মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্যে ইসলাম
মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্য প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র এবং অঞ্চলটি প্রধানত খ্রিস্টানপ্রধান। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে ইসলামের উপস্থিতি দেখা গেছে। যদিও দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা খুবই কম; তবুও ইসলামের প্রসার এবং মুসলিম সংস্কৃতির প্রভাব এখানে ক্রমশ বাড়ছে। [১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্যসহ মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলে ইসলামের প্রচার মূলত অভিবাসন এবং আন্তর্জাতিক সংযোগের মাধ্যমে হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া; বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের কিছু মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে ইসলাম কিছুটা পরিচিতি লাভ করে। আধুনিক যুগে মাইক্রোনেশিয়ার মুসলিম জনসংখ্যা মূলত অভিবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। কিছু তথ্য মতে, বেশ কয়েকটি মুসলিম পরিবার দেশটিতে বসবাস করে এবং তারা স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে মিশে ইসলাম ধর্মের অনুশীলন করে। [২][৩]
তবে প্রথম দিকে ইসলাম মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্যে শক্তিশালী সামাজিক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। উপনিবেশিক আমলে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়া এর জনগণ ভিন্ন কোনো ধর্মকে সমাজে স্থান দিতে চায়নি। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেস সদস্যের সহায়তায় মাইক্রোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মরি ২০১৫ সালের এপ্রিলে দেশটির পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত কোসরায়ে (কুসাই) রাজ্যে আহমদিয়া সম্প্রদায়কে সরকারিভাবে নিবন্ধনের অনুমতি প্রদান করেন। [৪]
বর্তমান
[সম্পাদনা]মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বিচারে ছোট হলেও তারা একত্রে ইসলামি অনুশীলন বজায় রাখার চেষ্টা করছে। এখানে বড় কোনো মসজিদ নেই; তবে ছোটখাটো নামাজের স্থান এবং ইসলামি শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। মুসলিমরা সাধারণত নিজের বাড়িতে বা একত্র হয়ে নামাজ আদায় করে এবং রমজানসহ গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি উৎসব উদযাপন করে।
সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা
[সম্পাদনা]যদিও এখানে ধর্মীয় সহনশীলতা বজায় রয়েছে। তবুও ইসলাম প্রচারে কিছু প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য হালাল খাবারের সহজলভ্যতা অনেক সময় সীমিত থাকে এবং দেশে ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে। এছাড়া মুসলিম সম্প্রদায় আকারে ছোট হওয়ায় নতুন প্রজন্মের জন্য ইসলাম চর্চার সুযোগও কম। কিছু মুসলিম পরিবার তাদের সন্তানদের ইসলামের মৌলিক শিক্ষা দিতে অনলাইন ও আন্তর্জাতিক ইসলামি সংস্থার সহায়তা নেয়। [৫]
বৈষম্য
[সম্পাদনা]আহমদিয়া জামাতের ছোট সম্প্রদায়টি তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ করেছিল। তাদের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, মুসলিম হওয়ার কারণে তারা সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয় এবং তাদের সম্পত্তির উপর হামলা করা হয়। কোসরায়ে রাজ্যের পাঁচটি পৌরসভার একটি মালেম পৌরসভা এমন একটি আইন প্রস্তাব করেছে, যা খ্রিস্টান ধর্মের বাইরে থাকা ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মগুলিকে নিষিদ্ধ করতে পারে এবং এই আইনের লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ জরিমানা $১০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।[৫]
ধর্মীয় স্বাধীনতা
[সম্পাদনা]মাইক্রোনেশিয়ার জাতীয় সংবিধান অনুযায়ী, দেশের জন্য কোনো রাষ্ট্রধর্ম নির্ধারণ করা যাবে না বা ধর্মীয় স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করা যাবে না এবং বর্তমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিবন্ধনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সরকারি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ; তবে বেসরকারি ধর্মীয় স্কুলগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত পাঠ্যক্রম অনুসরণ করলে তাদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়। [৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Micronesia"। United States Department of State (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১৫।
- ↑ International Journal of Environmental Science and Development: P. 10-15।
- ↑ Hussain Kettani, Muslim Population in Oceania (1950-2020)।
- ↑ ক খ "International Religious Freedom Report for 2015"। 2009-2017.state.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১৫।
- ↑ ক খ "Archive7-10-15 page"। web.archive.org। ২০১৭-০৫-২৫। ২০১৭-০৫-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১৫।