মজিদপুর জমিদার বাড়ি
মজিদপুর জমিদার বাড়ি | |
---|---|
সাধারণ তথ্যাবলী | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | তিতাস উপজেলা |
ঠিকানা | মজিদপুর গ্রাম |
শহর | তিতাস উপজেলা, কুমিল্লা জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
উন্মুক্ত হয়েছে | ১৮০০ |
স্বত্বাধিকারী | শ্রী রামলোচন রায় |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | ইট, সুরকি ও রড |
তলার সংখ্যা | দ্বিতল |
মজিদপুর জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার মজিদপুর গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। [১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রায় ১৮০০ শতকের দিকে শ্রী রামলোচন রায় এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার জমিদারীর আওতায় মেঘনা, তিতাস, হোমনা ও মুরাদনগর এলাকা ছিল। শ্রী রামলোচনের পরে তার বংশধররা দীর্ঘ ২০০ বছর যাবৎ এই জমিদারীর দেখাশুনা করেন। এই জমিদার বংশের মধ্যে কয়েকজন জমিদারের নাম ইতিহাসে পাওয়া যায়। তারা হলেন একাধারে শ্রী কালীচরণ রায়, ব্রজেন্দ্র কুমার রায়, শিবচরণ রায়, পিয়ারী মোহন রায়, বিহারী মোহন রায়, শশী মোহন রায়, শরত্চন্দ্র রায়, মোহিনী মোহন রায়, ক্ষিতিষ চন্দ্র রায়, গিরিশ চন্দ্র রায়, শিরিশ চন্দ্র রায়, হরলাল রায়, যোগেশ চন্দ্র রায়, শ্রী নারায়ণ চন্দ্র রায়, শ্রী দুর্গাচরণ রায়, ক্ষেত্র মোহন রায়, কুঞ্জ মোহন রায় ও উপেন্দ্র চন্দ্র রায়। তবে এই বংশের মধ্যে জমিদার রামলোচন রায় জমিদারের মত আরো দুইজন নামকরা জমিদার হলেন রাম সুন্দর রায় এবং রামগতি রায়। এই জমিদার বংশধররা ছিলেন অনেক অত্যাচারী। তারা মুসলমানদের উপর বেশি অত্যাচার করত। এছাড়া প্রজারা সুদ ও খাজনা দিতে বিলম্ব করলে তাদের সম্পত্তি জোর করে দখল করে নিয়ে যেত। তারা এতোই অত্যাচারী ছিল যে, জমিদার বংশের শিরিশ চন্দ্র রায় তার গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যা করে পরে পাগল হয়ে যান। তাই তাকে জমিদার বাড়ির একটি প্রকোষ্টে শিকল দিয়ে সবসময় বেঁধে রাখা হতো। পরবর্তীতে এই বেঁধে রাখা অবস্থাই তার মৃত্যু হয়। জমিদার বংশধরদের দুর্নাম এর পাশাপাশি কিছু জমিদারের তাদের অর্জনের জন্য সু-খ্যাতিও রয়েছে। বংশধরদের মধ্যে একজন হলেন ক্ষেত্র মোহন রায়। যিনি তিতাস উপজেলার প্রথম এন্ট্রাস পাস, প্রথম গ্র্যাজুয়েট এবং আইনজীবী হয়েছিলেন। এছাড়াও আরেকজন উপেন্দ্র চন্দ্র রায় তিতাস উপজেলার প্রথম গ্র্যাজুয়েট ডাক্তার হয়েছিলেন। আর এইভাবে বংশপরামপণায় প্রায় ২০০ বছর ধরে তাদের জমিদারী চলতে থাকে। পরবর্তীতে ভারতবর্ষ ভাগ এবং জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলে তারা তাদের জমিদারী ছেড়ে ভারতে চলে যান।
অবকাঠামো
[সম্পাদনা]জমিদার বাড়িটিতে মোট ১৭টি ভবন তৈরি করা হয়। এছাড়াও জমিদারদের ব্যবহারের জন্য ১টি দিঘী ও ২০টি পুকুর খনন করা হয়েছিল।
বর্তমান অবস্থা
[সম্পাদনা]এই জমিদার বাড়িতে প্রথমে ১৭টি ভবন ছিল। তবে এখন মাত্র ১৩টি ভবন রয়েছে। বাকী ৪টি স্থানীয়রা ভেঙ্গে ফেলেছেন। তবে এখনো জমিদারদের সেই বিশাল দিঘী ও পুকুরগুলো অক্ষত রয়েছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "দর্শনীয় ও পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে মজিদপুর জমিদার বাড়ি!"। ২৪ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৯।