ভ্লাডিমির প্রেলগ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভ্লাডিমির প্রেলগ
জন্ম(১৯০৬-০৭-২৩)২৩ জুলাই ১৯০৬
মৃত্যু৭ জানুয়ারি ১৯৯৮(1998-01-07) (বয়স ৯১)
মাতৃশিক্ষায়তনচেক টেকনিকাল ইউনিভার্সিটি ইন প্রাগ (ডক্টর সাইন্স, ১৯২৯)
পরিচিতির কারণ
  • জৈব রসায়ন
  • প্রাণরসায়ন
  • কনফর্মেশনাল অ্যানালাইসিস
  • কান–ইনগোল্ড–প্রেলগ অগ্রাধিকার নীতি
  • প্রেলগ স্ট্রেইন
  • ক্লাইন–প্রেলগ প্রক্রিয়া
  • প্রেলগ নীতি
  • প্রেলগ–জেরাসি ল্যাক্টোন
দাম্পত্য সঙ্গীক্যামলিয়া ভিটেক (বি. ১৯৩৩)
পুরস্কার
  • শতবার্ষিক পুরস্কার (১৯৪৯)
  • ফেলো অব দ্য রয়াল সোসাইটি (১৯৬২)[১]
  • মার্সেল বেনোইস্ট পুরস্কার (১৯৬৪)
  • ডেভি পদক (১৯৬৭)
  • পল ক্যারার স্বর্ণপদক (১৯৭৪)
  • রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৭৫)
  • কিরালিটি পদক (১৯৯২)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপ্রাণরসায়ন
প্রতিষ্ঠানসমূহ
ডক্টরাল উপদেষ্টাএমিল ভতোচেক[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন

ভ্লাডিমির প্লেলগ ফেলো অব দ্য রয়াল সোসাইটি[১] (২৩ জুলাই ১৯০৬ – ৭ জানুয়ারি ১৯৯৮) একজন ক্রোয়েশীয়-সুইস জৈব রসায়নবিদ ছিলেন, যিনি ১৯৭৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি জৈব অণু ও বিক্রিয়া স্টেরিওকেমিস্ট্রি নিয়ে গবেষণা করার দরুন নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। প্রেলগ সারায়েভোতে জন্মেছিলেন ও বেড়ে উঠেছিলেন।[২] তিনি প্রাগ, জাগরেব, ও জুরিখে বসবাস করেছেন।[৩][৪]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

প্রেলগ অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য অধিকৃত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সারায়েভোতে এক ক্রোয়াট পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা জাগরেবের স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন।[৫] তার বাবা সারায়েভোর জিমনেশিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও পরবর্তীতে জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন।[৬] যখন তিনি ৮ বছরের বালক, তখন তিনি আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবার সময়ে ঘটনাস্থলের নিকটে ছিলেন।[৭]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

ক্রোয়েশীয় বিজ্ঞান ও কলা একাডেমির ফ্রাঞ্জো রাজি, ইভান মিকোচিচ, গ্রগা তুসকান ও ভ্লাডিমির প্রেলগের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ, মিরোগোজ গোরস্তানে

প্রেলগ সারায়েভোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেও ১৯১৫ সালে তিনি তার বাবা মায়ের সাথে জাগরেব (তখন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির আওতাধীন ছিল) গমন করেন। তিনি জাগরেবে তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকান। এরপর তিনি তিনি জাগরেবের জিমনেশিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শুরু করলেও তার বাবার ওসিজেক শহরে চাকরি পাবার দরুন তাকে ভর্তি হতে হয় ওসিজেকের বিদ্যালয়ে। তিনি ওসিজেক জিমনেশিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই বছর পড়াশোনা করেন। সেখানে থাকতে তিনি তার শিক্ষক ইভান কুরিয়ার প্রভাবে রসায়ন শাস্ত্রে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

১৯২২ সালে ষোল বছর বয়স্ক ভ্লাডিমির প্রেলগের প্রথম বৈজ্ঞানিক কর্ম কথা জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকী কেমিকাল জেইতুং এ প্রকাশিত হয়। নিবন্ধটিতে বিজ্ঞানাগারে রসায়ন সংক্রান্ত বিশ্লেষণাত্মক বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। ১৯২৪ সালে প্রেলগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর তিনি তার বাবার ইচ্ছানুসারে প্রাগ গমন করেন ও সেখানকার চেক কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে কেমিকৌশলে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি ১৯২৯ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এমিল ভতোচেকের তত্ত্বাবধায়নে লাভ করেছিলেন ডক্টরেয়াত ডিগ্রি। প্রেলগ এলি ভতাচেক ও রুডলফ লুকসের প্রভাবে জৈব রসায়ন নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হন।[৬]

চেক কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করার পর তিনি প্রাগের জি. জে. দ্রিজার ব্যক্তিগত শিল্প গবেষণাগারে কাজ করেছিলেন। তখন মহামন্দা চলার দরুন অল্পকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বল্পসংখ্যক পদ খালি ছিল। প্রেলগ বিরল রাসায়নিক বস্তু উৎপাদনের দায়িত্বে ছিলেন যেগুলো তখন বাজারে পাওয়া যেত না। তিনি ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত দ্রিজার অধীনে কাজ করেন। এসময়ে তিনি তার প্রথম ডক্টরেট অভ্যর্থী পান যিনি ছিলেন তার প্রতিষ্ঠানের একটি দলের প্রধান ব্যক্তি। প্রেলগ তার অবসর সময়ে কোকোয়া গাছের বাকলের উপক্ষার নিয়ে গবেষণা করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কর্মজীবন ও গবেষণা[সম্পাদনা]

অ্যাডামেন্টেনের গঠন, ১৯৪১ সালে ভ্লাডিমির প্রেলগ প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অ্যাডামেন্টেন সংশ্লেষণ করেন।

প্রেলগ কেতাবি পরিবেশে কাজ করতে চাইতেন। এজন্য ১৯৩৫ সালে তিনি জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদের চাকরি গ্রহণ করেন[৭] তিনি কেমিকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগে নিযুক্ত হবার পর জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়ন ও কেমিকৌশল বিষয়ে পাঠদান করতেন।[৬]

তিনি তার সহকর্মী ও শিক্ষকদের সহায়তায় কুইনাইন ও এ জাতীয় বস্তু নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান "কাস্তেল" এক্সা বর্তমানে "প্লিভা" নামে পরিচিত। তিনি কম খরচে স্ট্রেপ্টাজোল উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন করেছিল যেটি ছিল বাণিজ্যিজ ক্ষেত্রে শুরুর দিকে ব্যবহৃত সালফোনামাইডগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৪১ সালে তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অ্যাডামেন্টেন (অ্যাডামেন্টেন হল অস্বাভাবিক গঠন বিশিষ্ট এক রকম জৈব যৌগ যা চেক প্রজাতান্ত্রের মোরাভিয়ার তেল খনিতে পাওয়া যায়) সংশ্লেষণে সক্ষম হয়েছিলেন।[৮][৯]

জুরিখ[সম্পাদনা]

১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে রিচার্ড কুন তাকে জার্মানিতে বক্তৃতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ করেন। এর কিছুদিন পর লিওপোল্ড রুজিৎস্কা, যার কাছে প্রেলগ সাহায্যের জন্য অনুরোধ করেছিলেন, তাকে জার্মানি যাবার পথে তার সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তিনি ও তার স্ত্রী এই অনুরোধে সাড়া দিয়ে জুরিখ গমন করেন। রুজিৎস্কার সাহায্যে তিনি সিবা লিমিটেডের নিকট থেকে সহায়তা লাভ করেন ও সুইজারল্যান্ডীয় কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জৈব রসায়ন পরীক্ষাগারে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৪৪ সালে প্রেলগ আলোক সক্রিয় স্তরে ক্রোমাটোগ্রাফির সাহায্যে ট্রোগের ক্ষার হতে চিরাল এনান্টিওমার পৃথক করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

তিনি তার এই কর্মের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে শুধু কার্বন নয়, নাইট্রোজেন পরমাণুতেও চিরাল কেন্দ্র থাকতে পারে যা কয়েক বছর ধরে বিজ্ঞানীরা কল্পনা করছিলেন।[১০] তার সাথে রুজিৎস্কার সম্পর্ক তাকে উপরের দিকে উঠতে সাহায্য করেছিল। সহকারী থেকে যাত্রা শুরু করে প্রেলগ পরবর্তীতে "প্রাইভেট-ডোজেন্ট", "টিটুলারপ্রফেসর" ও "সহযোগী অধ্যাপক" পদে নিযুক্ত হন। ১৯৫২ সালে তাকে অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এরপর ১৯৫৭ সালে তিনি রুজিৎস্কার মেয়াদকাল শেষ হবার পর পরীক্ষাগারের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।[১১] প্রেলগ প্রশাসনিক দায়িত্ব পছন্দ করতেন না বলে তিনি সুইজারল্যান্ডীয় কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে প্রধান পদে আবর্তন দায়িত্বের প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন।[৬] প্রেলগ সুইজারল্যান্ডীয় কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে যোগ দিয়েছিলেন। কেননা, রুজিৎস্কার ইহুদি সহকর্মীরা সুইজারল্যান্ড ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্র গমন করার দরুন সৃষ্ঠ শূন্যস্থান তিনি পূরণ করেছিলেন।[১২]

পরবর্তী সময়ে সুইজারল্যান্ডে কর্মজীবন[সম্পাদনা]

প্রেলগের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল উপক্ষার। তিনি সোলানাইনের গঠন বিশদভাবে বিশ্লেষণের সময় একটি আদর্শ বিষয় খুঁজে পান। এরপর তিনি "চিঞ্চোনা" উপক্ষার নিয়ে কাজ করেন ও স্ট্রিচনাইন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দেখান যস, রবার্ট রবিনসনের স্টিচনাইন সূত্র সঠিক নয়। রবার্ট রবিনসনের পরিবর্তে তার প্রদত্ত স্টিচনাইন সূত্র সঠিক না হলেও তার আবিষ্কার তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতি এনে দেয়। তারপর তিনি অ্যারোমাটিক "এরিথ্রিনা" উপক্ষারের গঠন নিয়ে ডেরেক বার্টন, অস্কার জেগের ও রবার্ট বার্নস উডওয়ার্ডের সাথে বিশদভাবে গবেষণা করেন।[১২]

শতাব্দীর মধ্যভাগে যৌগের গঠন সম্পর্কে গবেষণার ক্ষেত্রে বিরাট অগ্রগতি প্রয়োজন ছিল। রসায়নের মূলশাখা ছিল সেকেলে ও সেটি জ্ঞানীগুণী মহলে কিছুটা আবেদন হারিয়েছিল। সে সময়ে গুরুত্ব বাড়ছিল মাইক্রোবিয়াল মেটাবলিটির। প্রেলফ এসব নিয়ে কাজ শুরু করেন। এসবের মাঝে অস্বাভাবিক গঠন ও বিচিত্র আধিভৌতিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এসব নিয়ে গবেষণা করতে করতে তার গবেষণা অ্যান্টিবায়োটিকে গড়ায়। তিনি নোনাক্টিন, বোরোমাইদিন ও রিফামাইসিনের মত বস্তু বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন। প্রেলগের মতে প্রাকৃতিক বস্তুর মাঝে কোনো নতুন রাসায়নিক গবেষণার চেয়েও জটিলতা বিদ্যমান। তিনি এদেরকে শত কোটি বছরের বিবর্তনের সমাহার বলে অভিহিত করেন।[১২]

১৯৪৪ সালে সুইজারল্যান্ডীয় কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে প্রেলগ অপ্রতিসম তিনযোজী নাইট্রোজেন থেকে কলাম ক্রোমাটোগ্রাফির সাহায্যে এনান্টিওমার পৃথক করতে সক্ষম হন। সে সময়ে এই পদ্ধতি অতটা উন্নত ছিল না। মধ্যম আকৃতির অ্যালিসাইক্লিক ও হেটেরোসাইক্লিক চক্র নিয়ে তার কাজ তাকে স্টেরিও রসায়ন ও সদৃশ তত্ত্বের অগ্রদূতের মর্যাদা এনে দেয়। ১৯৪৯ সালে লন্ডনের রসায়নবিদ সমাজের প্রথম শতবার্ষিক বক্তৃতা প্রদানের আমন্ত্রণ পান। তিনি ৮ থেকে ১২ টি মধ্যম আকৃতির চাক্রিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন। এক্ষেত্রে তিনি ডাইকার্বোক্সিলিক এসিড এস্টার নিয়ে সংশ্লেষণ করেন ও অ্যাসিলোইন ঘনীভবনের সাহায্য নেন। তিনি এসব বস্তুর অস্বাভাবিক রাসায়নিক ক্রিয়াকে অবিশুদ্ধ কর্ষণ বলে অভিহিত করেন কেননা, তখন পারিপার্শ্বিক পরিবেশ প্রতিকূলে থাকে। তিনি ব্রেডতের তত্ত্ব বিশ্লেষণে কাজ করেছিলেন। তিনি দেখিয়েছিলেন যে চক্র খুব বড় হলে ব্রিজহেডে দুইটি বন্ধনের সৃষ্টি হতে পারে।[১৩]

অপ্রতিসম যৌগ নিয়ে কাহ করের সময় তিনি এনান্সোসিলেক্টিভ বিক্রিয়া গবেষণা করেন এবং উৎপাদ ও উপজাত সম্পর্কে তত্ত্ব প্রদান করেন। তিনি এদের মধ্যকার সম্পর্ক নিরূপণ করেন। অ্যালিসাইলিক কিটোন ও অ্যালকোহলের এনজাইমীয় মাইক্রোবায়োলজিকাল রিডাকশন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। এই গবেষণার মাধ্যমে প্রেলগ স্টেরিওস্পেসিফিটি নিয়ে জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি এনজাইমের সক্রিয় দিকের গঠন সম্পর্কেও জ্ঞানভাণ্ডারে নতুন তথ্য যোগ করেছেন।[১৪]

নতুন জৈব যৌগের স্টেরিওজোমারগুলোর নাম প্রদান করা প্রেলগের অন্যতম প্রধান কর্ম হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৫৪ সালে তিনি আর. এস. কান ও ক্রিস্টোফার ইনগোল্ডের সাথে স্টেরিওজোমারগুলোর নাম প্রদানের সরল ও স্পষ্ট পদ্ধতি প্রণয়নের কাজে লিপ্ত হন। তারা গবেষণার পর সিআইপি (কান-ইনগোল্ড-প্রেলগ) প্রক্রিয়া নামে নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেন যা ছিল তুলনামূলক সহজ ও প্রাঞ্জল এবং এতে তারা "অনুক্রম নীতি" ব্যবহার করেছিলেন। তারা নতুন প্রক্রিয়াটি নিয়ে দুইটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। কান ও ইনগোল্ডের মৃত্যুর পর তিনি এ বিষয়ে তৃতীয় গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।[১৪] ১৯৫৯ সালে প্রেলগ সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব লাভ করেন।[১১]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

আধুনিক স্টেরিও রসায়নের উন্নয়নে তার অবদানের জন্য ১৯৬২ সালে ভ্লাডিমির প্রেলগকে রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।[১]

১৯৭৫ সালে ভ্লাডিমির প্রেলগ রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[১৫][১৬][১৭] তিনি জৈব অণু সম্পর্কিত স্টেরিও রসায়ন ও এর বিক্রিয়ায় অবদানের জন্য লাভ করেন নোবেল পুরস্কার[১৮] সস বছর তার সাথে অস্ট্রেলীয়/ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ওয়ারকাপ কর্নফোর্থ রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[১৯]

১৯৮৬ সালে তিনি যুগোস্লাভীয় বিজ্ঞান ও কলা একাডেমির অবৈতনিক সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯৩৩ সালে প্রেলগ ক্যামিলা ভিটেকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[৬] ১৯৪৯ সালে জ্যান নামে তাদের এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।[১১]

জ্ঞানী এই ব্যক্তি ছিলেন অসংকীর্ণ সাংস্কৃতিক চেতনার অধিকারী। ১৯৯১ সালে ভুকোভারের যুদ্ধ চলাকালে তিনি ১০৯ জন নোবেল বিজয়ীর সাথে যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার আর্জিতে দস্তখত করেছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ভ্লাডিমির প্রেলগ জুরিখে ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখে তার চিতাভস্ম সংবলিত শবাধার জাগরেবের মিরোগোজ গোরস্তানে আনুষ্ঠানিকভাবে পুঁতে ফেলা হয়। ২০০৮ সালে প্রেলগের স্মৃতিতে নির্মিত এক স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচিত হয় প্রাগে[২০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Arigoni, D.; Dunitz, J. D.; Eschenmoser, A. (২০০০)। "Vladimir Prelog. 23 July 1906—7 January 1998: Elected For.Mem.R.S. 1962"। Biographical Memoirs of Fellows of the Royal Society46: 443। ডিওআই:10.1098/rsbm.1999.0095 
  2. Vladimir Prelog (1975) Autobiography, the Nobel Committee.
  3. James, Laylin K. (২০০৬)। Nobel Laureates in Chemistry, 1901–1992। American Chemical Society & Chemical Heritage Foundation। আইএসবিএন 0-8412-2459-5 
  4. Dunitz, J. D. (১৯৯৮)। "Obituary: Vladimir Prelog (1906–98)"। Nature391 (6667): 542। ডিওআই:10.1038/35279বিবকোড:1998Natur.391..542D 
  5. Horvatić, Petar: 23. srpnja 1906. rođen Vladimir Prelog – dobitnik Nobelove nagrade. Narod.hr. Accessed 2 October 2018
  6. James 1993, পৃ. 578।
  7. Frängsmyr ও Forsén 1993, পৃ. 201।
  8. Prelog V, Seiwerth R (১৯৪১)। "Über die Synthese des Adamantans"। Berichte74 (10): 1644–1648। ডিওআই:10.1002/cber.19410741004 
  9. Prelog V, Seiwerth R (১৯৪১)। "Über eine neue, ergiebigere Darstellung des Adamantans"। Berichte74 (11): 1769–1772। ডিওআই:10.1002/cber.19410741109 
  10. Prelog, V.; Wieland, P. (১৯৪৪)। "Über die Spaltung der Tröger'schen Base in optische Antipoden, ein Beitrag zur Stereochemie des dreiwertigen Stickstoffs"। Helvetica Chimica Acta27: 1127। ডিওআই:10.1002/hlca.194402701143 
  11. Frängsmyr ও Forsén 1993, পৃ. 202।
  12. James 1993, পৃ. 580।
  13. James 1993, পৃ. 580-581।
  14. James 1993, পৃ. 581।
  15. "Vladimir Prelog" 
  16. Company, Timeline of Nobel Winners। "Vladimir Prelog"www.nobel-winners.com 
  17. Croatian Nobel Prize Winners (list) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে, posta.hr. Retrieved 29 June 2015.(ক্রোয়েশীয়)
  18. Rezende 2006, পৃ. 352।
  19. James 1993, পৃ. 571।
  20. Spomenik Prelogu u Pragu ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ মে ২০১১ তারিখে, matis.hr. Retrieved 16 May 2015.(ক্রোয়েশীয়)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]