মাক্স স্টির্নার
এই নিবন্ধটির তথ্যছকটি অন্য একটি ভাষা থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিক অনুবাদ করা হয়নি। |
Max Stirner | |
---|---|
![]() Stirner as portrayed by Friedrich Engels | |
জন্ম | Johann Kaspar Schmidt ২৫ অক্টোবর ১৮০৬ |
মৃত্যু | ২৬ জুন ১৮৫৬ | (বয়স ৪৯)
শিক্ষা |
|
যুগ | 19th-century philosophy |
অঞ্চল | Western philosophy |
ধারা | |
প্রধান আগ্রহ | Egoism, ethics, ontology, pedagogy, philosophy of history, philosophy of religion, philosophy of education,[২] property theory, psychology, value theory, philosophy of love, dialectic |
উল্লেখযোগ্য অবদান |
|
ম্যাক্স স্টির্নার (Max Stirner, ১৮০৬–১৮৫৬) ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক, যিনি তার ব্যক্তিত্ববাদী (Egoism) দর্শনের জন্য পরিচিত। তিনি মূলত ১৯শ শতাব্দীর প্রথমার্ধে সক্রিয় ছিলেন এবং তার চিন্তা-ভাবনার মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর প্রতি এক প্রকার বিরোধিতা ও স্বাধীনতার গুরুত্ব ছিল।
জীবনি
[সম্পাদনা]ম্যাক্স স্টির্নার (Max Stirner) এর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তথ্য কিছুটা সীমিত, কারণ তার জীবনের বেশিরভাগ অংশ ব্যক্তিগতভাবে গোপন রাখা হয়েছিল এবং তার কর্মজীবনই ছিল প্রধানভাবে প্রকাশিত। তবে কিছু জানা তথ্য থেকে তার জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং চরিত্র সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায়।[৩]
স্টির্নার ১৮০৬ সালে প্রুশিয়ার (বর্তমান জার্মানি) ব্র্যান্ডেনবুর্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল Johann Kaspar Schmidt, তবে তিনি "ম্যাক্স স্টির্নার" নামটি তার দার্শনিক কাজের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। স্টির্নার ১৮২৯ সালে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন এবং ইতিহাসের শিক্ষা গ্রহণ করেন, তবে তিনি কখনো আধ্যাত্মিক বা শিক্ষাগত দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেননি।
স্টির্নারের ব্যক্তিগত জীবন কিছুটা বিচ্ছিন্ন ও নির্জন ছিল। তার বেশিরভাগ সময় একাকী কাটানো এবং তার দার্শনিক তত্ত্বগুলির দিকে মনোনিবেশ করা ছিল। ১৮৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি কিছু লেখক এবং দার্শনিকদের সাথে যোগাযোগ করেন, যেমন তরুণ হেগেলীয়দের সঙ্গে। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে খুব কমই সামাজিক জীবন কাটাতেন এবং তার কর্মকাণ্ড অধিকাংশই দার্শনিক ও সাহিত্যিক ছিল।
স্টির্নারের বিবাহিত জীবনও কিছুটা জটিল ছিল। তিনি দুইবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, তবে তার সম্পর্কগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল মার্গারেট স্টির্নার (Margarethe Stirner), তবে এই সম্পর্কও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম ছিল স্যালমা (Salma), যাকে তিনি ১৮৫৪ সালে বিয়ে করেন। তার স্ত্রীরা তার দার্শনিক তত্ত্বগুলির প্রতিফলন হিসেবে তার জীবনশৈলীতে কিছুটা প্রভাবিত ছিলেন, তবে স্টির্নার নিজের দর্শন অনুসরণে খুব বেশি বাধা দেননি।
স্টির্নারের জীবনকালে তার দার্শনিক কাজের জন্য তেমন কোনো জনপ্রিয়তা অর্জিত হয়নি। তার জীবনের শেষের দিকে, অর্থনৈতিক কষ্ট এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তার জীবনকে আরো কঠিন করে তুলেছিল। তিনি ১৮৫৬ সালে ৫০ বছর বয়সে মারা যান, এবং তার মৃত্যুর পর দীর্ঘ সময় তার কাজের গুরুত্ব তেমনভাবে বোঝা হয়নি। তবে পরবর্তীকালে তার দর্শন দার্শনিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
স্টির্নারের ব্যক্তিগত জীবন ছিল তার দর্শনিক ধারণাগুলির মতোই স্বাধীন এবং বিশৃঙ্খল, যা তাকে তার সময়ের অন্য দার্শনিকদের থেকে আলাদা করেছে।
অবদান
[সম্পাদনা]স্টির্নারের সবচেয়ে প্রখ্যাত কাজ হচ্ছে "The Ego and Its Own" (১৮৪৪), যা তার ব্যক্তিত্ববাদী দর্শনের একটি মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্টির্নার তার দর্শনে মানব অস্তিত্বের কেন্দ্রে "আমি" বা "ইগো" (ego) কে স্থান দেন। তার মতে, ব্যক্তি নিজেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং একমাত্র বাস্তবতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, এবং তাকে সমাজ, ধর্ম, নীতি বা অন্যান্য বাহ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে মুক্তি পেতে হবে। স্টির্নারের মতে, প্রতিটি ব্যক্তি তার নিজস্ব ইচ্ছার দিকে চলতে পারে এবং তাকে অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে হবে না। তিনি ধর্ম, রাষ্ট্র, এবং সমাজের প্রচলিত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ছিলে এবং বিশ্বাস করতেন যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য ক্ষতিকর।
দর্শন
[সম্পাদনা]স্টির্নারের দর্শন মূলত "স্বাধীনতা" এবং "অপরিহার্যতা"র ওপর ভিত্তি করে ছিল। তার মতে, মানুষ যদি তার নিজস্ব স্বার্থ ও ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন যাপন করতে পারে, তবে সে প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করবে। স্টির্নার সমাজের ঐতিহ্যগত কাঠামো, যেমন ধর্মীয় বিশ্বাস বা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা, যা মানুষের স্বাধীনতার পথে প্রতিবন্ধক, তা থেকে মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। [৪]
স্টির্নার তাকে ঘিরে বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি করেছেন, বিশেষ করে তার মতবাদ রাজনৈতিক দর্শনে একটা অস্থিরতা তৈরি করে, কারণ তার ভাবনায় কোনো সামাজিক সংহতি বা সাধারণ মঙ্গল ছিল না। তবে, তার কাজ বিশেষত ব্যক্তিত্ববাদী এবং অ্যানার্কিস্ট (Anarchist) আন্দোলনের ওপর বড় প্রভাব ফেলেছিল, কারণ তিনি প্রতিষ্ঠানগত শক্তির বিরুদ্ধে একটি খোলামেলা প্রতিরোধের ধারণা দেন।
স্টির্নারের দর্শন অনেক সময় সমালোচিত হয়েছে, তবে তার চিন্তা-ভাবনা আধুনিক দার্শনিক আন্দোলন, বিশেষত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী ও আনআরকিস্ট (Anarchist) দর্শনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Welsh, John F. (২০১০)। Max Stirner's Dialectical Egoism। Lexington Books।
- ↑ ক খ https://archive.org/details/sparrowsnest-10358/mode/2up The False Principle of our Education by Stirner, Max; Publication date 1967
- ↑ "Max Stirner"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-১১-০২।
- ↑ Zalta, Edward N.; Nodelman, Uri, সম্পাদকগণ (২০২৩)। Max Stirner (Winter 2023 সংস্করণ)। Metaphysics Research Lab, Stanford University।
এই নিবন্ধটিতে কোনও বিষয়শ্রেণী যোগ করা হয়নি। অনুগ্রহ করে একটি বিষয়শ্রেণী যোগ করুন, যেন এটি এই বিষয়ের অন্যান্য নিবন্ধের সাথে তালিকাভুক্ত করা যায়। (জানুয়ারি ২০২৫) |