ময়িলাপুর

স্থানাঙ্ক: ১৩°০২′০১″ উত্তর ৮০°১৬′০৭″ পূর্ব / ১৩.০৩৩৬° উত্তর ৮০.২৬৮৭° পূর্ব / 13.0336; 80.2687
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ময়িলাপুর
மயிலாப்பூர்
ময়িলাপুর
ময়িলাপুর এমআরটিএস স্টেশন
ময়িলাপুর এমআরটিএস স্টেশন
ময়িলাপুর চেন্নাই-এ অবস্থিত
ময়িলাপুর
ময়িলাপুর তামিলনাড়ু-এ অবস্থিত
ময়িলাপুর
স্থানাঙ্ক: ১৩°০২′০১″ উত্তর ৮০°১৬′০৭″ পূর্ব / ১৩.০৩৩৬° উত্তর ৮০.২৬৮৭° পূর্ব / 13.0336; 80.2687
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যতামিলনাড়ু
জেলাচেন্নাই
মহানগরচেন্নাই
ওয়ার্ড১৪৭
তালুকময়িলাপুর
সরকার
 • শাসকসিএমডিএ
আয়তন
 • মোট৩.৯১৪ বর্গকিমি (১.৫১১ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৪ মিটার (৪৬ ফুট)
ভাষা
 • দাপ্তরিকতামিল
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৬০০০০৪
যানবাহন নিবন্ধনTN-06 (টিএন-০৬)
লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রচেন্নাই দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র
বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রময়িলাপুর[১][২]
নগরোন্নয়নসিএমডিএ
ওয়েবসাইটwww.chennai.tn.nic.in

ময়িলাপুর দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই জেলার একটি অঞ্চল৷ এটি শহরে অন্যতম পুরাতন আবাসিক লোকালয়, যা তিরুময়িলাই নামেও পরিচিত৷ অন্যতম তামিল দার্শনিক তিরুবল্লুবরের জন্মস্থান এই ময়িলাপুর৷

অবস্থিত একাধিক কীর্তির মধ্যে এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় চারটি বিষয় হলো রাস্তার ধারে সারিবদ্ধ গাছ, কপালীশ্বর মন্দির, কাক্ষেরি এবং শ্রীরামকৃৃৃষ্ণ মঠ৷[৩] ময়িলাপুরে রয়েছে এপোস্টেল থমাসের সমাধি সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল বেসিলিকা৷[৪][৫][৬][৭]

নামকরণ[সম্পাদনা]

ময়িলাপুর স্থানের নামটি এসেছে তামিল শব্দবন্দ "ময়িল্ আর্প্পরিক্কুম্ ঊর্" থেকে, যার অর্থ "ময়ূরের কেকা শোনা যাায় এমন স্থান"৷[৮] ঐতিহাসিকভাবে, এই অঞ্চলে যে ময়ূর বাস করত তার প্রমাণ পাওয়া যায় কপালীশ্বর মন্দির ও সেন্ট থমাস বেসিলিকার স্তম্ভ ও প্রতীক থেকে৷

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ময়িলাপুরে ব্রিটিশ প্রকৃত সময়ের পূর্ববর্তী সময় থেকে ব্রিটিশদের রাজত্ব করার তথাকথিত ইতিহাসের বিকৃৃতকরণ রয়েছে৷ পূর্বে এটি বেদপুরী নামে পরিচিত ছিল৷ এখনও অবধি প্রাপ্ত ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ অনুসারে এটি চেন্নাইয়ের পুরাতন ক্ষেত্রগুলির একটি৷ প্রথম খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিভিন্ন পুস্তকে এই অঞ্চলের নামও পওয়া যায়৷ তামিল দার্শনিক বল্লুবর ৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে জন্মগ্রহণ করেন৷[৯] অতীতে এই স্থানে নির্মিত বন্দর ও বন্দর মারফৎ রোমান সাম্রাজ্যের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য এটি বহির্দেশে পরিচিতি পায়৷ মূলত স্থানীয় কাগজ ও বস্ত্রের পরিবর্তে সোনা দেশে আমদানি করা হতো৷ ৭২ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট থমাস এখানেই দেহত্যাগ করেন৷[৪][৫][৬][৭] খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে টলেমি ময়িলাপুর বন্দরের কথা ও গ্রীক ও রোমান সাম্রাজ্যের সাথে এর বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে উল্লেখ করলেও সেন্ট থমাস বা খ্রিস্টান প্রচার সম্পর্কে কিছু আলোচনা করেন নি৷ সপ্তম শতাব্দীতে শৈব্য প্রচারক ঋষি সংবন্দর, আপ্পার তাদের গীতমন্ত্রের মাধ্যমে শিবমহিমা প্রচার করেছেন৷ আরব্য বণিকরা খ্রিস্টীয় নবম ও দশম শতাব্দীতে এখানে ব্যবসা বাণিজ্যের উল্লেখ করে থাকেন৷ মার্কো পোলো খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এখানে আসেন ও এখানকার ভূমিবৃৃত্তান্ত, জন সমাজ, বেশভূষা, ধর্মাচার, খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে বিষদে আলোচনা করেন৷ মার্কো পোলো বা আরব্য বণিক কেউই সেন্ট থমাস বা খ্রিস্টান জনসংখ্যা সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেন নি৷[১০]

বহু বছর গ্রিক ও জার্মান পুরানো মানচিত্রে ভারতের এই অঞ্চল তথা বন্দরশহর 'মালিয়ারফা' নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীকালে স্কটিশ গবেষক জেমস প্লেফেয়ার তার গবেষণা পত্রে এই স্থানটির নাম "মেলিয়াপুর" বলে উল্লেখ করেছেন।[১১][১২] ১৫২৩ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজরা ময়িলাপুর দখল করে এবং ময়িলাপুর সেন্ট থমাস প্রতিষ্ঠা করে। ১৬৬২ থেকে ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ওলন্দাজদের উপনিবেশ থাকাকালীন সময় বাদ দিলে ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ময়িলাপুর পর্তুগীজদের কলোনি ছিল।

১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর্কট রাজ্য|আর্কর্টের নবাব মোহাম্মদ আলী খান ওয়ালাজাঁ-এর নাম করে ময়িলাপুর নিজেদের হস্তগত করেন।[১৩] ওই একই বছরে ময়িলাপুরকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। নোসা সেনহোরা ডা লুজের‌ গির্জার নাম অনুসারে এই লোকালয় লুজ নামে পরিচিত হয়।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে ও বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে এই লোকালয় মাদ্রাজ শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে। বহু বুদ্ধিজীবী, ব্রিটিশ উকিল, ব্যবসায়ী এখানে বসবাস করা শুরু করেন।[১৪]

অবস্থান[সম্পাদনা]

ময়িলাপুর ব্রিটিশদের তৈরি মূল মাদ্রাজ শহরের সামান্য দক্ষিণে অবস্থিত ছিল। লোকালয়টি সর্বাধিক উত্তর থেকে দক্ষিণে চার কিলোমিটার এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে দু কিলোমিটার বিস্তৃত। এর উত্তর পশ্চিম দিকে গোপালপুরম, উত্তর দিকে রায়পেট্টা, উত্তর পূর্ব দিকে তিরুবল্লীকেণি, পশ্চিম দিকে আলোয়ারপেট, পূর্বদিকে সেন্টথম, দক্ষিণ দক্ষিণ পশ্চিম দিকে মন্দবেলী ও রাজা আন্নামালাইপুরম রয়েছে৷

রাজনীতি[সম্পাদনা]

ময়িলাপুর বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্র বর্তমানে চেন্নাই দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত৷[১৫]

পরিবহন[সম্পাদনা]

চেন্নাই এমটিসি বাস পরিষেবার মাধ্যমে ময়িলাপুর চেন্নাই সেন্ট্রাল, ত্যাগরায়নগর, তাম্বরম, ব্রডওয়ে, বড়পালনি প্রভৃতি লোকালয়ের সাথে যুক্ত৷ তিরুময়িলাই রেলওয়ে স্টেশন, ময়িলাপুরকে উত্তরে চেন্নাই বিচ ও দক্ষিণে বেলাচেরির সাথে যুক্ত৷

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Partywise Comparison Since in Assembly Elections since 1977 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ মে ২০০৬ তারিখে
  2. Profile of candidates who contested 2006 Assembly Elections from Mylapore constituency ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মার্চ ২০০৮ তারিখে
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২১ 
  4. http://www.britannica.com/EBchecked/topic/592851/Saint-Thomas
  5. Neill, Stephen (২০০৪)। A History of Christianity in India: The Beginnings to AD 1707। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 29 
  6. Farmer, David (২০১১)। The Oxford Dictionary of Saints, Fifth Edition Revised। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 418আইএসবিএন 978-0199596607 
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Erwin Fahlbusch নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. Saints, Goddesses and Kings By সুসান বেইলির সন্ত, দেবদেবী ও রাজারাজড়া (সেইন্টস, গডেসেস এন্ড কিংস)
  9. "Thiruvalluvar Ninaivu Malar"। ১৯৩৫: 117। 
  10. The Travels of Marco Polo by Henry Yule, Vol 2, Book 3, Chapters XVII and XVIII, Project Gutenberg
  11. Playfair, James (১৮১৩)। "A System of Geography: Ancient and Modern" 
  12. James Playfair (১৮১৩)। A System of Geography: Ancient and Modern। P. Hill। পৃষ্ঠা 373 and 816। 
  13. A brief history of Chennai, From the official website of the Corporation of Chennai
  14. Madras Rediscovered by S.Muthiah
  15. "List of Parliamentary and Assembly Constituencies" (পিডিএফ)Tamil Nadu। Election Commission of India। ৪ মে ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০০৮