বিষয়বস্তুতে চলুন

মণিবেন কারা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মণিবেন কারা
চিত্র:Maniben Kara.jpg
মণিবেন কারা
জন্ম১৯০৫
বোম্বে, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে মুম্বাই, মহারাষ্ট্র, ভারত)
মৃত্যু১৯৭৯
পেশাসমাজকর্মী, ট্রেড ইউনিয়নবাদী
পুরস্কারপদ্মশ্রী

মণিবেন কারা (১৯০৫-১৯৭৯)[] ছিলেন একজন ভারতীয় সমাজকর্মী এবং ট্রেড ইউনিয়নবাদী।[] তিনি হিন্দ মজদুর সভার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[] ১৯৭০ সালে ভারত সরকার তাঁকে চতুর্থ সর্বোচ্চ ভারতীয় বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী দিয়ে সম্মানিত করে।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

১৯০৫ সালে ব্রিটিশ ভারতেবোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বাই) এক আর্য সমাজ সদস্যের মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণকারী মণিবেন কারা মুম্বাইয়ের গামদেবীর সেন্ট কলম্বা হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা অর্জন করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯২৯ সালে ভারতে ফিরে এসে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে জড়িত হন। তিনি সেবা মন্দির ও একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারতীয় বিপ্লবী এম এন রায়ের জন্য একটি জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা ইণ্ডিপেণ্ডেন্ট ইণ্ডিয়া[] প্রকাশ করেন।[] পরবর্তীতে, তিনি অল ইণ্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের প্রাথমিক নেতাদের একজন নারায়ণ মল্হার জোশীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ট্রেড ইউনিয়ন সক্রিয়তায় জড়িত হতে শুরু করেন।[] তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল মুম্বাইয়ের বস্তি, যেখানে বোম্বে ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের অনেক সংরক্ষণ কর্মীর আবাসস্থল ছিল।[] তিনি একটি মাদার্স ক্লাব ও একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং বস্তিবাসীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সাক্ষরতার বার্তা ছড়িয়ে দেন।[] পরে তিনি একটি সামাজিক সংগঠন শুরু করেন যার নাম সেবা মন্দির, এটি পরবর্তীতে ভাঙিনী সমাজ নামে একটি এনজিওর সাথে একীভূত হয়।[]

তাঁর কাজের পরবর্তী ধাপ শুরু হয় মুম্বাই বন্দর এবং ডকইয়ার্ডে শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠিত করার মাধ্যমে। পরবর্তীতে এটি দর্জি এবং টেক্সটাইল শ্রমিকদের মধ্যে বিস্তৃত হয়।[] তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ট্রেড ইউনিয়ন শাখা, অল ইণ্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং বেশ কয়েকটি শ্রমিক ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেন। এর ফলে ১৯৩২ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার ক'রে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়। [] ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা গঠনের পর, অল ইণ্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস এবং ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস আলাদা হয়ে যায়। মণিবেন এম এন রায়ের নেতৃত্বাধীন রয়িস পার্টির সদস্য ছিলেন। রয়িস পার্টি ইণ্ডিয়ান ফেডারেশন অফ লেবার (আইএফএল) নামে নতুন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন শুরু করে। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলিতে মণিবেন তাঁর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিলেন এবং ১৯৪৬ সালে কেন্দ্রীয় আইনসভায় মনোনীত হন, তাঁকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।[] স্বাধীনতার পর, দেশভাগ হয়ে গেলে আইএফএল হিন্দ মজদুর সভাতে যোগ দেয়।[] ১৯৪৮ সালে হিন্দ মজদুর সভা গঠিত হওয়ার সময় তিনি তার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।[] তিনি অল ইণ্ডিয়া রেলওয়েম্যানস ফেডারেশনের সাথেও জড়িত ছিলেন এবং এর প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন।[] তিনি আন্তর্জাতিক মুক্ত বাণিজ্য ইউনিয়ন কনফেডারেশন (আইসিএফটিইউ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলেন[] এবং জাতীয় নারীর অবস্থা সংক্রান্ত কমিটি[] এবং অন্যান্য সরকারি উদ্যোগের মতো সরকারি কমিটিগুলির সাথে জড়িত ছিলেন।[১০]

মণিবেন কারা, কখনও কোনও রাজনৈতিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি,[১১] ১৯৭০ সালে ভারত সরকার কর্তৃক তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন। এর নয় বছর পর, ৭৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।[] হিন্দ মজদুর সভা ১৯৮০ সালে তাঁর নামে একটি ইনস্টিটিউট, মণিবেন কারা ইনস্টিটিউট (এমকেআই) প্রতিষ্ঠা ক'রে তাঁকে সম্মান জানায়।[] পশ্চিম রেলওয়ে ইউনিয়ন তাঁর সম্মানে একটি ট্রাস্ট, মণিবেন কারা ফাউণ্ডেশন[১২] প্রতিষ্ঠা করে এবং মুম্বাইয়ের গ্রান্ট রোড এলাকায় মণিবেন কারা ফাউণ্ডেশন হলটি স্থাপন করে।[১৩]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

 

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Padma Shri Award Recipients in Social Work

  1. Women Pioneers In India's Renaissance। National Book Trust, India। ২০০৩। পৃষ্ঠা 469। আইএসবিএন 81-237-3766 1 
  2. Geraldine Hancock Forbes (১৯৯৯)। Women in Modern India, Volume 4। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 290। আইএসবিএন 9780521653770 
  3. "Labour Rights"। Labour Rights। ২০১৫। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  4. "Padma Shri" (পিডিএফ)। Padma Shri। ২০১৫। ১৫ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৪ 
  5. "Stree Shakti"। Stree Shakti। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫ "Stree Shakti". Stree Shakti. 2015. Retrieved 16 May 2015.
  6. "Independent India"। Hathi Trust। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫ 
  7. Richard L. Park (আগস্ট ১৯৪৯)। "Labor and Politics in India": 181–187। জেস্টোর 3024423ডিওআই:10.2307/3024423 
  8. "AIRF"। AIRF। ২০১৫। ১৪ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  9. "National Committee on the Status of Women" (পিডিএফ)। ICSSR। ২০১৫। ১১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  10. "INFLIBNET" (পিডিএফ)। INFLIBNET। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫ 
  11. Bela Rani Sharma (১৯৯৮)। Women's Rights and World Development। Sarup and sons। পৃষ্ঠা 383। আইএসবিএন 9788176250153 
  12. "Maniben Kara Foundation"। Indiacom। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫ 
  13. "Maniben Kara Foundation Hall"। Mojo Street। ২০১৫। ৩০ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫