মারিয়াম বেহরুজি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মারিয়াম বেহরুজি
ইরানি আইনসভার সদস্য
কাজের মেয়াদ
২৮ মে ১৯৮০ – ২৮ মে ১৯৯৬
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৪৫
তেহরান, ইরান
মৃত্যু১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২[১]
জাতীয়তাইরানি
রাজনৈতিক দলজয়নব সোসাইটি

মারিয়াম বেহরুজি (১৯৪৫-২০১২) ইরানি আইনসভার সদস্য ছিলেন।১৯৮০ সালে দেশটির প্রথম আইনসভা নির্বাচনে চারজন নারীর সাথে তিনি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানি আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইরানি আইনসভায় নারী বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি নারীশিক্ষা নিয়েও কাজ করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মারিয়াম বেহরুজি ১৯৪৫ সালে তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। পনের বছর বয়সে তার বিয়ে হলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। তার এক ছেলে ইরাক-ইরান যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুরু করার পর, তিনি ইরানি নারীদের মাঝে কুরআন বিষয়ক শিক্ষাদানে নিয়োজিত হন। তিনি ইরানের তৎকালীন শাসক মোহাম্মদ রেজা পাহলভির বিরুদ্ধে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের দরুন ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তাকে কারান্তরীণ করে রেখেছিল তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী।[২]

১৯৮০ সালে তিনি সহ চারজন নারী দেশটির প্রথম আইনসভা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৩] তিনি ইরানি আইনসভায় নারী বিষয়ক ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন।[৪] তিনি মূলত তালাক আদালত নিয়ে কাজ করেছেন, কেননা দেশটির তৎকালীন তালাক আদালতের নীতি কিছুটা পুরুষবান্ধব মনে হয়েছিল তার কাছে। তিনি দেশটির আইনসভায় নারী বিষয়ক কমিটি গঠন নিয়েও কাজ করেছেন, যদিও সেটা প্রয়োজনীয় সমর্থনের অভাবে গঠন করা হয়েছিল না।[২]

মারিয়াম বেহরুজি প্রথম আইনসভায় নির্বাচিত দুজন নারীর সাথে দ্বিতীয় আইনসভাতেও নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৫]

তিনি ১৯৮৬ কিংবা ১৯৮৭ সালে দেশটিতে জয়নব সমাজ নামের এক নারীবান্ধব রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। দলটি নারী বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করত।[২][৬]

১৯৯১ সালে দেশটির আইনসভায় তিনি নয়জন নারীর সাথে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি দেশটির সব সংসদীয় কমিটিতে ন্যূনতম একজন নারী অন্তর্ভুক্তকরণ নিয়ে কাজ করেছিলেন এবং সরকারি চাকরিতে বিশ বছর পর নারীদের স্বেচ্ছা অবসরগ্রহণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছিলেন।[২]

১৯৯৬ সালে দেশটির আইনসভায় তিনি নির্বাচিত না হলেও তার বহুল আকাঙ্ক্ষিত নারী বিষয়ক সংসদীয় কমিটি দেশটির আইনসভা কর্তৃক অনুমোদন পায়।[২]

তিনি এরপর নারীদের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে থাকেন। তিনি সর্বক্ষেত্রে নারী পুরুষের একত্রে কাজ করার পক্ষপাতী ছিলেন।[৭] তার অবদানে দেশটির নারীরা আবারো আইন নিয়ে পড়ার সুযোগ পায় দেশটিতে।[২]

মারিয়াম বেহরুজি ইরানিয়ান উইমেন্স ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি তেহরানের শহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন।[২]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "مریم بهروزی فوت کرد"Farda News (Persian ভাষায়)। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২। ১৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৭ 
  2. Rappaport, Helen (২০০১)। "Behruzi, Mariam"। Encyclopedia of Women Social Reformers। Santa Barbara, California: ABC-CLIO, Inc.। পৃষ্ঠা 65–66। আইএসবিএন 1-57607-581-8 
  3. Gheytanchi, Elham (২০০০)। "Chronology of Events Regarding Women in Iran since the Revolution of 1979"Iran Chamber Society 
  4. Paidar, Parvin (১৯৯৭)। Women and the Political Process in Twentieth-Century Iran। Cambridge University Press। আইএসবিএন 9780521595728 
  5. Afkhami, Mahnaz; Friedl, Erika (১৯৯৪)। In the Eye of the Storm: Women in Post-Revolutionary Iran। Syracuse University Press। আইএসবিএন 9780815626336 
  6. Childress, Diana (২০১১)। Equal Rights Is Our Minimum Demand: The Women's Rights Movement in Iran, 2005। Twenty-First Century Books। আইএসবিএন 9780761372738 
  7. Bayat, Asef (২০০৭)। Making Islam Democratic: Social Movements and the Post-Islamist Turn। Stanford University Press। আইএসবিএন 9780804755955