মায়ার খেলা (গীতিনাট্য)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মায়ার খেলা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মায়ার খেলা হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক বাংলা ভাষায় রচিত একটি গীতিনাট্য। এটি ১৮৮৮ সালে প্রকাশিত হয়।[১][২] নারী উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তিনি এই নাটকটি রচনা করেন। তৎকালীন সম্ভ্রান্ত পরিবারের নারীরা এ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। এ সম্পর্কে ইন্দিরা দেবী বলেন, "মায়ার খেলার অভিনয় তখনকার দিনে নিশ্চয় বেশ একটি স্মরণীয় ঘটনা, সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েরা বোধ হয় এই প্রথম সংঘবদ্ধভাবে অভিনয়ে নামেন।"[৩]

মায়ার খেলা
লেখকরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
দেশভারত
ভাষাবাংলা
ধরনগীতিনাট্য
প্রকাশিত১৮৮৮

চরিত্র[সম্পাদনা]

  • অমর
  • শান্তা
  • অশোক
  • প্রমদা
  • কুমার
  • মায়াকুমারীগণ ( ৩ জন)
  • প্রমদার সখীগণ (৩ জন)
  • পুরুষগণ
  • স্ত্রীগণ[৪]

কাহিনী সারাংশ[সম্পাদনা]

একদিন নব বসন্তের রাত্রে মায়াকুমারীরা স্থির করল, প্রমোদপুরের যুবক-যুবতীদের হৃদয়ে প্রেম রচনা করে তারা মায়ার খেলা খেলবে।

শান্তা আপন প্রাণমন অমরকে সমর্পণ করেছে। কিন্তু চিরদিন নিতান্ত নিকটে থাকাতে শান্তার প্রতি অমরের প্রেম জন্মাতে অবকাশ পায়নি। অমর শান্তার মনের ভাব না বুঝে সে প্রেয়সীর খুুঁজে বের হয়েছে।

অন্য দিকে, প্রমদার কাছে অশোক ও কুুৃমার তাদের আপন প্রেম ব্যক্ত করে। কিন্তু সেদিকে তার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই, কারণ – তার কোমল হৃদয়ে এখনো প্রেমের উন্মেষ হয়নি।

অমর পৃথিবী খুঁজে কারুর সন্ধান পেল না। অবশেষে প্রমদার ক্রীড়াকাননে এসে দেখল, প্রমদার প্রেমলাভে ব্যর্থ হয়ে অশোক আপন মর্মব্যথা পোষণ করছে। প্রমদাকে দেখে অমরের মনে এক নতুন আনন্দ জাগ্রত হল। প্রমদা দেখল, আর-সকলেই তৃষিত ভ্রমরের ন্যায় তার চারিদিকে ফিরতেছে, কেবল অমর দূরে দাঁড়িয়ে আছে। সে আকৃষ্টহৃদয়ে তার সখীদের বলল অমরের খবর নেবার জন্য। কিন্তু অমরের অনতিস্ফুট হৃদয়ের ভাব তারা বুঝল না। কেবল মায়াকুমারীগণ বুঝল এবং তারা গান গাইতে লাগল।

ক্রমে অমর ও প্রমদা উভয়ের মনেই ভাব জন্মাল। কিন্তু সখীগণ অমরের ভালোবাসা বিশ্বাস করেনি এবং তাকে ঘৃণা করতে লাগল। অমর যখন প্রমদাকে প্রেম নিবেদন করল তখন প্রমদার উত্তর দানের আগেই তার সখীগণ এসে অমরকে ভর্ৎসনা করল। অমর প্রকৃত অবস্থা না বুঝেই ব্যথিত হয়ে ফিরে গেল।

অমরের অসুখী অশান্ত আশ্রয়হীন হৃদয় সহজেই শান্তার প্রতি ফিরল। সে শান্তার নিকট আত্মসমর্পণ করল। এদিকে অপেক্ষারত ভগ্নহৃদয়া প্রমদা অমরের প্রেমের আশা একেবারেই পরিত্যাগ করল।

শান্তা ও অমরের মিলনোৎসবে পুরনরনারীগণ সমবেত হল। অমর যখন শান্তাকে পুষ্পমালা পরাতে যাচ্ছে তখন সেখানে প্রমদার উপস্থিতিতে তার হাত থেকে মালা খসে পড়ে যায়। সবাই একথা বিশ্বাস করতে লাগল যে, অমর ও প্রমদার হৃদয় গোপনে প্রেমের বন্ধনে বাঁধা আছে। তখন শান্তা ও সখীগণ তাদের মিলনসংঘটনে প্রবৃত্ত হল। অবশেষে, অমর ও শান্তার মিলন হল এবং প্রমদা শূন্য হৃদয় নিয়ে কেঁদে কেঁদে প্রস্থান করল।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, ড. দুলাল চক্রবর্তী, জুুলাই - ২০০৭, বাণী বিতান।
  2. Foundation, Poetry (২০২০-০৯-১১)। "Rabindranath Tagore"Poetry Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১২ 
  3. newsupload (২০১৯-০৫-০৯)। "রবীন্দ্রনাথ: নাটক ও নাট্যাভিনয় প্রসঙ্গ"মত ও পথ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১২ 
  4. রবীন্দ্র নাটক সমগ্র (অখণ্ড), সেপ্টেম্বর ২০১৫, ষষ্ঠ প্রকাশ, কামিনী প্রকাশালয়।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]