.৪৪/১০ রেটিং। সাইটটিতে বলা হয়, "মিউনিখ এটির লক্ষ্যেে পৌঁছাতে পারবে না, কিন্তু এটির রোমাঞ্চকর ও রাজনৈতিক কাহিনীর জন্য এটি দেখা যায়"।[৪]রজার এবার্ট প্রশংসা করে বলেন, "এই চলচ্চিত্রেে স্পিলবার্গ নাটকীয়ভাবে সংলাপ প্রদর্শন করেছন, যা অতর্কযোগ্যকে তর্কযোগ্য করেছে।"[৫][৬] তিনি ২০০৫সালে এটিকে তার সেরা দশের তালিকায় ৩নাম্বারে স্থান দিয়েছেন।[৭] জেমস বেরার্ডিনেল্লি লিখেছেন, "মিউনিখ চোখ খুলে দেওয়ার একটি চলচ্চিত্র যেটি কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, উন্নত চরিত্রকে প্রদর্শন করে এবং আমাদেরকে সবসময় উত্তেজনায় রাখে।" তিনি এটিকে বছরের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে খ্যাত করেন।[৮] ২০০৫সালের এটিই একমাত্র চলচ্চিত্র ছিল যেটিকে বেরার্ডিনেল্লি ৪তারকা প্রদান করেছিলেন,[৯] এবং তিনি তার সর্বকালের সেরা ১০০ এর তালিকায় এটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন।[১০]

ভ্যারাইটি এর পর্যালোচক টড ম্যাককার্থি মিউনিখকে সুন্দরভাবে তৈরি চলচ্চিত্র বলেন।

সেরা দশের তালিকা[সম্পাদনা]

মিউনিখ চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন সমালোচকদের দ্বারা সেরা দশ তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়েছিলো।[১১]

  • ১ম – ওয়েন গ্লিবারমেন, এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি
  • ১ম – জেমস বেরার্ডিনেলি, রিলভিউস
  • ১ম – ডেভিড এডেলস্টেইন, স্লেইট
  • ২য় – উইলিয়াম আর্নল্ড, সিটল পোস্ট-ইন্টেলিজেন্সার
  • ২য় – স্কট টোবিয়াস, দ্যা এ.বি. ক্লাব
  • ৩য় – রজার এবার্ট, শিকাগো সান-টাইমস
  • ৪র্থ – রিচার্ড রোপার, এবার্ট এন্ড রোপার[১২]
  • ৪র্থ – ক্লোডিয়া পুইগ, ইউএসএ টুডে
  • ৫ম – পিটার ট্রেবার্স, রোলিং স্টোন
  • ৫ম – লিজা স্কারজবুম, এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি
  • ৫ম – রিচার্ড সিকেল, টাইম
  • ৫ম – কিম্বার্লি জোনস, অস্টিন ক্রোনিকল
  • ৫ম – টাই বুর, বস্টোন গ্লোব
  • ৫ম – কেনেথ তুরান, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস
  • ৭ম – সক্ট ফাউন্ডাস, এল.এ. উইকলি
  • ৮ম – ডেভিড আন্সেন, নিউজউইক
  • ৮ম – স্টিভ ডেভিস, অস্টিন ক্রোনিকল
  • ৯ম – ক্রিস কাল্টেনবাচ, বালটিমোর সান
  • ১০ম – মাইকেল উইলমিংটন, শিকাগো ট্রিবিউন
  • ১০ম – তাশা রবিনসন, দ্যা এ.বি. ক্লাব
  • ১০ম – এ.ও. স্কট, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
  • সেরা ১০ (বর্ণানুক্রমে তালিকাভুক্ত) – ক্যারি রিকি এবং স্টিভেন রিয়া, ফিলাডেলফিয়া ইনকুইরার
  • সেরা ১০ (বর্ণানুক্রমে তালিকাভুক্ত) - মানোহলা ডার্গিস, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

সমালোচনা[সম্পাদনা]

কিছু সমালোচক ইসরায়েলের গুপ্তঘাতকদের জঙ্গির সাথে তুলনা করায় চলচ্চিত্রটির সমালোচনা করেছেন।[১৩] লিওন উইসেলটার দ্যা নিউ রিপাবলিক এ লিখেছেন, ...খারাপ, 'মিউনিখ' সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে তুলে ধরেছে, বা এটি দুটি ঘটনাকে একই মনে করেছে[১৪]

ঐতিহাসিক সত্যতা[সম্পাদনা]

যদিও মিউনিখ কাল্পনিক একটি চলচ্চিত্র, কিন্তু এই চলচ্চিত্র ১৯৭০দশকের কিছু বাস্তব ঘটনা ও আসল লোকদের প্রদর্শন করে। ইসরায়েলির দিক থেকে, এই চলচ্চিত্রে প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেইর কে প্রদর্শন করে।

ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর এর সদস্যদের নাম এবং মৃত্যুও চলচ্চিত্রে অনেকটাই বাস্তবিক।

গান[সম্পাদনা]

মিউনিখ
জন উইলিয়ামস
কর্তৃক চলচ্চিত্র স্কোর
মুক্তির তারিখডিসেম্বর ২৭, ২০০৫
শব্দধারণের সময়২০০৫
স্টুডিওসনি পিকচার্স স্টুডিওস
ঘরানাগান
দৈর্ঘ্য৬২:৩৭
সঙ্গীত প্রকাশনীডেক্কা
প্রযোজকজন উইলিয়ামস
জন উইলিয়ামস কালক্রম
মেমোইরস অব গেইশা (গান)
(২০০৫)
মিউনিখ
(২০০৫)
ইন্ডিয়ানা জোনস এন্ড দ্যা কিংডম অব দ্যা ক্রিশ্চাল স্কাল (গান)
(২০০৮)

পুরস্কার[সম্পাদনা]

এওয়ার্ড শ্রেণিবিভাগ বিষয় ফলাফল
এএসিটিএ এওয়ার্ড
(এএফআই এওয়ার্ডস)
অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম ইনস্টিটিউট সেরা অভিনেতা এওয়ার্ড এরিক ব্যানা মনোনীত
একাডেমি এওয়ার্ডস সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ মনোনীত
সেরা পিকচার স্টিভেন স্পিলবার্গ, ক্যাথলিন কেন্নেডি (প্রযোজক) এবং ব্যারী মেন্ডেল মনোনীত
সেরা চিত্রনাট্য টনি কুশনার এবং এরিক রথ মনোনীত
সেরা অরিজিনাল স্কোর জন উইলিয়ামস মনোনীত
সেরা ফিল্ম এডিটিং মাইকেল কান মনোনীত
আমেরিকান সিনেমা এডিটর্স সেরা এডিটেড চলচ্চিত্র - নাটকীয় মনোনীত
সেন্ট্রাল ওহাইও ফিল্ম ক্রিটিকস এসোসিয়েশন এওয়ার্ড

Screটনি|সেরা এনসেম্বল কাস্ট

বিজয়ী
ক্রিটিকস চয়েজ মুভি এওয়ার্ড সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ মনোনীত
ডিরেক্টর্স গিল্ড অব আমেরিকা এওয়ার্ড অসাধারণ পরিচালনা - চলচ্চিত্র মনোনীত
এম্পাইয়ার এওয়ার্ডস সেরা রোমাঞ্চকর স্টিভেন স্পিলবার্গ, ক্যাথলিন কেন্নেডি, ব্যারি মেন্ডেল, কোলিন উইলসন মনোনীত
গোল্ডেন গ্লোব এওয়ার্ড সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ মনোনীত
সেরা চিত্রনাট্য টনি কুশনার, এরিক রথ মনোনীত
গোল্ডেন রিল এওয়ার্ডস চলচ্চিত্রের সাউন্ড এডিটিং মনোনীত
গোল্ডেন ট্রেইলার এওয়ার্ডস ট্রেইলার অব দ্যা ইয়ার মনোনীত
গ্র্যামী এওয়ার্ড মোশন পিকচারের জন্য সেরা স্কোর সাউন্ডট্র্যাক এলবাম,
টেলিভিশন বা অন্যান্য মাধ্যম
জন উইলিয়ামস মনোনীত
কানসাস সিটি ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল এওয়ার্ড সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ বিজয়ী
সেরা চলচ্চিত্র স্টিভেন স্পিলবার্গ, ক্যাথলিন কেন্নেডি, ব্যারি মেন্ডেল, কোলিন উইলসন বিজয়ী
সেরা চিত্রনাট্য টনি কুশনার, এরিক রথ বিজয়ী
অনলাইন ফিল্ম ক্রিটিকস সোসাইটি এওয়ার্ডস সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ মনোনীত
সেরা পিকচার স্টিভেন স্পিলবার্গ, ক্যাথলিন কেন্নেডি, ব্যারি মেন্ডেল, কোলিন উইলসন মনোনীত
সেরা চিত্রনাট্য টনি কুশনার, এরিক রথ মনোনীত
সেরা অরিজিনাল স্কোর জন উইলিয়ামস মনোনীত
সেরা এডিটিং মাইকেল কাব মনোনীত
ওয়াশিংটন ডিসি এরিয়া ফিল্ম ক্রিটিকস এসোসিয়েশন এওয়ার্ডস সেরা পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ বিজয়ী
সেরা চলচ্চিত্র স্টিভেন স্পিলবার্গ, ক্যাথলিন কেন্নেডি, ব্যারি মেন্ডেল, কোলিন উইলসন বিজয়ী
সেরা চিত্রনাট্য টনি ক্রুশনার, এরিক রথ মনোনীত
সেরা সহ-অভিনেতা জিয়োফ্রে রাশ মনোনীত
ওয়ার্ল্ড সাউন্ডট্র্যাক একাডেমি এওয়ার্ড সেরা অরিজিনাল সাউন্ডট্র্যাক জন উইলিয়ামস মনোনীত

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Munich (2005)"Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৫ 
  2. "Steven Spielberg"Box Office Mojo 
  3. Dargis, Manohla; Scott, A.O.। "The 25 Best Films of the 21st Century...So Far"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৭ 
  4. "Munich (2005)"Rotten TomatoesFandango। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৭, ২০১৯ 
  5. Ebert, Roger (২৫ ডিসেম্বর ২০০৫)। "A telephone call with Spielberg"Chicago Sun-Times। ১২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  6. Ebert, Roger (২২ ডিসেম্বর ২০০৫)। "Reviews: Munich"Chicago Sun-Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  7. Ebert, Roger (১৮ ডিসেম্বর ২০০৫)। "Ebert's Best 10 Movies of 2005"Chicago Sun-Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  8. Berardinelli, James। "Munich (United States, 2005)"Reelviews। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  9. "4 Stars in 2005"Reelviews। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  10. "James Berardinelli's All-Time Top 100"Reelviews। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৫ 
  11. "Archived copy"। ২০০৭-১২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-১৪ 
  12. https://www.innermind.com/misc/e_r_top.htm
  13. Ain, Stewart (ডিসেম্বর ১৬, ২০০৫)। "'Munich' Refuels Debate Over Moral Equivalency"The Jewish Week। অক্টোবর ৯, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৬, ২০০৭ 
  14. Wieseltier, Leon (ডিসেম্বর ১৯, ২০০৫)। "Hits"। The New Republic233 (4,744): 38। 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • গার্লিং, রিচার্ড (জানুয়ারি ১৫, ২০০৬)। "A Thirst for Vengeance: The Real Story behind Munich"The Sunday Times। London। অক্টোবর ২, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৬, ২০১২ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]