মধু শীল
মধু শীল | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৩ এপ্রিল ১৯৬৯ | (বয়স ৬৭)
দাম্পত্য সঙ্গী | রাইকিশোরী দেবী |
পিতা-মাতা | গোপীনাথ শীল (পিতা) প্রেমমময়ী শীল (মাতা) |
মধু শীল (৬ মার্চ, ১৯০২ — ৩ এপ্রিল , ১৯৬৯) ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি শব্দযন্ত্রী[১], যিনি প্রথম ভারতীয় হিসাবে সাউন্ড প্রোজেক্টর মেশিন তথা সবাক চিত্রযন্ত্র স্থাপন করেন এবং চলচ্চিত্রে ডাবিং এর কাজে ব্যবহারের উপযোগী স্ক্রিপটোগ্রাফ যন্ত্রের আবিষ্কারক। [২][৩]
জীবনী
[সম্পাদনা]মধু শীলের জন্ম ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ৬ মার্চ ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। পিতা গোপীনাথ শীল এবং মাতা প্রেমময়ী দেবী। তাদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন সপ্তগ্রামিক সূবর্ণবণিক ও ব্যবসায়ী। মধুর জন্মের আগেই পিতা গোপীনাথ শীল ব্যবসার সূত্রেই কলকাতায় আসেন। মাতাপিতার তিন সন্তানের দ্বিতীয় ছিলেন মধু। তার জ্যেষ্ঠা ভগিনী মহেশ্বরী দত্ত এবং কনিষ্ঠা ভগিনী তারাসুন্দরী বড়াল। ছোটবেলা থেকেই মধু ছিলেন মেধাবী ও কৃতি ছাত্র। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা হিন্দু স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএসসি ও পদার্থবিজ্ঞানে সাম্মানিক সহ স্নাতক হন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এমএসসি পাশ করেন।[১] অন্তিমবর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি কলুটোলার বণিক পরিবারের গোকুলচন্দ্র দের কন্যা রাইকিশোরীকে বিবাহ করেন। বিবাহের পরই ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে রথযাত্রার দিন মধুর পিতৃবিয়োগ ঘটে। চলচ্চিত্র জগতে শব্দযন্ত্রী হিসাবে কাজ শুরু করেন। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে তিনি হাওড়ার পিকাডেলি সিনেমায় (তৎকালীন নাট্যপীঠ) সাউন্ড প্রোজেক্টর মেশিন তথা সবাক চিত্রযন্ত্র স্থাপন করেন এবং এই কাজে তিনিই হলেন প্রথম ভারতীয়।[২][৩] ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের আগষ্ট পর্যন্ত তিনি অনাদি বসুর 'বড়ুয়া স্টুডিও' তে শব্দযন্ত্রী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রিয়নাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ড্রাটিজ সংস্থা'য় (পরবর্তীতে 'কালী ফিল্মস্ স্টুডিও') যোগ দেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজস্ব পদ্ধতিতে মুক্তিস্নান চিত্রে রি-রেকর্ডং এবং প্লে-ব্যাক পদ্ধতির উন্নতি ঘটান। তিনি ডাবিং এ ব্যবহারের উপযোগী স্ক্রিপটোগ্রাফ যন্ত্রের আবিষ্কারক।[৩] তিনি শব্দযন্ত্রী হিসাবে কাজ করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন। শব্দযন্ত্রী হিসাবে বহু চিত্রের শব্দগ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র গুলি হল[২]—
- বিল্বমঙ্গল (১৯৩৩)
- মন্ত্রশক্তি (১৯৩৫)
- পণ্ডিতমশাই (১৯৩৬)
- কাল পরিণয় (১৯৩৬)
- অন্নপূর্ণার মন্দির (১৯৩৬)
- মুক্তিস্নান (১৯৩৭)
- চোখের বালি (১৯৩৭)
- সার্বজনীন বিবাহোৎসব (১৯৩৭)
- ইন্দ্রধনু (১৯৬০)
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ ইন্সটিটিউট অফ রেডিও ইঞ্জিনিয়ার্স এর ফেলো নির্বাচিত হন। [৩]
১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ এপ্রিল মধু শীল কলকাতায় পরলোক গমন করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ ""প্রয়াত শব্দযন্ত্রী মধু শীল" রূপমঞ্চ ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে আশ্বিন সংখ্যায় প্রচারিত নিবন্ধ"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩।
- ↑ ক খ গ "ব্যক্তিত্ব মধু শীল (শব্দযন্ত্রী)"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪–০৩। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ ঘ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫৩৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬