মহামস্তকাভিষেক
মহামস্তকাভিষেক | |
---|---|
![]() শ্রাবণবেলগোলায় অবস্থিত গোম্মতেশ্বর। | |
পালনকারী | জৈন |
ধরন | ধার্মিক |
সংঘটন | প্রতি ১২ বছর অন্তর |
মহামস্তকাভিষেক ("মহা অভিষেক") হল জৈন ধর্মগুরুদের বৃহৎ মূর্তিগুলিরঅভিষেক। সবচেয়ে বিখ্যাত হল ভারতের কর্ণাটকের শ্রাবণবেলগোলায় অবস্থিত বাহুবলী গোম্মতেশ্বরের মূর্তির অভিষেক। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈন উৎসব যা প্রতি ১২ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। এটি প্রাচীন ও বর্তমান জৈন ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এই উৎসবে ১৭.৪-মিটার (৫৭-ফুট) উচ্চতাবিশিষ্ট সিদ্ধ বাহুবলীর একশিলা মূর্তির অভিষেক করা হয়। সর্বশেষ অভিষেক অনুষ্ঠান সংঘটিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এবং পরবর্তী অনুষ্ঠানটি ২০৩০ সালে অনুষ্ঠিত হবে। [১] এই অনুষ্ঠান ৯৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শেষ অভিষেক উতসবটি ৮৮তম এবং একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় মহামস্তকাভিষেক বলে উল্লিখিত আছে। এই অনুষ্ঠানে অসংখ্য জৈন তপস্বী উতসবের স্থানে উপস্থিত হন। ২০১৮ সালের অনুষ্ঠানটি ১৭ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত শ্রাবণবেলগোলার চারুকীর্তি ভট্টারক স্বামীজির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল [২]
গোম্মতেশ্বর বাহুবলীর অভিষেক
[সম্পাদনা]চব্বিশ জন জৈন তীর্থঙ্করের মধ্যে প্রথম ঋষভনাথের পুত্র বাহুবলীর গর্ভধারণ, জন্ম, ত্যাগ, জ্ঞানলাভ এবং মোক্ষ থেকে শুরু করে জীবনের সকল পর্যায়ের কথা স্মরন করে এবং তার ব্যতিক্রমী গুণাবলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পূজা করা হয়। ৫৮.৮ ফুট উঁচু বাহুবলীর এই মূর্তিটি জৈন শিল্পকর্মের অসাধারণ নিদর্শন। মূর্তিটি প্রায় ৯৮৩ সালে নির্মিত হয়েছিল বলে জানা গেছে। [৩] বাহুবলীর মূর্তিটিকে ভাস্কর্য শিল্পের নিরিখে প্রাচীন কর্ণাটকের অন্যতম শক্তিশালী কৃতিত্ব হিসেবে বর্ণনা করা হয়। মূর্তিটি কায়োৎসর্গ নামে পরিচিত ধ্যানের ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অবস্থায় বিদ্যমান। বিন্ধ্যগিরি পাহাড়ের উপরে প্রায় ৫৭ ফুট উচ্চতায় এই মুর্তিটি অবস্থিত। প্রায় ৭০০টি সিঁড়ির ধাপ চড়ে সেখানে পৌঁছানো যায়। [৪]
পদ্ধতি
[সম্পাদনা]মূর্তির উপর চন্দন কাঠের প্রলেপ দিয়ে ঘড়া থেকে বিশুদ্ধ জল ঢেলে দেওয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। মহামস্তকাভিষেক শুরু হওয়ার সাথে সাথে, ভক্তরা ১,০০৮টি বিশেষভাবে প্রস্তুত পাত্র (কলশ) বহন করে এবং উতসবে অংশগ্রহণকারীদের উপর সেই পাত্র থেকে পবিত্র জল ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মূর্তিকে স্নান করানো হয়। দুধ, আখের রস এবং জাফরানের পেস্টের মতো পানীয় দিয়ে মূর্তির অভিষেক করা হয় এবং মূর্তির উপর চন্দন, হলুদ এবং সিঁদুরের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। [৫] অভিষেকের সময় সোনা ও রূপার মুদ্রা এবং মূল্যবান পাথর উতসর্গ করা হয়। অতি সম্প্রতি মহামস্তকাভিষেক অনুষ্ঠান সমাপনের দিনে হেলিকপ্টার থেকে অপেক্ষমাণ ভক্তদের উপর ফুলের বৃষ্টিপাত করা হয়েছিল। [৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Correspondent, TNN (৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "Mahamastakabhisheka of Bahubali begins today"। The Times of India। ২৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ Staff Reporter (১৩ অক্টোবর ২০১৬), "Dates for Mahamastabhisheka at Shravanabelagola announced", The Hindu, সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
- ↑ Zimmer 1953, পৃ. 212।
- ↑ Muni Kshamāsāgara 2006, পৃ. 49।
- ↑ Kumar, Brajesh (২০০৩), Pilgrimage Centres of India, Diamond Pocket Books (P) Ltd., পৃষ্ঠা 199, আইএসবিএন 9788171821853
- ↑ Sangave, পৃ. 106।