মালয়েশিয়া–রাশিয়া সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মালয়েশিয়া–রাশিয়া সম্পর্ক
মানচিত্র Malaysia এবং Russia অবস্থান নির্দেশ করছে

মালয়েশিয়া

রাশিয়া

মালয়েশিয়া–রাশিয়া সম্পর্ক (রুশ: Российско-малазийские отношения; মালে হু-বানগান মালয়েশিয়া—রাশিয়া) হল মালয়েশিয়া এবং রাশিয়া রাষ্ট্রদয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। এপ্রিল, ১৯৬৮ সাল থেকে কুয়ালালামপুরে রাশিয়ার এবং ১৯৬৮ সালের মস্কোতে মালয়েশিয়ার দূতাবাস রয়েছে।[১][২]

কূটনৈতিক বন্ধন[সম্পাদনা]

মস্কোতে অবস্থিত মালয়েশিয়ার দূতাবাস

১৯৬৭ সালের ৩রা এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়ন মালয়েশিয়ার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। সেই সময়েই একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৬৭ সালের নভেম্বর মাসে সোভিয়েত ট্রেড রিপ্রেজেন্টেশান স্থাপিত হয়। ১৯৭০ সালে সোভিয়েত শিক্ষার্থীদের প্রথম দল মালে পড়তে মালায়া বিশ্ববিদ্যালয় আসে। দুই দেশের মধ্যে ১৯৭২ সালের ৪ অক্টোবর, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৮০ এর পুরো দশক জুড়ে আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধকালীন মালয়েশিয়া আফগানিস্তানের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়। তবে এই দ্বন্দ্ব শেষে মস্কো এবং কুয়ালালামপুরের মধ্যকার সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হয়। এরপর থেকেই দুই দেশ ঐতিহাসিক বিবাদ ভুলে গিয়ে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক বন্ধুত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করছে।

মিখাইল গোরবাচেভ ১৯৮৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। প্রাক্তন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মদ গোরবাশেভের সাথে ঘন ঘন সাক্ষাৎ করেন। ২০০২ সাকে নাহাথির মস্কোতে এর প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর সম্পন্ন করেন মালয়েশিয়া জাতিসংঘ এবং ইসরায়েল রাশিয়ার জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে। তিনি রাষ্ট্রপতি ভলাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেন। সেইসাথে অন্যান্য সার্বভৌম রাষ্ট্রে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিপরীতেও স্থান নেন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

মালয়েশিয়া ও রাশিয়া - দুই রাষ্ট্রই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সিআইএস অঞ্চলে রাশিয়ার শীর্ষ বাণিজ্যিক সহযোগীতে পরিণত হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। ২০০৭ সালে রাশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১,৯০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যেখানে ২০০৬ সালে ছিল ১,১৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রাশিয়ার রপ্তানিকৃত দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে রাসায়নিক সার এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ, লোহা, ধাতব পদার্থ, পুরানো বিমানের সামগ্রী ইত্যাদি প্রধান। আর রাশিয়ার আমদানি পণ্যের মধ্যে গৃহস্থালী সামগ্রী, পাম তেল এবং পাম তেলজাতীয় দ্রব্য, প্লাস্টিক, কোকোয়া পাউডার, কোকোয়া বাটার প্রধান। ২০০২ সালের জুলাই মাসে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী পাম তেল রাশিয়ায় সরবরাহ করা হয়।[৩]

২০০০ সালে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক সহযোগীতা চুক্তি ও ১৯৮৭ সালের দ্বৈত রাজস্ব চুক্তির মাধ্যমেই এ দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সংঘটিত হয়ে থাকে। ২০০৫ সালে দুই দেশের চেম্বার অব কমার্স কর্তৃক স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমেও বাণিজ্য এগিয়ে যাচ্ছে।[৩]

মহাকাশ অভিযান[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের ১৯শে মে মালয়েশিয়ার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রয়োগ মন্ত্রী জামালউদ্দিন জার্জিস ফাইজ খালেদের সাথে মস্কোতে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া প্রথম মালয়েশিয়ান নভোচারীর নাম ঘোষণা করেন। এই বিজ্ঞানীরা মহাকাশে ক্যান্সার কোষ, ব্যাকটেরিয়া এবং প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করেন।

২০০৭ সালে মালয়েশিয়া এবং রাশিয়া আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথম মালয়েশিয়ান নভোচারীকে পাঠায়। মালয়েশিয়ান ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সি এবং রাশিয়ান ফেডেরাল স্পেস এজেন্সির (রসকসমস) জন্য মহাকাশচারী প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে পাঠানো হয় তাদের। এটি একটি সরকার-থেকে-সরকার প্রকল্প ছিল। একই চুক্তিতে রয়াল মালয়েশিয়ান এয়ার ফোর্সের জন্য সুখোই সু-৩০এমকেএম বহুপ্রকার কার্যসম্পাদনে সক্ষম এয়ারক্র্যাফট ক্রয় করা হয়। এটি সফলও হয়, কারণ শেইখ মুজাফফর সুকোর প্রথম মালয়েশীয় হিসেবে মহাকাশে যেতে সক্ষম হন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" Малайзия (রুশ ভাষায়)। Ministry of Foreign Affairs of Russia। ১৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০০৮ 
  2. "Welcome To The Official Website of Embassy of Malaysia, Moscow"Ministry of Foreign Affairs of Malaysia। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০০৮ 
  3. "Short history of Russia's diplomatic relations with Malaysia"। ১৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মালয়েশিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক টেমপ্লেট:রাশিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক